কলকাতা, 14 ডিসেম্বর : উল্টোডাঙা, মুচিবাজার, বাসন্তী কলোনি, ফুলবাগান, কাঁকুরগাছি, বেলেঘাটা, নারকেলডাঙা এলাকা নিয়ে কলকাতা পৌরনিগমের ৩ নম্বর বরো ৷ মুচিবাজার এলাকায় রাস্তার উপরে এখন দাঁড়িয়ে আছে ক্লক টাওয়ার ৷ এলাকায় যার চলতি নাম এখন গীতাঞ্জলি ঘড়ি ৷ কলকাতা পৌরনিগমের 13নং ওয়ার্ডের মধ্য পড়ে এই এলাকাটি ৷ আর গীতাঞ্জলি ঘড়ির উল্টো দিকেই আছে 13 নং ওয়ার্ডের (Ward No 13 TMC Candidate Anindya Raut) সুন্দর সাজানো ওয়ার্ড অফিস ৷
এই ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর অনিন্দ্য রাউত (KMC Election 2021) ৷ পৌরবোর্ড থাকাকালীন পাঁচ বছর 3নং বরোর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব সামলেছেন ৷ তাঁর এলাকার কাজ নিয়ে খুশি স্থানীয়রা ৷ কাউন্সিলরের কাজের প্রাপ্তি হিসেব দিতে গিয়ে বিধাননগর রোডের বাসিন্দা রাজু সাউ জানান, ওয়ার্ড অফিস থেকে একটু এগিয়ে গেলেই রাস্তার এক কোণে তৈরি হয়েছে দুর্গা মন্দির ৷ এলাকার রাস্তাঘাট পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ৷ বেশ কয়েকটা জায়গায় নতুন নতুন মন্দির তৈরি করা হয়েছে ৷ রাস্তার ধারে ধারে আছে বিভিন্ন মূর্তি, হয়েছে উদ্যান ৷ সরু গলি থেকে বড় রাস্তা, এমনকি বস্তি এলাকায় পৌঁছেছে পানীয় জল ৷ লাগানো হয়েছে আলো ৷
তবে, অনেক প্রাপ্তির মধ্যেও কিছু কিছু জায়গায় প্রচারে বেরিয়ে মানুষের থেকে অপ্রাপ্তির কথাও শুনতে হয়েছে অনিন্দ্য রাউতকে ৷ কোথাও শৌচালয়ের কথা, কোথাও স্বাস্থ্যসাথী অথবা রেশন কার্ড না হওয়ার অভিযোগ ৷ এপ্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী অনিন্দ্য কিশোর রাউত বলেন, ‘‘5 বছর কাজ করেছি তাই আলাদা করে ভোট চাইতে আসিনি । মানুষ আমার পাশে থাকবেন ৷ সারা বছর পড়লে কি পরীক্ষার আগের দিন পড়তে বসতে হয় আলাদা করে !’’ এমনই আত্মবিশ্বাস শোনা গেল তাঁর গলায় (Ward No 13 TMC Candidate Anindya Raut Confident About Win ) ৷
আরও পড়ুন : KMC Election 2021 : 22 নম্বর ওয়ার্ডে জয় নিশ্চিত বলে দাবি বিজেপির মীনাদেবী পুরোহিতের
অনিন্দ্য রাউতের দাবি, যেমন বাড়ির আলো খারাপ হয়ে গেলে বাড়ির কর্তার দায়িত্ব তা বদল করার ৷ তেমনি এলাকার আলো কেটে গেলে তা সঠিক সময় ঠিক করে দেওয়ার দায়িত্ব কাউন্সিলরের ৷ সেই দায়িত্ব তিনি পালন করেছেন বলে জানালেন । আর সেটা এলাকায় ঘুরে মানুষজনের সঙ্গে কথা বললেই বোঝা যাবে বলে দাবি তাঁর ৷
আরও পড়ুন : KMC Election 2021 : পরিবারের রাজনৈতিক ঐতিহ্য রক্ষাই চ্যালেঞ্জ পূজার কাছে
পানীয় জল থেকে আলো, রাস্তাঘাট, বস্তি সবেতেই লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া ৷ এই বরোর 29 নং ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী প্রকাশ উপাধ্যায় ৷ তিনি বিগত 10 বছর ধরে এখানকার কাউন্সিলর ছিলেন ৷ তাঁর অভিযোগ, গত দু’বছর যাবৎ করোনার জন্য কলকাতা কর্পোরেশন কোনও টাকা দেয়নি ৷ তাই অনেক কাজ বাকি আছে এই ওয়ার্ডে ৷ নিকাশি সমস্যা রয়েছে বলে জানান তিনি ৷ প্রকাশ উপাধ্যায় জানান, দরকার আছে গরিব মানুষদের জন্য একটি কমিউনিটি হল ৷ যাতে অল্প পয়সায় তাঁরা সামাজিক কাজকর্মগুলি সেখানে করতে পারেন ৷
এলাকার একটা বড় অংশের ডিজিটাল রেশন কার্ড হয়নি বলেও অভিযোগ 29নং ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলরের ৷ সেই বিষয়ে প্রশাসনকে পদক্ষেপ করতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি ৷ স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করানোর কথাও বলেন ৷
আরও পড়ুন : KMC Election 2021 : বাগবাজারে পৌরভোটের মঞ্চে একদা দুই সহযোদ্ধাই এবার প্রধান প্রতিপক্ষ
32 নং ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী শান্তিরঞ্জন কুণ্ডু ৷ কাউন্সিলর থাকাকালীন ওয়ার্ডে বস্তি উন্নয়নে তাঁর মূল নজর ছিল ৷ নতুন পল্লি এলাকায় বস্তির মানুষকে ফ্ল্যাট দেওয়া হয়েছে ৷ সেখানেই করা হয়েছে স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৷ আছে বড় সাজানো মাঠ ৷ এলাকায় এখনও কয়েকটি বস্তি আছে ৷ সেগুলির আমূল সংস্কার করার দিকে নজর থাকবে আগামী দিনে, এমনটাই জানালেন 32নং ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী ।
তবে, শান্তিরঞ্জন কুণ্ডুর উন্নয়নের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে এলাকার একাংশে জমা জলের সমস্যা ৷ তাঁর অভিযোগ, কেএমডিএ সেতু তৈরি করেছে উল্টোডাঙায় ৷ সেই সেতুর পিলার খালের যে অংশে উঠেছে, সেখানে 32নং ওয়ার্ডের একটা বড় অংশের জল গিয়ে পড়ত ৷ এখন সেটি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে ৷ তাই বৃষ্টি হলে ওই এলাকায় জল জমার সমস্যা দেখা দেয় ৷ একই সঙ্গে কেআইটি আবাসনে পরিশ্রুত পানীয় জল না যাওয়া নিয়ে আক্ষেপ করেছেন শান্তিরঞ্জন কুণ্ডু । জানিয়েছেন, এবার জিতে এলে এই সমস্যাগুলির সমাধান করার চেষ্টা করবেন তিনি ৷
37 নং ওয়ার্ডের বাম প্রার্থী সমীর চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, ওয়ার্ডজুড়ে বেআইনি নির্মাণ একটা বড় মাথাব্যথার কারণ ৷ এই ওয়ার্ডে একাধিক জায়গায় জমা জলের সমস্যা আছে বলে জানান তিনি ৷ বিভিন্ন অংশে পানীয় জলের সমস্যাও রয়েছে বলে জানিয়েছে বাম প্রার্থী ৷ এ ছাড়া বিধবাভাতা, বার্ধক্যভাতা নিয়ে প্রার্থীর কাছে বিস্তর অভিযোগ করছে সাধারণ মানুষ ৷ এই সমস্যাগুলির সমাধানের জন্য আগে মানুষের সমর্থন দরকার বলে জানিয়েছেন সমীর চক্রবর্তী ৷