কলকাতা, 26 এপ্রিল : পান বা গুটখার পিকে ঐতিহ্যবাহী হাওড়া ব্রিজের পিলার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া নিয়ে বিতর্ক চলে আসছে বছরের পর বছর ধরে (Howrah Bridge Damaging day by day in spitting) । সেই বিতর্কের অবসান ঘটাতে কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ হাওড়া সেতুর প্রতিটি পিলার নিচ থেকে 6 ফুট পর্যন্ত ঘিরে ফেলেছে । কেউ যদি পান বা গুটখা খেয়ে পিক ফেলেন, তাহলে আর সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে না হাওড়া সেতুর পিলার ।
শুধু তাই নয় সেতু ধরে কলকাতার দিক থেকে হাওড়া স্টেশনের দিকে হেঁটে চললে দেখা যাবে ব্রিজের উপরে হলুদ বোর্ডে কালো কালি দিয়ে একাধিক আবেদনমূলক কথা লেখা রয়েছে । যেমন, এই সেতু সারা ভারতে শুধু নয় বিশ্বে দ্বিতীয় আর নেই, তার উল্লেখ রয়েছে । এমন ঝুলন্ত সেতুকে নাগরিক বা পথচলতি মানুষকে রক্ষা করার আহ্বান জানানো হয়েছে । আবার কোথাও লেখা দুই পারকে মিলিয়ে এই সেতু, দু’পারের সৌন্দর্যরক্ষার দায় আপনার, আমার ।
প্রতিটি পিলারকে পানের পিক থেকে রক্ষা করতে যে বিশেষ ঢাকনা লাগানো হয়েছে তার উপরে থুথু, পিক না ফেলার আবেদনও রয়েছে । কিন্তু কে সেই আবেদন শুনবে ? না শুনলেই বা কে পদক্ষেপ নেবে ? হাওড়া সেতুতে উঠলেই পথচারীদের দু’ধারে হাঁটা পথে দু’পা এগোলে বোঝা যাবে মানুষের হুঁশ ফেরেনি বিন্দুমাত্র । ঐতিহ্যবাহী রবীন্দ্র সেতুর পিলার রক্ষা করতে যে টিন বা মোটা আস্তরণ দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে, দু’দিকের মূল বড় বড় পিলার-সহ সব ক’টি পিলার তার উপরেই যথেচ্ছ পানের বা গুটখার পিক ফেলেছে মানুষ ।
আর তার জেরে ক্রমশ ক্ষয়ে যাচ্ছে সেই মোটা আস্তরণ । দু’দিকে সিসিটিভি বা পুলিশ থাকলেও এবিষয় পুলিশ প্রশাসন কারও নজরদারি নেই বিন্দুমাত্র । তাই সেতুর উপর দু’দিকে যেখানে হেঁটে চলাচল করেন মানুষ, গঙ্গার ধার লাগোয়া লোহার রেলিং ভর্তি পিক । কোথাও কোথাও পিকের মোটা স্তর পড়েছে । কোথায় অল্পবিস্তর লোহায় পিকের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ।
সম্প্রতি এক আইএএস আধিকারিক গুটখার বিজ্ঞাপন করা একাধিক অভিনেতাকে কটাক্ষ করে টুইট করেছেন এই রবীন্দ্র সেতুর পুরনো পান, গুটখার পিকের ফলে ক্ষতি হওয়া পিলারের ছবি দিয়ে । পোর্ট ট্রাস্টকেও কটাক্ষ করেছেন হাওড়া ব্রিজের নিচের দিকে লাল রং করা নিয়ে । তিনি টুইটে দাবি করেন, পিক ফেললে বোঝা যাতে না যায়, তাই এই লাল রং করা হয়েছে । আর এই টুইট নিয়ে নেট-নাগরিকদের মধ্যে যখন বিতর্ক, তখন ইটিভি ভারত তুলে আনল হাওড়া সেতুর বর্তমান চিত্র ।
কলকাতা বন্দরের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই সমস্যার নিষ্পত্তি 2014 সালেই হয়ে গিয়েছে । পান, গুটখার পিকের হাত থেকে পিলার বাঁচাতে ক্যাপিং সিস্টেম করে দেওয়া হয় । 2021 সালে সেটিকে আবার পরিবর্তন করা হয়েছে । গুটকা বা পানের পিক থেকে ব্রিজকে অনেক আগেই সুরক্ষিত করা হয়েছে ।
আরও পড়ুন : Meeting Over Early Summer Vacation : আগাম গরমের ছুটি, নাকি সাময়িকভাবে বন্ধ হবে স্কুল ? বিকাশ ভবনে জরুরি বৈঠক