কলকাতা, 3 ডিসেম্বর: বিশ্ব দিব্যাংগ দিবসে বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিবর্গ ও তাঁদের শুভানুধ্যায়ীদের বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়ে গেল কলকাতার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে। 100 দিনের কাজ-সহ একাধিক দাবি নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের বিশেষভাবে সক্ষম মানুষেরা ভিড় জমিয়েছিলেন এদিনের সমাবেশে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর সাধারণ সম্পাদক তথা সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এই সমাবেশ এবার পা দিল 30 বছরে ৷
সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "আমাদের মূলত তিনটি দাবি। প্রথম ইউপিএ সরকারের সময় ঘোষিত কমন মিনিমাম প্রোগ্রাম কর্মসূচির সিদ্ধান্ত মোতাবেক 100 দিনের কাজে বিশেষভাবে সক্ষম মানুষদের যুক্ত করতে হবে ৷ কম করে 200 দিন কাজের গ্যারান্টি সাধারণ দারিদ্র্য সীমার নীচে থাকা মানুষদের দিতে হবে। তামিলনাড়ু, তেলেঙ্গানার মতো বেশ কয়েকটি রাজ্য সরকার এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও পশ্চিমবঙ্গ সরকার কোনও রকম সদিচ্ছা দেখাচ্ছে না। প্রতিবন্ধী অধিকার আইন 2016 এবং মনরেগা আইন 2005 মেনে আগামী এক মাসের মধ্যে বিশেষভাবে সক্ষমদের 100 দিনের কাজে যুক্ত না-করা হলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হব আমরা।"
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এদিন সমাবেশে জানান, প্রতিবন্ধকতা যুক্ত মানুষজনও এই সমাজের অঙ্গ। তাঁদের ব্রাত্য করে রাখাটা ঠিক নয়। সঠিক সুযোগ-সুবিধা পেলে তাঁরাও সামাজিক ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। বিশ্বে এমন অজস্র নজির রয়েছে।
আইনজীবী ও সাংসদ বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য এদিন সমাবেশে বলেন, "রাজ্যের বর্তমান শাসকদল কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে মেলা, খেলা, উৎসব করেন ৷ অথচ শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে যে মানুষগুলো বেঁচে থাকার লড়াই নিত্যদিন চালিয়ে যাচ্ছেন, তাঁদের জন্য নূন্যতম সুরাহার বন্দোবস্ত করে না। সরকারের কাজ মানুষের নূন্যতম অধিকার রক্ষা করা। কিন্তু এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই কাজ করছেন না। ভোট রাজনীতির ফায়দা তুলতে যদিও কিছু প্রকল্প-ভাতার আয়োজন করা হয়, তা নিয়ে বিজ্ঞাপন ও প্রচারেই বিপুল খরচ করা হচ্ছে।" এরপর তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাতার, প্রকল্পের বড়াই করছেন সেটা তো নাগরিকদের অধিকার। সেটা নিয়ে ব্যক্তি প্রচারের রমরমা কেন?"
এই তিন দাবির বাইরেও একাধিক দাবির কথা জানান বিশেষভাবে সক্ষমরা ৷ তাদের দাবি, "বিশেষভাবে সক্ষম মানুষদের কাজ অথবা ভাতার ব্যবস্থা করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী সমস্ত বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের বিপিএল তালিকাভুক্ত করতে হবে। আইন মেনে বিশেষভাবে সক্ষম নারী ও শিশুদের জন্য বিশেষ সামাজিক সুরক্ষার ব্যবস্থা কার্যকর করতে হবে।" উল্লেখ্য, এই সমাবেশ থেকে বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের ও এবং প্রতিবন্ধী পুনর্বাসনে জীবন উৎসর্গ করেছেন এরকম কয়েকজন সমাজকর্মীকেও বিশেষ সম্মানে সম্মানিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন
1. রাস্তার রং সবুজ-মেরুন, শিলিগুড়ির পর দুর্গাপুরে মোহনবাগান অ্যাভিনিউ
2. 'শঙ্কা' সরিয়ে সুড়ঙ্গের কাজেই ফিরতে চান, বাড়ি ফিরেই জানালেন জয়দেব ও সৌভিক
3. একের পর এক সদ্যোজাতর মৃত্যু! জেলা স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে বন্ধ বেসরকারি নার্সিংহোম