কলকাতা, 21 মার্চ: কলকাতা পৌরনিগমের বাজেট অধিবেশনে কাউন্সিলরদের ছবি হার মানাবে ফাঁকিবাজ কলেজ পড়ুয়াদেরও ৷ বাজেট নিয়ে বক্তব্য পেশ করছেন বরো চেয়ারম্যান অনিন্দ্য কিশোর রাউত ৷ এদিকে কাউন্সিলরদের মধ্যে মোবাইলে কেউ ব্যস্ত গেম খেলায়, কেউ তারস্বরে কথা বলে চলেছেন ফোনে ৷ বারকয়েক সতর্ক করা হয় তাঁদের ৷ পাত্তা দেননি ফোনে মত্ত কাউন্সিলর ৷ আর তাতেই বেজায় চটলেন চেয়ারপার্সন মালা রায় ৷ সোজা মোবাইল কেড়ে নেওয়ার নিদান দিলেন তিনি ৷ কেএমসি-র বাজেট অধিবেশনের শেষদিনে এমন ঘটনার সাক্ষী থাকলেন উপস্থিত সকলে ৷
মঙ্গলবার বাজেট আলোচনার শেষদিন ছিল ৷ বাজেট নিয়ে বক্তব্য পেশ করছেন বরো চেয়ারম্যান থেকে মেয়র পারিষদরা ৷ কিন্তু, 59 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জলি বসুকে দেখা যায় মোবাইলে তারস্বরে কথা বলছেন ৷ সেই সময় বক্তব্য রাখছিলেন বরো চেয়ারম্যান অনিন্দ্য কিশোর রাউত ৷ তাঁকে থামতে বলেন মালা রায় ৷ এরপর কক্ষে উপস্থিত কর্মীদের নির্দেশ দেন, ''এক্ষুনি ওনার মোবাইল কেড়ে নিন ৷'' নির্দেশ মত মোবাইল নিয়ে আসতেও যান কর্মচারী ৷ যদিও মোবাইল দিতে চাননি ওই কাউন্সিলর ৷
দেশের বেশ কয়েকটি বড় শহরের তুলনায় কতটা স্বাচ্ছন্দ্যে আছেন মহানগরবাসী ৷ সেই বিষয় বক্তব্যে তুলে ধরছিলেন অনিন্দ্য কিশোর রাউত ৷ সেসব না-শুনে মোবাইলে গল্প করতে ব্যস্ত ছিলেন কাউন্সিলর জলি বসু ৷ ক্ষুব্ধ মালা রায় কাউন্সিলরকে জিজ্ঞেস করেন, ''কেন হাউসের মধ্যে এমন ব্যবহার করছেন ?'' জবাব না দিয়ে হাসতে থাকেন কাউন্সিলর ৷
আরও পড়ুন: কেএমসি'র বাজেট অধিবেশনে অনুপস্থিত একাধিক কাউন্সিলর, হুইপ জারি করল তৃণমূল
ক্ষুব্ধ মালা রায়ের বক্তব্য, ''হতেই পারে জরুরি কথা ৷ সেক্ষেত্রে বাইরে গিয়ে কথা বলবেন ৷ কাউন্সিলর, মেয়র পারিষদরা বক্তব্য রাখছেন ৷ আর কেউ মোবাইল ঘাঁটছেন ৷ গল্প করছেন ৷'' চেয়ারপার্সনের ফের বলেন, ''যাঁরা এখানে বলেন তাঁরা পড়াশোনা করে আসেন ৷ মন দিয়ে যদি সেই বক্তব্য না শোনেন, আপনারা হাউজে আসেন কেন ''
এত কিছু বলার পরেও এদিন অনেক কাউন্সিলরকে টেবিলের নীচে লুকিয়ে মোবাইল ঘাটতে দেখা যায় ৷ কেউ আবার মধ্যাহ্নভোজ সেরে এসি'র হাওয়ায় ঘুমিয়ে পড়েন অধিবেশন কক্ষেই ৷ তাঁদের ফের কর্মীদের দিয়ে ডেকে তোলা হয় ৷ উল্লেখ্য, কাউন্সিলরদের খামখেয়ালি মনোভাবের জেরে উপস্থিত থাকা নিয়ে তৃণমূল কাউন্সিলরদের মুখ্য সচেতক বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত হুইপ জারি করেছিলেন ৷ এবার অধিবেশনে কাউন্সিলরদের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ৷