ETV Bharat / state

বিশালবপু শান্তিরক্ষক, 'মধ্যপ্রদেশে' নাজেহাল রাজ্য পুলিশের একাংশ; 'অ্যান্টি ওবেসিটি ডে'তে কারণ খুঁজল ইটিভি ভারত

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Nov 26, 2023, 9:30 AM IST

Anti Obesity Day: আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব পালন করতে এদিক-ওদিক ছুটতে হয় পুলিশদের ৷ কিন্তু তাও পুলিশকর্মীরা স্থূলতার জালে কুপোকাত হচ্ছেন ৷ 'অ্যান্টি ওবেসিটি ডে'তে ইটিভি ভারতের প্রতিবেদনে জেনে নিন বিস্তারিত...

স্থূলতার কবলে পুলিশের একাংশ
Anti Obesity Day

কলকাতা, 25 নভেম্বর: ওবেসিটি অর্থাৎ স্থূলতা। নামটা ছোট শোনালেও গোটা বিশ্ব এই ওবেসিটি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে। ওবেসিটিতে পিছিয়ে নেই আমাদের ভারতবর্ষ। আগামিকাল অর্থাৎ 26 নভেম্বর বিশ্ব অ্যান্টি ওবেসিটি ডে। এই ওবেসিটি থেকে কীভাবে সাধারণ মানুষ বা আমরা পরিত্রাণ পাচ্ছি না, ঠিক সেইভাবেই ওবেসিটি নিয়ে চিন্তিত কলকাতা তথা রাজ্য পুলিশ।

স্থূলতার জালে ইতিমধ্যেই কুপোকাত রাজ্য পুলিশ এবং কলকাতা পুলিশের একাংশ কর্মী। যদিও ওবেসিটির লক্ষণ বা যার জন্য় সাধারণভাবেই মানুষ স্থূলকায় হয় তা হল-অধিকাংশ সময় নড়াচড়া না-করে বসে থাকা ৷ কম্পিউটারের সামনে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ করা ৷

  • কিন্তু যেই বিষয়টি সব থেকে চিন্তার সেটি হল-

শহরে যাঁরা আইন শৃঙ্খলের দায়িত্ব পালন করছেন, প্রতিনিয়তই এদিক-ওদিক ছুটে বেড়াচ্ছেন তাঁরা কীভাবে স্থূলকায় হচ্ছেন? এই নিয়ে সরাসরি মুখ খুলতে না-চাইলেও রাজ্যে পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, "দীর্ঘদিন ধরে রাজ্য পুলিশে পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বা পুলিশ নিয়োগ হয়নি। আর এদিকে প্রায় রোজই কোনও না কোনও পুলিশকর্মী অবসর গ্রহণ করছেন। প্রয়োজনে তুলনায় পুলিশকর্মীর সংখ্যা দিনের পর দিন কমে আসছে। পুলিশকর্মীদের সংখ্যা কমলেও পাল্লা দিয়ে তাঁদের কাজের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে গড়ে চারজন পুলিশকর্মীর কাজ একজনকে দিয়ে করাতে বাধ্য হচ্ছেন পুলিশের উচ্চ মহলের কর্তারা।"

তাঁর কথায়, "আর এর ফলে পুলিশকর্মীদের খাওয়া-দাওয়ার ওপর খারাপ প্রভাব করছে। শহরের আইনশৃঙ্খলার কর্তব্য পালন করার পাশাপাশি অতিরিক্ত ডিউটি করতে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ ধরে খাওয়া-দাওয়া হয় না অধিকাংশ পুলিশকর্মীর। এছাড়া রাজ্য এবং কলকাতা পুলিশের অধিকাংশ থানায় যে পুলিশকর্মী সারারাত জেগে কাজ করছেন তিনি তারপরের দিন মর্নিং শিফটে রয়েছেন। আবার এও দেখা যায় পুলিশকর্মীদের ঘুমের এবং ঘুম থেকে ওঠার সময় স্থির নয়। ফলে দীর্ঘক্ষণ ধরে অভুক্ত বা সময়ে খাওয়া-দাওয়া না-করার ফলে তাঁদের মোটাপেট দেখা যাচ্ছে, যা ওবেসিটির অন্যতম একটি কারণ।"

অবশ্য এই বিষয়ে কলকাতাতে আইন শৃঙ্খলা দায়িত্বে থাকা এক আধিকারিক বলেন, "ডিউটির সংখ্যা বেশি তার তুলনায় পুলিশকর্মীর সংখ্যা কম হলেও পুলিশকর্মীদের স্বাস্থ্য সচেতনতার উপর আমরা বিশেষভাবে জোর দিচ্ছি। প্রতিটা পুলিশ হেডকোয়ার্টার এবং বেশ কয়েকটি থানায় ইতিমধ্যেই গড়ে তোলা হয়েছে অত্যাধুনিক মানের জিম। যাতে শরীর ঠিক রাখা যায় ৷"

এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশের এক অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার বলেন, "যতই অত্যাধুনিক মানে জিম বা পরিকাঠামো গড়ে তোলা হোক না কেন সেইগুলো শুধুমাত্র উচ্চপদস্থ বা উপর মহলের পুলিশকর্মীদের জন্যই সীমাবদ্ধ। সাধারণ পুলিশকর্মীরা ডিউটি শেষ করে কখন ছুটিতে বাড়ি যেতে পারবেন সেই নিয়ে চিন্তিত থাকেন। ডিউটি শেষ করে তারা আবার জিমে গিয়ে জিম করবেন সেটি কার্যত অবাস্তব।"

এছাড়াও লেস ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি বা বলা চলে পরিশ্রম না-করেই বসে থাকার ফলস্বরূপ এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন পুলিশকর্মীরা। এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশের উত্তর কলকাতার এক থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন, "আমার থানায় লোকসংখ্যা থাকার কথা 60 জন। কিন্তু আমার কাছে বর্তমানে সাব-ইন্সপেক্টর এবং কয়েকজন পুলিশকর্মী মিলিয়ে মোট সংখ্যাটা 35 জন। অর্থাৎ বলে চলে প্রায় অর্ধেক। পুলিশকর্মী সংখ্যা অর্ধেক হলেও থানার সিডিকশন বা এলাকা কিন্তু একই থেকে গিয়েছে। এছাড়াও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অপরাধের প্রবণতা। ফলে এখন অফিসার ইনচার্জদের কেউ সারারাত জেগে থানায় কাটানোর পর সকাল থেকে ফের দুপুর এবং রাত পর্যন্ত ডিউটি করতে হয়। ঠিক সময় খাওয়া-দাওয়া হয় না। আর এটাই আমাদের ওবেসিটি হওয়ার অন্যতম কারণ।"

আরও পড়ুন:

  1. মধুমেহর বাড়বাড়ন্ত ! ভাইফোঁটায় মিষ্টত্ব হারাল 'মিষ্টি'
  2. বিশ্ব ডায়াবেটিস-ডে'তে পালিত হয় রসগোল্লা দিবসও, যেন মিষ্টি-মধুর দ্বন্দ্ব; কী বলছেন চিকিৎসক
  3. বিশ্ব সহানুভূতি দিবসে চারিত্রিক শিক্ষার ভিত্তি হোক উদারতা

কলকাতা, 25 নভেম্বর: ওবেসিটি অর্থাৎ স্থূলতা। নামটা ছোট শোনালেও গোটা বিশ্ব এই ওবেসিটি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে। ওবেসিটিতে পিছিয়ে নেই আমাদের ভারতবর্ষ। আগামিকাল অর্থাৎ 26 নভেম্বর বিশ্ব অ্যান্টি ওবেসিটি ডে। এই ওবেসিটি থেকে কীভাবে সাধারণ মানুষ বা আমরা পরিত্রাণ পাচ্ছি না, ঠিক সেইভাবেই ওবেসিটি নিয়ে চিন্তিত কলকাতা তথা রাজ্য পুলিশ।

স্থূলতার জালে ইতিমধ্যেই কুপোকাত রাজ্য পুলিশ এবং কলকাতা পুলিশের একাংশ কর্মী। যদিও ওবেসিটির লক্ষণ বা যার জন্য় সাধারণভাবেই মানুষ স্থূলকায় হয় তা হল-অধিকাংশ সময় নড়াচড়া না-করে বসে থাকা ৷ কম্পিউটারের সামনে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ করা ৷

  • কিন্তু যেই বিষয়টি সব থেকে চিন্তার সেটি হল-

শহরে যাঁরা আইন শৃঙ্খলের দায়িত্ব পালন করছেন, প্রতিনিয়তই এদিক-ওদিক ছুটে বেড়াচ্ছেন তাঁরা কীভাবে স্থূলকায় হচ্ছেন? এই নিয়ে সরাসরি মুখ খুলতে না-চাইলেও রাজ্যে পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, "দীর্ঘদিন ধরে রাজ্য পুলিশে পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বা পুলিশ নিয়োগ হয়নি। আর এদিকে প্রায় রোজই কোনও না কোনও পুলিশকর্মী অবসর গ্রহণ করছেন। প্রয়োজনে তুলনায় পুলিশকর্মীর সংখ্যা দিনের পর দিন কমে আসছে। পুলিশকর্মীদের সংখ্যা কমলেও পাল্লা দিয়ে তাঁদের কাজের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে গড়ে চারজন পুলিশকর্মীর কাজ একজনকে দিয়ে করাতে বাধ্য হচ্ছেন পুলিশের উচ্চ মহলের কর্তারা।"

তাঁর কথায়, "আর এর ফলে পুলিশকর্মীদের খাওয়া-দাওয়ার ওপর খারাপ প্রভাব করছে। শহরের আইনশৃঙ্খলার কর্তব্য পালন করার পাশাপাশি অতিরিক্ত ডিউটি করতে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ ধরে খাওয়া-দাওয়া হয় না অধিকাংশ পুলিশকর্মীর। এছাড়া রাজ্য এবং কলকাতা পুলিশের অধিকাংশ থানায় যে পুলিশকর্মী সারারাত জেগে কাজ করছেন তিনি তারপরের দিন মর্নিং শিফটে রয়েছেন। আবার এও দেখা যায় পুলিশকর্মীদের ঘুমের এবং ঘুম থেকে ওঠার সময় স্থির নয়। ফলে দীর্ঘক্ষণ ধরে অভুক্ত বা সময়ে খাওয়া-দাওয়া না-করার ফলে তাঁদের মোটাপেট দেখা যাচ্ছে, যা ওবেসিটির অন্যতম একটি কারণ।"

অবশ্য এই বিষয়ে কলকাতাতে আইন শৃঙ্খলা দায়িত্বে থাকা এক আধিকারিক বলেন, "ডিউটির সংখ্যা বেশি তার তুলনায় পুলিশকর্মীর সংখ্যা কম হলেও পুলিশকর্মীদের স্বাস্থ্য সচেতনতার উপর আমরা বিশেষভাবে জোর দিচ্ছি। প্রতিটা পুলিশ হেডকোয়ার্টার এবং বেশ কয়েকটি থানায় ইতিমধ্যেই গড়ে তোলা হয়েছে অত্যাধুনিক মানের জিম। যাতে শরীর ঠিক রাখা যায় ৷"

এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশের এক অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার বলেন, "যতই অত্যাধুনিক মানে জিম বা পরিকাঠামো গড়ে তোলা হোক না কেন সেইগুলো শুধুমাত্র উচ্চপদস্থ বা উপর মহলের পুলিশকর্মীদের জন্যই সীমাবদ্ধ। সাধারণ পুলিশকর্মীরা ডিউটি শেষ করে কখন ছুটিতে বাড়ি যেতে পারবেন সেই নিয়ে চিন্তিত থাকেন। ডিউটি শেষ করে তারা আবার জিমে গিয়ে জিম করবেন সেটি কার্যত অবাস্তব।"

এছাড়াও লেস ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি বা বলা চলে পরিশ্রম না-করেই বসে থাকার ফলস্বরূপ এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন পুলিশকর্মীরা। এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশের উত্তর কলকাতার এক থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন, "আমার থানায় লোকসংখ্যা থাকার কথা 60 জন। কিন্তু আমার কাছে বর্তমানে সাব-ইন্সপেক্টর এবং কয়েকজন পুলিশকর্মী মিলিয়ে মোট সংখ্যাটা 35 জন। অর্থাৎ বলে চলে প্রায় অর্ধেক। পুলিশকর্মী সংখ্যা অর্ধেক হলেও থানার সিডিকশন বা এলাকা কিন্তু একই থেকে গিয়েছে। এছাড়াও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অপরাধের প্রবণতা। ফলে এখন অফিসার ইনচার্জদের কেউ সারারাত জেগে থানায় কাটানোর পর সকাল থেকে ফের দুপুর এবং রাত পর্যন্ত ডিউটি করতে হয়। ঠিক সময় খাওয়া-দাওয়া হয় না। আর এটাই আমাদের ওবেসিটি হওয়ার অন্যতম কারণ।"

আরও পড়ুন:

  1. মধুমেহর বাড়বাড়ন্ত ! ভাইফোঁটায় মিষ্টত্ব হারাল 'মিষ্টি'
  2. বিশ্ব ডায়াবেটিস-ডে'তে পালিত হয় রসগোল্লা দিবসও, যেন মিষ্টি-মধুর দ্বন্দ্ব; কী বলছেন চিকিৎসক
  3. বিশ্ব সহানুভূতি দিবসে চারিত্রিক শিক্ষার ভিত্তি হোক উদারতা
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.