কলকাতা, 11 জুলাই : আন্তর্জাতিক মঞ্চে স্বীকৃতি পেয়েছিল সবুজ সাথী প্রকল্প । 2015 সালে চালু হওয়া রাজ্য সরকারের এই প্রকল্পে পড়ুয়াদের সাইকেল দেওয়া হয় । এবার সবুজ সাথীর মতো কলকাতাকে অন্য কোনও প্রকল্পের আওতায় আনা যায় কি না , তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করলেন মুখ্যমন্ত্রী । আজ কলকাতায় বেলতলা গার্লস হাইস্কুলের শতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে একথা জানান তিনি । বলেন, "আমি নিশ্চয়ই ভাবব কলকাতায় সবুজ সাথীর বদলে কিছু করা যায় কিনা ।"
অনুষ্ঠানে রাজ্য সরকারের প্রকল্পগুলির নিয়ে আজ বক্তব্য শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী । প্রথমেই তোলেন মিড-ডে মিল প্রসঙ্গ । বলেন, "আমাদের হাজার হাজার স্কুল রয়েছে । এখন গ্রামের দিকে দেখবেন 100 শতাংশ স্কুলে মিড-ডে মিল আছে । শৌচাগার তৈরি করে দেওয়া হয়েছে । পানীয় জলের সুব্যবস্থা রয়েছে প্রায় 100 শতাংশ স্কুলেই । এমনকী থালা, বাটি, গ্লাসও মিড-ডে মিলে দেওয়া হয় । বাচ্চাদের জুতো পর্যন্ত দেওয়া হয় । বই, স্কুল ব্যাগ দেওয়া হয় । বিনা পয়সায় স্কুল ইউনিফর্মও দেওয়া হয় ওদের ।"
এরপরই সবুজ সাথী প্রসঙ্গ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী । বলেন, "গ্রামের দিকে সবাই সবুজ সাথী প্রকল্পের সাইকেলও পায় । কারণ, এক একটা স্কুল অনেক দূরে দূরে অবস্থিত। কোনওটা 10 কিলোমিটার । কোনওটা বা 12 কিলোমিটার । ওরা সাইকেলেই যাতায়াত করে । কলকাতায় সবুজ সাথী হয় না । কারণ, কলকাতার রাস্তায় সাইকেল চলে না । আমি নিশ্চয়ই ভাবব কলকাতায় সবুজ সাথীর বদলে অন্য কোনও প্রকল্প চালু করা যায় কি না ।"
তিনি আরও বলেন, "আমি কলকাতার বিষয়টা আগে জানতাম না । দার্জিলিঙে যেমন খুব বর্ষা হয়, তাই ওখানকার স্কুল পড়ুয়াদের রেইনকোট, ব্যাগ পাওয়ার বন্দোবস্ত করে দিয়েছি । পাহাড়ে যেমন সাইকেলটা চলে না । সেই জন্য এটা এক একটা জায়গার উপর নির্ভর করে । এটা আমি দেখে নিচ্ছি ।"
বেলতলা গার্লস হাইস্কুলের উন্নয়নের জন্য 1 কোটি 25 লাখ টাকার অনুদান ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । একশো বছরের পুরোনো স্কুল ভবনের মেরামতি ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেন তিনি ।
বেলতলা গার্লস হাইস্কুলকে ইংলিশ মিডিয়াম করার কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী । তিনি বলেন, "আমি বাংলা তো শিখবই, বাংলা আমার মাতৃভাষা । পথ চলতে গেলে বাংলার সাথে সাথে আমাকে আগামী দিনে ইংরেজি, হিন্দি সহ অন্য ভাষাও শিখতে হবে । যত শিখব ততো ভালো । কিন্তু, বাংলাটাকে যেন ভুলে না যাই । মনে রাখবেন পৃথিবীতে ভাষার দিক থেকে পঞ্চম হল বাংলা । তাই, অবজ্ঞা করার জায়গা নেই । বাংলাটাকে ভালোবেসে অন্য ভাষাও শিখতে হবে ।"