কলকাতা, 4 সেপ্টেম্বর: ফের কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক হেনস্তার অভিযোগ তুললেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ তাঁর পরিবারও রাজনৈতিক হেনস্তার শিকার বলে অভিযোগ করেছেন তিনি ৷ সোমবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমার পরিবারও হেনস্তার শিকার ৷ যদিও আমি এক টাকা কারও থেকে নিইনি বা এক কাপ চাও কারও থেকে খাইনি ৷ এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ৷’’
এ দিন রিয়েল এস্টেট কনভেনশন, ‘‘2023 এর অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ সেই অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকেই এই কথা বলেন তিনি ৷ প্রশ্ন তোলেন, ‘‘আমি বুঝতে পারি না, আমি যদি কিছু কিনি, ধরুন কাপ-ডিশ কিনলাম ৷ ইডি কি এটা নিয়ে তদন্ত করতে পারে ?’’
তবে এই অভিযোগগুলি করার সময় একবারও কেন্দ্রীয় সরকার বা বিজেপির নাম করেননি তিনি ৷ হেনস্তার অভিযোগ সম্পর্কে বলতে গিয়ে বারবার কিছু এজেন্সির কথা বলেছেন ৷ শুধু একবারই তাঁর মুখে ইডির নাম শোনা গিয়েছে ৷
আসলে এ দিন রিয়েল এস্টেট কনভেনশনের মঞ্চ থেকে ব্যবসায়ীদের হেনস্তা করার অভিযোগ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ কিছু এজেন্সি এই ধরনের হেনস্তা করছে বলে তিনি দাবি করেন ৷ সেই সূত্র ধরেই প্রথমে তিনি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বার্তা দেন, ‘‘দুর্বল হবেন না ৷ কেউ কেউ হেনস্তা করবে৷ সব ব্যবসায়ীদের বারবার হেনস্তা করা হচ্ছে কিছু এজেন্সিকে দিয়ে ৷’’
আরও পড়ুন: চব্বিশের ভোটের আগে গ্রেফতার হবেন অভিষেক ! আশঙ্কার কথা শোনালেন মমতা
এর পরই মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় নিজের পরিবারের প্রসঙ্গ টানেন ৷ তাঁর পরিবারকেও এজেন্সি রাজনৈতিকভাবে হেনস্তা করছে বলে অভিযোগ করেন ৷ তার পর ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে তিনি পরামর্শ দেন যে এমন হেনস্তার ঘটনা ঘটলে ব্যবসায়ীরা যেন আইনের সাহায্য নেন ৷
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের ভাইপো তথা তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম জড়িয়েছে একাধিক দুর্নীতির মামলায় ৷ কয়লা পাচার কাণ্ডে তাঁকে নয়াদিল্লি ও কলকাতায় একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট ৷ নিয়োগ দুর্নীতি মামলাতেও তিনি সিবিআই-এর নোটিশ পেয়ে হাজিরা দিয়েছেন কলকাতার নিজাম প্যালেসে ৷ কয়েকঘণ্টা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখিও হন তিনি ৷
সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিষেকের সংস্থা লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসে তল্লাশি চালিয়েছে ইডি ৷ পরে ইডির বিবৃতিতেও অভিষেকের নাম ছিল ৷ রাজনৈতিক মহলের মতে, এই নিয়ে এ দিন মুখ খুলেছেন মমতা ৷ আর কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে দিয়ে রাজনৈতিক হেনস্তার অভিযোগ করেছেন ৷
একই সঙ্গে এ দিন একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রীর মুখে শোনা গিয়েছে যে মিডিয়ার একাংশকে ব্যবহার করে বাংলাকে বদনাম করার চেষ্টা চলছে ৷ মমতার দাবি, রাজনৈতিক চাপে মিডিয়ার একাংশ প্রচার করে যে বাংলায় সাম্প্রদায়িক হিংসা ছাড়া আর কিছু হয় না ৷ কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি বিচার করলে দেখা যাবে বাংলা সবক্ষেত্রে এক নম্বর ৷ উন্নয়ন ছাড়া এটা কীভাবে সম্ভব হত, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি ৷
আরও পড়ুন: আমি আসার পরদিনই ইডিকে পাঠিয়েছে তল্লাশির জন্য, অভিষেকের নিশানায় বিজেপি
পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘একটাই উদ্দেশ্য বাংলাকে বদনাম ৷ লড়তে পারলে রাজনৈতিকভাবে লড়ুন, বাংলার মা, দেশ মাকে নিয়ে লড়াই করবেন না ৷’’ আর সব শেষে জয় হিন্দ, জয় বাংলার সঙ্গে জয় ইন্ডিয়া বলে নিজের বক্তব্যে দাঁড়ি টানেন মমতা ৷