কলকাতা, 29 জুন: বর্ষার মরশুম শুরু হলেই বাড়তে থাকে ডেঙ্গির প্রকোপ ৷ এবার ডেঙ্গি রুখতে কড়া মনোভাব কলকাতা পৌরসভার। বাড়িতে মশার লার্ভা পাওয়া গেলে লাখ টাকা জরিমানা আদায়ের নির্দেশ পৌর আদালতের ৷
প্রত্যেক বছর বর্ষা এলে অন্যতম মাথা ব্যথার কারণ হয়ে যায় মশা বাহিত রোগ। একাধিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরেও প্রত্যেক বছর পরিস্থিতি সংকটজনক হয়ে ওঠে। কয়েক হাজার আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা থেকে শুরু করে বাড়তে থাকে মৃত্যু তালিকাও । এর পিছনে অন্যতম কারণ দেখা যায় নাগরিকদের বেপরোয়া মনোভাব। তাই এ বছর আর কোনওরকম রেয়াত নয়। শুরু থেকেই অসচেতন নাগরিকদের টাইট দিতে খরগহস্ত পৌর কর্তৃপক্ষ।
বার বার বলার পরেও যে সমস্ত নাগরিকদের হুঁশ ফেরেনি, তাঁদের বিরুদ্ধে করা হচ্ছে একের পর এক মামলা। ইতিমধ্যেই প্রায় 43টি পরিবারের বিরুদ্ধে পৌর আদালতে মামলা করেছে কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ। সেখানেই শেষ নয় মামলা লড়ে আলিপুর ও চেতলা এলাকার দু'জন নাগরিকের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ লক্ষ টাকা জরিমানার নির্দেশ নেওয়া হয়েছে পৌর আদালত থেকে।
বছরভর ডেঙ্গু নিয়ে সচেতনতা প্রচার, লিফলেট বিলি, স্বাস্থ্যকর্মীদের বাড়ি বাড়ি পাঠিয়ে নাগরিকদের সচেতন ও সজাগ করার দায়িত্ব পালন করে চলে কলকাতা কর্পোরেশন। তবে এর পরেও একাংশে নাগরিকদের ডেঙ্গু নিয়ে কোনও মাথা ব্যাথা নেই। ফল ভোগ করতে হয় অন্যদের। এবার বর্ষার মরশুম শুরু হতেই কঠিন পদক্ষেপ ৷ মশা বাহিত রোগ ঠেকাতে ফাঁকা জমি যথেষ্ট চিন্তার। সেই ফাঁকা জমি নিয়ে কঠোর আইন চাইছে কলকাতা কর্পোরেশন। সে বিষয়ে দ্রুত রাজ্য সরকারকে চিঠি দিতে চলেছে কলকাতা কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ।
কলকাতা কর্পোরেশন সূত্র জানা গিয়েছে, চলতি বছরের শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত মশার লার্ভা পাওয়া যাওয়ায় প্রায় 3500 জনকে নোটিশ ধরানো হয়েছে। 43 জনের বিরুদ্ধে 496-এ ধারায় মামলা করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। এদের প্রত্যেকের বাড়ি থেকেই পাওয়া গিয়েছে ডেঙ্গু মশার লার্ভা। এরপর প্রাথমিক নোটিশ দেওয়ার পরেও এদের হুঁশ ফেরেনি বলে অভিযোগ ৷ তাই পৌর আদালতে মামলা করা হয়েছে।
2017 সালে এই সংক্রান্ত মামলা হয় 2,97,500টি ৷ 2018 সালে 13,6750 জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। 2019 সালে সেই মামলার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় 26,20500-তে। 2020 থেকে 21 সাল পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হয়েছিল করোনার কারণে। তবে 22 সালের শেষের দিকে 23টি মামলা দায়ের করা হয়।
আরও পড়ুন: ভ্রাম্যমান গাড়ির এলইডি স্ক্রিনে ফুটিয়ে তোলা হবে ডেঙ্গি সচেতনতা কর্মসূচি
এই প্রসঙ্গে এক আধিকারিক জানান, ডেঙ্গু নিয়ে প্রতিবছরই হিমশিম খেতে হয় পৌর কর্তৃপক্ষকে। তার থেকেও বড় কথা নাগরিকদের খুব খারাপ অবস্থার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। সেই অবস্থার পরিবর্তন করতে পারে একমাত্র সচেতনতাই ৷ তবে লাগাতার সেই চেষ্টা চালিয়েও একাংশ নাগরিকের বেপরোয়া মনোভাব কিছুতেই যাচ্ছে না। তাই আর কোনও রেয়াত করার উপায় নেই। এবার বেপরোয়া মনোভাব দেখলে, যেখানেই মশার লার্ভা মিলছে সেখানেই আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।