কলকাতা, 5 মার্চ : যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি ছাত্রকে দেশ ছাড়ার নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট । যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের ছাত্র কামিল সিডসিনস্কি পোল্যান্ডের নাগরিক । গতবছর ডিসেম্বরে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বিরোধী মিছিলে অংশগ্রহণ করার অভিযোগে কলকাতার ফরেনার রিজ়িওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়। ২২ ফেব্রুয়ারি তিনি অফিসে গিয়ে দেখা করেন । 15 দিনের মধ্যে তাঁকে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয় । সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কামিল ।
দু'দিন শুনানি চলে আদালতে । বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য আবেদন শোনার পর কামিলের দেশ ছাড়ার নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেন । কামিলকে দেশ ছাড়ার নির্দেশের উপর 18 মার্চ পর্যন্ত স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে বলে জানান তিনি । ওইদিন বিচারপতি এই মামলার রায় ঘোষণা করবেন ।
গতকাল মামলার শুনানিতে কামিলের তরফে আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র বলেন, "কামিল এর আগে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ও সংস্কৃত নিয়ে পড়াশোনা করে স্নাতক হয়েছেন । তারপর তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করছেন । অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র । 19 ডিসেম্বর ধর্মতলায় CAA বিরোধী একটি মিছিলে তিনি ছবি তুলছিলেন । পাশাপাশি কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গেও তিনি ওই সময় কথা বলেন । তার মানে এই নয় যে তিনি CAA বিরোধী মিছিলে অংশগ্রহণ করেছিলেন । ভারতীয় সংবিধানের 14 নম্বর ধারা অনুযায়ী আইনের চোখে সবাই সমান ।
এর বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফের আইনজীবী বলেন, "একজন বিদেশি ছাত্র ভারতীয় সংসদ নির্মিত আইনের বিরোধিতা করতে পারেন না । তিনি ভিসা নিয়ে কিছুদিন এদেশে পড়াশোনা করতে এসেছেন । আইনত হাইকোর্টে তিনি যে মামলা করেছেন তা বিচারপতির খারিজ করে দেওয়া উচিত ।"
দুই পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য নির্দেশ দেন, আগামী 18 মার্চ পর্যন্ত তাঁকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা যাবে না । ওইদিন তিনি এই মামলার রায় ঘোষণা করবেন ।
কামিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক সাহিত্যে MA-র দ্বিতীয় বর্ষের তৃতীয় সেমেস্টার পরীক্ষা দেবেন । প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের বাংলাদেশি এক ছাত্রীকেও দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে FRRO। বিশ্বভারতীর ছাত্রী আফসারা অনিকা মিম শান্তিনিকেতনে নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতার কয়েকটি ছবি সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন ।