কলকাতা, 10 এপ্রিল : বাড়তে পারে লকডাউন । গতকাল নবান্নে বণিক মহলের সঙ্গে একপ্রস্থ বৈঠকের পর সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । পাশাপাশি সাধারণ মানুষের স্বার্থে পণ্য পরিষেবা ঠিক রাখতেও ব্যবসায়ীদের জানিয়ে দিয়েছেন তিনি । কিন্তু এর ফলে রাজ্যে লকডাউন কি ঠিকঠাক ভাবে হবে ? লকডাউনকে সফল করতে কী পদক্ষেপ করা প্রয়োজন মুখ্যমন্ত্রীর ? ETV ভারতকে জানালেন অর্থনীতিবিদেরা ।
কোরোনা মোকাবিলা করার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে বারবার বলা হচ্ছে ঘরে থাকার কথা । কিন্তু তা শর্তেও লকডাউন ভেঙে ভিড় জমছে রাস্তা, দোকান, বাজারগুলিতে । প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া ইঙ্গিত অনুযায়ী বর্ধিত হবে লকডাউন । ফলে লকডাউনের সময় আরও বর্ধিত হলে মানুষকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে কি না তা নিয়ে ETV ভারতকে জানালেন, বর্ষীয়ান অর্থনীতিবিদ রতন খাসনবিশ এবং অর্থনীতিবীদ দীপঙ্কর দাশগুপ্ত । এ প্রসঙ্গে রতন খাসনবিশ বলেন, " লকডাউন সফল করতে হলে যে শ্রমিক শ্রেণির মানুষের জীবিকা বন্ধ হয়ে আছে তাঁদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে । নজর দিতে হবে রাষ্ট্রীয় খাদ্য সুরক্ষা যোজনা 2 (রাজ্য সরকারের) যাতে মাসে 1 কেজি গম এবং 1 কেজি চাল পান তাঁরা । রাজ্যে বহু মানুষের এই কার্ড রয়েছে । RKSY এর কার্ডগুলোতে অন্তর্দয়ের মতো বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে, টাকা একটু খরচ হবে, কিন্তু মানুষগুলো নিশ্চিত হতে পারবেন বাড়িতে খাবার রয়েছে । মানুষের যে অন্য খরচগুলো যার জন্য লকডাউনের মধ্যেও বেরোতে হয় , অন্তত পাঁচ হাজার টাকা পরিবার পিছু মাসে যদি দেওয়া যায় তাহলে লকডাউনটা সম্পূর্ণ হবে । না হলে মানুষ জীবিকার তাড়নায় রাস্তায় বেরোবে লকডাউন ভেঙে যাবে ।"
আরও এক অর্থনীতিবীদ দীপঙ্কর দাশগুপ্ত বলেন, "মানুষকেই এগিয়ে আসতে হবে । সরকার তাঁর মতো করে সাহায্য করবে। নিজেদের স্বার্থে লকডাউন রাখতে হবে । সমস্ত মানুষ রাজ্যকে সাহায্য না করলে লকডাউন ঠিকঠাক করে রাখা সম্ভব না ।"
প্রসঙ্গত, লকডাউন বাড়তে পারে বলে গতকাল ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । তারপরই আজ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নবান্নে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক সেরে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী । লকডাউনের ফলে সাধারণ মানুষের যাতে সমস্যা না হয় বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন তিনি । পাশাপাশি, লকডাউনকে না ভেঙে কীভাবে পণ্য পরিষেবা স্বাভাবিক রাখা যায় তা নিয়ে বণিকসভার সঙ্গে পরামর্শ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী । তবে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন শুধুমাত্র বণিকসভার সঙ্গে পরামর্শ করে হবে না । প্রত্যেকের জন্য করতে হবে খাদ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা । সঙ্গে সাধারণ মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে । সরকারকে সাহায্য করে লকডাউন পরিপূর্ণ করতে হবে ।