কলকাতা, 6 এপ্রিল: আগামী 20 এপ্রিল তৃণমূল কংগ্রেসের হুগলি জেলা নেতৃত্বকে নিয়ে কালীঘাটে বৈঠকে বসছেন সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ প্রসঙ্গত, দলের শেষ বর্ধিত কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে মমতা জানিয়েছিলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ধাপে ধাপে প্রত্যেক জেলার সংগঠন নিয়ে আলাদা আলাদা করে আলোচনায় বসবেন তিনি ৷ সেই অনুসারেই, এক-একটি জেলা ধরে ধরে দলের নেতা ও কর্মীদের সঙ্গে কথা বলছেন মমতা ৷ ইতিমধ্যেই মুর্শিদাবাদ এবং বীরভূম নিয়ে বৈঠক করেছেন তিনি ৷ পরবর্তী বৈঠকের জন্য বেছে নিয়েছেন হুগলিকে ৷ অন্যান্য রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ছাড়াও , শিক্ষা দুর্নীতিতে হুগলির দুই প্রাক্তন তৃণমূল যুবনেতার গ্রেফতারি এবং রিষড়ায় সাম্প্রতিক হিংসার ঘটনার পর যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল ৷
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, একটা সময় হুগলিকে তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি হিসাবে ধরা হত ৷ কিন্তু, গত লোকসভা নির্বাচন এবং তার পরবর্তী বিধানসভা ভোটের সময় তৃণমূলের সেই শক্ত ঘাঁটিতেই থাবা বসিয়েছে বিজেপি ৷ তার উপর নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে প্রথমে কুন্তল ঘোষ এবং শান্তনু বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের গ্রেফতারি, শান্তনুর বিপুল সম্পত্তির খবর প্রকাশ্য়ে আসার মতো ঘটনা শাসকদলকে যথেষ্ট বিব্রত করেছে ৷ সমস্যা আরও বাড়িয়েছে রামনবমীর শোভাযাত্রা কেন্দ্র করে রিষড়ায় ঘটে যাওয়া হিংসার ঘটনা ৷ এদিকে, সামনেই পঞ্চায়েত ভোট ৷ তারপর বছর ঘুরতেই রয়েছে লোকসভা নির্বাচন ৷ এই অবস্থায় হুগলি জেলায় সংগঠন মজবুত করা যে অত্যন্ত জরুরি, তা ভালোই বোঝেন মমতা ৷ মনে করা হচ্ছে, 20 এপ্রিলের বৈঠকে কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করার পাশাপাশি দলের পুরনো 'ফর্ম' ফিরে পাওয়ার দাওয়াই দিতে পারেন মমতা ৷
আরও পড়ুন: বীরভূমে দল ছাড়ার হিরিক, তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে মমতা
সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ মনে করছে, আসান্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই জেলাকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়ার কারণ হল, পরবর্তী লোকসভা ভোটে এই জেলা থেকে তিনটি আসনেই ভালো ফল করতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস ৷ কয়েকদিন আগে আরামবাগ লোকসভা আসন নিয়ে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ এর আগে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে শুভেন্দুর কাছে পরাজিত হতে হয়েছে মমতাকে (নন্দীগ্রাম আসনে) ৷ চব্বিশের লোকসভা ভোটে আরামবাগে সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি (বিজেপির কাছে তৃণমূলের হার) হোক, তা কখনই চাইবেন না তৃণমূল সুপ্রিমো ৷ তাই নির্দিষ্টভাবে আরামবাগ আসনের জন্য মমতা আলাদা করে কোনও নির্দেশ দেন কি না, সেদিকেও নজর থাকবে সব পক্ষের ৷ 20 তারিখের বৈঠকে জেলার দলীয় বিধায়ক থেকে শুরু করে সাংগঠনিক পদাধিকারী এবং জেলার নেতা-নেত্রী, সবাইকেই উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে ৷