কলকাতা, 13 অক্টোবর : 2020 সালে রাজ্যে 107টি পৌরসভা ও কর্পোরেশনে নির্বাচন হওয়ার কথা ৷ তার আগে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা যাচাই করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব ৷ দুই দলের তরফে বিশ্বাসযোগ্য কর্মীদের দিয়ে সমীক্ষা করাতে চায় বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস উভয়ই ৷ 2020 সালের পৌরসভা অথবা 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের সংগঠনকে আরও মজবুত করার একটা প্রচেষ্টা এই সমীক্ষা, মনে করছেন বাম নেতৃত্ব । অতীতের নির্বাচনে যাঁরা ভুল তথ্য দিয়েছিলেন তাঁদের দূরে রাখা হচ্ছে সমীক্ষা থেকে ।
নির্বাচনের আগেই তাই বুথগুলি সম্পর্কে খোঁজখবর শুরু করেছেন জেলা নেতৃত্ব ৷ কংগ্রেস এই বিষয়ে পিছিয়ে থাকলেও দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে বামফ্রন্ট শুরু করে দিয়েছে সমীক্ষার কাজটিও ৷ 2020 সালের নির্বাচনের পরই 2021 সালে বিধানসভা নির্বাচনও রয়েছে ৷ কাজেই পৌরসভা ও কর্পোরেশনের ফল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷
শহরের প্রতি ব্লক বা ওয়ার্ডে 78 থেকে 95টি বুথ থাকে ৷ সেখানে শহরতলি কিংবা গ্রামীণ এলাকায় সেই সংখ্যা ব্লক পিছু প্রায় গড়ে 250 থেকে 275 বুথ ৷ প্রত্যেকটি বুথে গুরুত্ব সহকারে সমীক্ষা চালানো হবে বলে জানিয়েছে বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব ৷ এলাকার মানুষ কাকে চাইছেন, যিনি মানুষের বিভিন্ন সমস্যার সঙ্গে সমাধানের পথ বাতলে দিচ্ছেন তাকেই আপাতত নির্বাচনে প্রার্থীর অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে ৷ বুথে বুথে নয়, মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়েও জনসংযোগ করবেন রাজ্যের দুই বিরোধীদলের প্রতিনিধিরা ৷
পৌরভোটের আগে হারানো জমি কতটা ফিরে পেতে পারে তারা, এই তথ্য জানতে মরিয়া বাম ও কংগ্রেস দুই তরফই ৷ সূত্রের খবর, রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকের পর CPI(M)-র পক্ষ থেকে পৌরসভা ও কর্পোরেশন এলাকায় ওয়ার্ড ভিত্তিক সমীক্ষা করবে তারা । শহরতলি এবং গ্রামীণ এলাকায় বিশ্বাসযোগ্য কর্মীদের কাজে লাগাতে চায় কংগ্রেসও । দলীয় সংগঠন কোথায় দাঁড়িয়ে রয়েছে, মানুষের মধ্যে জনপ্রিয়তা এবং গ্রহণযোগ্যতা কতটা মজবুত হয়েছে তা যাচাই করতেই এই সমীক্ষা চালাবে দুই দল । যে সব জায়গায় কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের জনপ্রতিনিধি রয়েছেন, তাঁদের জনসংযোগ কেমন তাও খতিয়ে দেখা হবে, জানিয়েছে দুই দলই ।
পৌরভোটে সমীক্ষ নিয়ো বামফ্রন্টের বৈঠক হয়ে গিয়েছে । আগামী সপ্তাহে কংগ্রেস বৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে সূত্রের খবর । ইতিমধ্যেই বামফ্রন্টের জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে জেলাস্তরে বৈঠক করেছেন জেলা নেতৃত্ব । CPI(M) সূত্রের খবর, সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলির জনপ্রতিনিধির ভাবমূর্তি কেমন, মানুষের সঙ্গে জনসংযোগে কতটা অভ্যস্থ তাঁরা, নির্বাচনে কে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে মানুষের সমর্থন পাওয়া যাবে সেই বিষয়গুলি মূলত ভাবনাচিন্তার মধ্যে রেখেছে বামফ্রন্ট ।
এরাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং BJP-কে রুখতে নির্বাচনের বহু আগে থেকেই কোমর বেঁধে নেমেছে বাম এবং কংগ্রেস । সূত্রের খবর, পুজোর মরশুম সম্পূর্ণ হলে পরে লাগাতার প্রচার করা হবে BJP এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে । গোটা রাজ্য জুড়ে চলবে সেই প্রচার । আরও বেশি জনসংযোগেও জোর দেওয়া হবে বুথ সমীক্ষার পাশাপাশি । তৃণমূল কংগ্রেসের শাসনে রাজ্যবাসী কতটা বিরক্ত সেটাও জানতে চাইবে বাম এবং কংগ্রেস নেতৃত্ব ।