কলকাতা, 5 মার্চ : কথা রাখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ বলেছিলেন , "নন্দীগ্রাম আমার পক্ষে শুভ" ৷ যখন তৃণমূল কংগ্রেসের আকাশে কালো মেঘের আস্তরণ চোখে পড়ছিল ঠিক তখনই সেই 'মেজোবোন' নন্দীগ্রামকে লড়াইয়ের ক্ষেত্র হিসেবে বেছে নিলেন তৃণমূল নেত্রী ৷ আরও বলেছিলেন, ভবানীপুরে ভালো প্রার্থী দেবেন ৷ সেই কথাও রাখলেন ৷ দীর্ঘদিনের তৃণমূল কংগ্রেসের সৈনিক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে ভবানীপুর থেকে দাঁড় করালেন ৷ একইসঙ্গে রাসবিহারীর জন্য বেছে নিলেন দেবাশিস কুমারকে ৷ 10 মার্চ নন্দীগ্রামে নিজের মনোনয়ন জমা দেবেন বলেও জানিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী ৷ আর কালীঘাট থেকে স্লোগান তুললেন, 'খেলেঙ্গে, লড়েঙ্গে-জিতেঙ্গে ' ।
প্রথম থেকেই জল্পনা তৈরি হচ্ছিল এবারের তৃণমূলের প্রার্থী পদ নিয়ে ৷ প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শে 80 বছরের উর্ধ্বে কাউকে প্রার্থী করা হল না এবার ৷ তরুণদের পাশাপাশি মহিলা প্রার্থীর উপরও জোর দিলেন তৃণমূল নেত্রী ৷ একাধিক আসনে পরিবর্তন ঘটালেন ৷ একই আসন থেকে বারবার যাতে কেউ না দাঁড়ান সেদিকে নজর দেওয়া হল ৷ বাঁকুড়ার মতো কেন্দ্রে প্রার্থী করা হল অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ৷ আবার রাজারহাট গোপালপুরে অদিতি মুন্সিকে প্রার্থী করে ঘরের মেয়ের তাস খেললেন মমতা ৷
এবারের নির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণায় অন্যতম চমক অবশ্যই বেহালা পূর্ব ৷ খুব সম্ভবত বেহালা পূর্বের বিজেপি প্রার্থী হতে চলেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ৷ আর এই আসন থেকেই প্রার্থী করা হল রত্না চট্টোপাধ্যায়কে ৷ অর্থাৎ ফের একবার কাননালয়ে লড়াইয়ের মঞ্চ তৈরি করল তৃণমূল ৷ বেহালায় বাবা ছাড়াও নিজের একটা পরিচিত রয়েছে রত্না চট্টোপাধ্যায়ের ৷ ঘরের মেয়ে রত্নাকে প্রার্থী করে তাই শোভন নামক 'শত্রু'কে পরাজিত করার পরিকল্পনা ৷
সদ্য তৃণমূলে এসেছেন একাধিক অভিনেতা-অভিনেত্রী ৷ প্রায় সকলকেই প্রার্থী করা হল ৷ কৃষ্ণনগর উত্তরে কৌশানি মুখোপাধ্যায়, আসানসোল দক্ষিণে সায়নী ঘোষ, উত্তরপাড়ায় কাঞ্চন মল্লিক, চন্ডীপুরে সোহম চক্রবর্তী, সোনারপুর দক্ষিণে লাভলি মিত্র, ব্যারাকপুরে রাজ চক্রবর্তীকে দাঁড় করিয়ে টালিগঞ্জকে গোটা বাংলায় ছড়িয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা রাখল তৃণমূল কংগ্রেস ৷
শিবপুর থেকে প্রার্থী করা হল মনোজ তিওয়ারিকে ৷ হাওড়া জেলা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে অস্বস্তিতে তৃণমূল ৷ একদিকে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিদ্রোহ, অন্যদিকে লক্ষ্মীরতন শুক্লার মন্ত্রীত্ব ত্যাগ ৷ বৈশালী ডালমিয়ার বিজেপিতে যোগদান ৷ সবমিলিয়ে একটা অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল হাওড়ায় ৷ মনে করা হচ্ছে মনোজ তিওয়ারিকে প্রার্থী করে শুধু ময়দানের আবেগকেই ধরা হল তা নয়, ঘরের ছেলে ইমেজকে কাজে লাগানো হল ৷