কলকাতা, 11 জানুয়ারি: যিনি রাঁধেন তিনি চুলও বাঁধেন । এক্ষেত্রে অবশ্য তিনি রাঁধেন না, একাংশের মতে স্বপ্ন বোনেন । জীবনের পথে যাঁরা সুবিচার না-পেয়ে দিশা হারিয়েছেন তাঁদের বিচার দেন । তাঁর কলমের আঁচড়ে বদলে যায় রাজ্য-রাজনীতির ছবিটাও । যদিও তিনি নিন্দুক মুক্তও নন। রোজকার নিয়মে কটাক্ষ ধেয়ে আসে তাঁর দিকে । বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রতিদিনই খবরের শিরোনামে থাকেন । এবার অবশ্য কঠিন-কঠোর কালো কোট নয়, মোলায়েম সুরে কবিতার ছন্দ মেলাবেন এই 'স্বপ্নের কান্ডারি' (পড়ুন চাকরিপ্রার্থীদের) । বইমেলায় প্রকাশিত হবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা কবিতার বই ।
এমনিতেই আইনের রুক্ষ মাটিতেই তিনি স্বচ্ছন্দ, এমনটাই জানে প্রত্যেকে । দিনভর আইনের ভাষাতেই ডুবে থাকেন । তাঁর দেওয়া একের পর এক রায় রাস্তায় বসে আন্দোলন করা চাকরিপ্রার্থীদের মনে ভরসা জুগিয়েছে । যে এজলাসে বসে একের পর এক রায়ে তোলপাড় করেছেন, সেখান থেকেই জানালেন নয়া ভূমিকার কথা । অবশ্য তিনি যে বাংলা সাহিত্যের অনুরাগী, তা আগে আদালত কক্ষে বহুবার বলেছেন । এবার সেই এজলাসে বসেই বাংলা ভাষাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বার্তা দিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ।
তিনি বলেন, "বাংলা ভাষায় শুনানিতে আপত্তি কেন ? আমাদের মাতৃভাষায় কথা বলতে অসুবিধা কীসের ? যে কেউ আমার কাছে বাংলায় মামলা করলে আমি তা গ্রহণ করি । এতে অন্যদের আপত্তি থাকার কথা নয় । সামনের বইমেলায় বাংলাভাষাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বেশ কিছু উপযুক্ত বই বেরচ্ছে । আমি নিজেও সেখানে একটি কবিতার বই লিখেছি । ইংরেজরা ভাষাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আদালত-সহ বিভিন্ন জায়গায় ইংরেজি ভাষার প্রচলন করেছিল । তাহলে আমরা বাংলা ভাষাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এই প্রচেষ্টা চালাব না কেন ?"
এর আগে কখনও আরজি কর হাসপাতালে দুর্ঘটনায় পড়া পড়ুয়াকে হটাৎ করে দেখতে চলে গিয়েছেন । কখনও বাবা-মা'হারা ছেলেকে পড়াশোনার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য এগিয়ে এসেছেন । আবার আদালতে নিয়োগ দূর্নীতিতে একের পর এক সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন । তার ফলে রাজ্যে শিক্ষাক্ষেত্রে যে বিপুল দূর্নীতি হয়েছে সেকথা দিনের আলো দেখেছে । কিছু মানুষ তাঁর এই কাজে ক্ষুব্ধ বটে কিন্তু সাধারণ মানুষ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে কার্যত ভগবানের চোখেই দেখেন । যদিও বিচারপতি নিজে অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে বলেন, "আমি ভগবান নই । আমার করার ক্ষমতা আছে তাই করতে পারছি । যাঁদের হাতে এই শক্তি আছে তাঁদের সকলেই এই ভূমিকা পালন করতে পারেন ।"
- " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data="">
আরও পড়ুন: