কলকাতা, 17 নভেম্বর: গঙ্গা ও পদ্মার ভাঙন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী (PM Modi) নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি (Mamata Writes to Modi) লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সাম্প্রতিক সময়ে নদী ভাঙন (Ganga erosion) ভয়ানক আকার ধারণ করেছে । ইতিমধ্যেই এই নিয়ে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী । এ বার এই নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন তিনি ।
নদী ভাঙনে জর্জরিত বাংলা । বৃহস্পতিবার গঙ্গা ভাঙন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদিয়ার একাধিক জায়গায় ভাঙন ভয়াবহ আকার নিয়েছে । গ্রামের পর গ্রাম নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে । এক রকম জীবন হাতে নিয়েই বসবাস করছেন গঙ্গা পাড়ের বাসিন্দারা । আর সেই কারণে ফরাক্কা ব্যারেজ প্রজেক্টের আরও প্রসার বা ব্যাপ্তি বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি । প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিতে এ কথা লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । ভাঙন রোধে কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তা চাইলেন তিনি ।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর লেখা চিঠিতে উঠে এসে গঙ্গা ও ফুলহার নদীর প্রসঙ্গ । বিলাইমারি এবং মানিকচক ব্লক, মালদহ জেলার নদী ভাঙনের জেরে সেই দূরত্ব ক্রমে কমে আসছে । যে দূরত্ব ছিল 4 কিলোমিটারের সেই দূরত্ব এখন ভাঙন হতে হতে দেড় কিলোমিটারে এসে পৌঁছেছে । ভাঙন এই হারে চলতে থাকলে 131-এর এ জাতীয় সড়কেও প্রভাব পড়তে পারে, যেটি উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গকে যুক্ত করছে । সেই ভাঙন রূপকে কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রকের উচিত পর্যালোচনা করা । যৌথভাবে পর্যালোচনা করার আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ।
আরও পড়ুন: 20 বছরেই গঙ্গায় তলিয়ে যাবে গোটা মালদা ? আতঙ্কে ভাঙনে জেরবার স্থানীয়রা
প্রসঙ্গত, প্রধামন্ত্রীকে এর আগেও এই বিষয়ে 21 ফেব্রুয়ারি চিঠি লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । সেই চিঠির জবাবে 28 জুলাই কেন্দ্রের জলশক্তি মন্ত্রী ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষের তথ্য দিয়ে জানিয়েছেন, ভাঙন আটকাতে কী পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হয়েছে । এ দিন প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে মমতা বলেছেন, বাংলাদেশ তাদের ভূখণ্ডের মধ্যে একটি ব্যারেজ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে । ফরাক্কা এবং প্রস্তাবিত ব্যারেজের মধ্যবর্তী অংশ ভাঙনের জন্য বেশি বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে । রাজ্য সরকার চায় ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ আরও বড় এলাকা জুড়ে ভাঙন প্রতিরোধের কাজ করুক । ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ গঙ্গার উজান ও ভাটিতে এখন যে দূরত্ব পর্যন্ত ভাঙন প্রতিরোধের কাজ করে থাকে, তা মোটেই সমস্যা মোকাবিলায় যথোপযুক্ত নয় । ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ নদী ভাঙন রুখতে ব্যর্থ হয়েছে । তার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ, প্রধানমন্ত্রীকে গঙ্গা-পদ্মা ভাঙন আটকানো নিয়ে নতুন একটি পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে । যার জন্য ইতিমধ্যে 31টি জায়গা চিহ্নিত হয়েছে । তাই বিহার সরকারকে সঙ্গে নিয়ে এবং পশ্চিমবঙ্গকে রেখে গঙ্গা-পদ্মা ভাঙন রুখতে জল-শক্তি মন্ত্রক যাতে একটি প্রযুক্তিগতভাবে সমীক্ষা করে, তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা বন্দরের স্বার্থে কেন্দ্রকে সক্রিয় হওয়ার কথাও বলেছেন । তিনি লিখেছেন, কলকাতা বন্দরের স্বার্থে ভারত সরকার হুগলি-ভাগীরথীতে 40 হাজার কিউসেক জল দিয়ে থাকে । এই পরিমাণ জল অপর্যাপ্ত । ফলে ভাঙনের জেরে নদীর বুকে চর পড়েছে । এর জেরে আবার বন্যার বিপদের মুখে পড়ছে বিস্তীর্ণ এলাকা । তাই গোটা বিষয়টি নতুন করে পর্যালোচনা করুক কেন্দ্র ।