কলকাতা, 8 জুলাই: শেষ হয়েছে রাজ্য়ের পঞ্চায়েত নির্বাচন। আর ভোট মিটতেই পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে বিজেপি। এর মধ্যেই বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে পর পর ফোন করেন বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা এবং অমিত শাহ। কেমন হয়েছে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট তা সুকান্ত মজুমদারের কাছ থেকে জানতে চাওয়ার পর লিখিত আকারেও রিপোর্ট চেয়ে পাঠান অমিত শাহ।
শনিবার রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে একাধিক জেলা । ভোটের বলি হয়েছেন 16 জুন (সন্ধে 8টা পর্যন্ত)। কোচবিহারে তাদের দলের দু'জন কর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপির । একজন বিজেপি এজেন্টের মৃত্যু হয়েছে বলেও অভিযোগ পদ্ম শিবিরের। এসবের মাঝেই ফোন করে গোটা দিনের খবর নিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে ক্রমেই সন্ত্রাসের ছবি দেখা গিয়েছে বিভিন্ন জেলায়। বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়েছে এই নির্বাচনের মনোনয়নের প্রথম দিন থেকে মৃত্যু হয়েছে প্রায় 38 জনের। আর শুধু মাত্র নির্বাচনের দিন যাদের মৃত্যু হয়েছে তার মধ্যে 9 জন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। এছাড়াও প্রায় এক হাজার 759 জন বিজেপি কর্মী আহত। তাও এদিন নাড্ডা এবং শাহকে সুকান্ত জানিয়েছেন বলে খবর।
এদিন মানুষের মৃত্যুর পাশাপাশি ভোট দিতে না-দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। বুথ দখল, ব্যালট বক্সে জল ঢেলে দেওয়ার মতো একাধিক অভিযোগও উঠেছে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। আবার বেশ কিছু বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী উপস্থিত ছিল না বলেও দাবি করা হয়েছে। বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠে এসেছে বেশ কিছু জায়গায় বিজেপি কর্মীদের অপহরণ করা হয়েছে। সারাদিন জুড়েই বহু অশান্তির ছবি দেখা গিয়েছে। এই সব ঘটনার জেরে বিরোধী দলনেতা রাজীবা সিনহাক ফোন করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এমনকী তিনি রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরেও সন্ধ্যায় আসেন।
বিজেপি সূত্রে খবর, অমিত শাহের অফিস থেকে রিপোর্ট চাওয়া হলে এই সমস্ত কিছুই জানিয়েছেন সুকান্ত। নির্বাচনের জেরে বাংলার পরিস্থিতি কী ছিল তা জানাতে বলা হয়েছিল ওই লিখিত রিপোর্টে। এছাড়াও জেপি নাড্ডা ফোন করে কী পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাও জানাতে চাওয়া হয়। এই রিপোর্ট দেখে রাজ্যে নয়া কোনও সমীকরণ তৈরি করতে চলেছে বিজেপি, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে ।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় বাহিনী কোথায় মোতায়েন, জানলেনই না নোডাল অফিসার; কমিশনকে কড়া চিঠি
অন্যদিকে, 90 শতাংশ জায়গায় কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল না বলেও জানান সুকান্ত । এদিন বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "আমাদের এজেন্টকে পিটিয়ে মারা হয়েছে, অনেক প্রার্থী আহত। গিতালদহে বিজেপি কর্মী গুলিবিদ্ধ, ভাঙড়ে দু'জন শিশু আহত। সন্দেশখালিতে চার জন এবং হাসনাবাদে একজন বিজেপি প্রার্থী অপহৃত হয়েছেন। কোচবিহারে মন্ত্রী নিজে সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণ করছেন। রাজ্যপাল ঘুরছেন হয়তো আত্মগ্লানি থেকে। কাল রাতেই সব জায়গায় ভোট হয়ে গেছে। বেশ কিছু জায়গায় নীরবে ছাপ্পা পড়েছে।"