কলকাতা, 8 জানুয়ারি: রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের মধ্যে একে অন্যের মন্তব্যের জবাব দিতে হামেশাই দেখা যায় ৷ কিন্তু, একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মন্তব্যের জবাব দিচ্ছেন হাইকোর্টের বিচারপতি! এমন ঘটনা বিরল ৷ সোমবার একটি মামলার শুনানি চলাকালীন এমনটাই করতে দেখা গেল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে ৷ তাঁকে নিয়ে বিভিন্ন সময়ে কুণাল ঘোষের করা মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিতে শোনা গেল বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে ৷ তবে, কুণাল ঘোষের মতো তীব্র আক্রমণ নয় ৷ বরং, নম্রভাবে জানালেন, "ওনার সঙ্গে আমার এখন বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ৷" বিচারপতির বক্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিলেন কুণাল ঘোষও ।
সোমবার একটি মামলার শুনানির মাঝেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "কুণাল ঘোষের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো ৷ অনেক কথা হয়েছে ৷ উনি একদিন আমার চেম্বারে এসেছিলেন ৷ কথা বলে ভালো লেগেছে ৷ ওনার সঙ্গে আমার এখন বন্ধুত্বের সম্পর্ক ৷ ওনার উপন্যাসের কয়েকটা বই দিয়েছেন ৷ আমি পড়ছি, ভালোই লিখেছেন ৷" কিন্তু, গতকাল পর্যন্ত কুণালের তাঁকে নিয়ে করা মন্তব্যে, কোথাও সেই সুসম্পর্কের ছোঁয়া দেখা যায়নি ৷ বরং, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে নন্দীগ্রামের ভাঙাবেড়া থেকে "জাস্টিস 'কমরেড' অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়" বলে উল্লেখ করেছেন কুণাল ৷
বিচারপতি রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত, এই অভিযোগে কুণাল বলেছিলেন, "জাস্টিস কমরেড অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এক্সপোসড হয়ে বারবার তাঁর রাজনৈতিক উইশলিস্ট প্রকাশ করে ফেলছেন ৷ প্রধান বিচারপতির উচিৎ একটা ক্রেন পাঠিয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে ব্রিগেডের মঞ্চে ছেড়ে আসা ৷ কারণ, তিনি আদ্যন্ত সিপিএম ৷" এটা প্রথম নয়, সন্দেশখালিতে ইডি ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপর প্রাণঘাতী হামলার ঘটনায় বিচারপতির মন্তব্যকে, রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত বলে অভিযোগ করেছিলেন কুণাল ৷
তারপরেও কুণাল ঘোষের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভালো বলে উল্লেখ করছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়! যা নিয়ে তিনি বলেন, "এরপরেও উনি আমায় গালাগালি করেন ৷ তাতে অসুবিধা নেই ৷ উনি ওনার জায়গা থেকে ওনার কথা বলেন ৷ কালকেও বলেছেন, আমায় টুল নিয়ে হাইকোর্টের গেটের বাইরে বসতে ৷ তাতে আমি কিছুই মনে করিনি ৷ আমার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ৷"
বিচারপতির বক্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন কুণালও । তিনি বলেন, "উনি (বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়) খুব ভুল বলেননি।এক অনুষ্ঠানে গিয়ে বিচারপতির সঙ্গে দেখা হয়েছিল। সেই সময় আমার প্রশংসাও করেছিলেন বিচারপতি। এরপর একবার হাইকোর্টে গিয়ে বিচারপতির ঘরে বসে আড্ডা দিয়েছিলাম। আমার আড্ডা মারতে ভালই লেগেছিল। তবে উনি যদি আমার দল ও দলের নেত্রীকে আক্রমণ করেন, তাহলে পাল্টা সমালোচনা করাটা আমার কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।"
অন্যদিকে, তৃণমূল সাংসদ তথা আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কেও বলতে শোনা যায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে। তিনি বলেন, "কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও আমায় পদত্যাগ করতে বলেছেন ৷ ভেবেছিলাম আজ হয়তো সকালে এসে বলবেন, 'তুমি পদত্যাগ করো' ৷ তবে, উনিও আমায় খুব ভালবাসেন ৷ আমিও ওঁকে খুব শ্রদ্ধা করি ৷ এর বেশি কিছু বলব না ৷"
আরও পড়ুন: