কলকাতা, 1 নভেম্বর: কর খেলাপি করেছিলেন হোটেল মালিক ৷ তাঁর সম্পত্তি নিলাম করে বিপুল পরিমাণ টাকা লক্ষ্মীলাভ ৷ 19 কোটি টাকা ঢুকতে চলেছে কলকাতা পৌরনিগমের কোষাগারে ৷
পৌরনিগমের তরফে জানা গিয়েছে, সম্পত্তি কর বাকি রাখা বর্তমানে রোগে পরিণত হয়েছে ৷ কলকাতার সাধারণ কর দাতাদের মধ্যে এই প্রবণতা সেরকম দেখা যায় না ৷ তবে ব্যবসায়ীদের মধ্যে এই প্রবণতা প্রকটভাবে লক্ষ্য করা যায় । বাণিজ্যিক ভবনের সম্পত্তির কর বিপুল টাকা বছরের পর বছর বকেয়া রেখে দেন মালিকপক্ষ । অনেক ক্ষেত্রে আদালতের দ্বারস্থ হন। মামলা দীর্ঘ কাল যাবত চলতে থাকে । তবে কোষাগারের হাল ফেরাতে কয়েক বছর ধরে তেরেফুরে ময়দানে নেমেছে পৌরনিগমের সম্পত্তি কর মূল্যায়ন বিভাগ । কর খেলাপিদের ধরে ধরে চিহ্নিত করে তাদের নোটিশ দেওয়া হয় । তাতেও যাদের ঘুম ভাঙেনি অর্থাৎ বকেয়া কর মেটাননি অনেকে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে কলকাতা পৌরনিগম ।
এরকমই বছরের পর বছর সম্পত্তি কর পরিশোধ না করায় মধ্য কলকাতায় রাউডন স্ট্রিটের একটি তিনতারা হোটেল বাজেয়াপ্ত করে পৌরনিগমের সম্পত্তি কর বিভাগ । সেই হোটেল নিলামের মাধ্যমে বিক্রয় করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় । পৌরনিগম সূত্রে খবর, 2005 সাল থেকে বকেয়া টাকা পরিশোধ করেনি ওই হোটেলের মালিক । সেই কর, সুদ ও জরিমানা নিয়ে বাড়তে বাড়তে 3 কোটি 2 লক্ষ 294 টাকায় পৌঁছয় । বকেয়া মেটাতে বারে বারে কর্পোরেশন আবেদন করে হোটেল মালিককে । তা সত্ত্বেও কর মেটানো হয় না ৷
এরপরেই 2021 সালে হোটেলটি নিজের দখলে নেয় কলকাতা পৌরনিগম ৷ সম্পত্তি কর মূল্যায়ন বিভাগের তরফে সেখানে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয় । তারপরেও বকেয়া করের টাকা পরিশোধ না করায় শেষমেশ কলকাতা পৌরনিগম কর্তৃপক্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় ৷ ওই সম্পত্তি নিলাম করার আবেদন জানানো হয় । আদালত সেই আবেদন গ্রহণ করে এবং হোটেলটি নিলামের অনুমতি দেয় । তবে নিলামে কেউ অংশ নেননি । দীর্ঘ সময় পরে থাকে সম্প্রতিটি ৷ শেষে এক ব্যক্তি পৌরনিগমের কাছে চিঠি লিখে ওই হোটেল কেনার আবেদন জানান ।
আরও পড়ুন: বকেয়া করদাতাদের সুদ ও জরিমানায় মিলবে না বিরাট ছাড়, নভেম্বর থেকে চালু নয়া ওয়েভার স্কিম
রাউডন স্ট্রিট এই হোটেল দাম নির্ধারণ করা হয় 22 কোটি টাকা । অর্থাৎ কলকাতা পৌরনিগম এই সম্পত্তির বিক্রি করে বকেয়া করের প্রায় 4কোটি টাকা পাবে ৷ সঙ্গে লাভের 19 কোটি টাকা অতিরিক্ত ঢুকবে কোষাগারে । পৌরনিগমের এক আধিকারিক বলেন, "যারা বড় অংকের কর খেলাপি করে তাদের জন্য এই পদক্ষেপ কঠোর বার্তা দেবে । কর খেলাপি করলে আমরা কোনওভাবেই রেয়াত করব না । অনেক আবেদন নিবেদন করা হয়েছে । আর নয়, এবার বকেয়া না মেটালে বাকিদের ক্ষেত্রেও একই পথে হাঁটা হবে । অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক সম্পত্তি মালিকদের বেশি কর বকেয়া রেখে দেওয়ার প্রবণতা থাকে । তারা এবার সতর্ক হন ।"