কলকাতা, 1 জুলাই: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে এই পরিস্থিতিতে এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবে না হাইকোর্ট, বৃহস্পতিবার এক নির্দেশে এমনই জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ (HC on CU Exam)।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা অনলাইনে নেওয়ার দাবিতে একের পর এক মামলা দায়ের হয়েছিল হাইকোর্টে । পরীক্ষা অফলাইনে না করে অনলাইনে নেওয়ার দাবিতে প্রথম মামলা দায়ের হয় বিচারপতি কৌশিক চন্দর বেঞ্চে । কিন্তু বিচারপতি সেই মামলা খারিজ করে দেন । পরে ফের একাধিক জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয় । মামলাকারীদের মূল বক্তব্য ছিল, সিলেবাস শেষ না করে পরীক্ষা কেন নেওয়া হচ্ছে? প্রয়োজনে ছাত্র-ছাত্রীদের আরও সময় দেওয়া হোক সিলেবাস শেষ করার, তারপর পরীক্ষা নেওয়া হোক ।
আরও পড়ুন : কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অফলাইন পরীক্ষার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা
মামলাকারী আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার বলেন, "করোনা পরিস্থিতিতে অত্যন্ত অল্প কয়েকদিন ক্লাস হয়েছে । প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস নেওয়া হয়নি । এই পরিস্থিতিতে এই রকম একটা নামি বিশ্ববিদ্যালয় কী-করে অফলাইনে পরীক্ষা নেয়? দেশের বহু বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে পরীক্ষা নিচ্ছে ।" আর এক মামলাকারীর তরফে আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় পরীক্ষার উপর স্থগিতাদেশের আর্জি জানান । তিনি বলেন, "যে পরিমাণ ক্লাস নেওয়ার কথা তা নেওয়া হয়নি । ফলে সিলেবাস শেষ হয়নি । তাই পরীক্ষা স্থগিত রাখা উচিত ।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে আইনজীবী অভ্রতোষ মজুমদার বলেন, "পরীক্ষা ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে । পরীক্ষার মাঝে মাঝে যথেষ্ট ফাঁকা দিন রেখে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে ।"
প্রধান বিচারপতি অবশ্য জানতে চেয়েছিলেন সিলেবাস শেষ না করেই পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে কি না এই বিষয়ে । উত্তরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী অভ্রতোষ মজুমদার জানান, কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী ছাড়া কেউ পরীক্ষায় আপত্তি জানায়নি । সবাই পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে । আর কোডিভ পরিস্থিতি মেনেই অনলাইনে পরীক্ষা নিতে হবে এটা কি ধরনের আর্জি ?
আরও পড়ুন : অনলাইনে না হলে পিছোতে হবে পরীক্ষা, দাবিতে অনড় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা
রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, "কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট 150টি কলেজ এবং প্রায় 45 লাখের বেশি ছাত্র-ছাত্রী । কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এখন দেশের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় । গোটা দেশের বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নেওয়া চলছে । এই পরিস্থিতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা বন্ধ রাখা মানে বিশ্ববিদ্যালয় পিছিয়ে যাবে । পাশাপাশি মাত্র 15 জন ছাত্র-ছাত্রী পরীক্ষায় আপত্তি জানিয়েছে । এইভাবে পরীক্ষা বন্ধ করা যায় না ।" সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর এদিন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ পরীক্ষায় কোনও রকম হস্তক্ষেপ আদালত করবে না বলে রায় দিয়েছে ।