কলকাতা, 21 ডিসেম্বর: লালন শেখ মৃত্যু মামলায় সিআইডি তদন্তেই ভরসা রাখল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ ৷ আদালত মনে করছে, কর্মরত কোনও বিচারপতিকে দিয়ে তদন্তের প্রয়োজন নেই ৷ তাই বিচার বিভাগীয় তদন্তের আবেদন খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট । বুধবার প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশে জানিয়েছে, সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ মতো রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডি এই মামলার তদন্ত করবে (CID to investigate Lalan Sheikh Death Case) ।
প্রসঙ্গত আজ বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর সিঙ্গল বেঞ্চে এই মামলার শুনানি রয়েছে ৷ সিআইডির প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট পেশ করার কথা ৷ লালন শেখ মৃত্যুর ঘটনায় সিআইডি বা সিবিআই- যে সংস্থাই তদন্ত করুক না কেন, তারা নিরপেক্ষ তদন্ত করবে না ৷ এই মর্মে নিরপেক্ষ বিচারবিভাগীয় তদন্তের আর্জিতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল ৷ সোমবার, 19 ডিসেম্বর সেই মামলার শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রেখেছিলেন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ ৷ আজ চূড়ান্ত নির্দেশ জানাল আদালত ৷
মামলাকারী পক্ষের আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, "বগটুইট হত্যাকাণ্ডের (21 মার্চ, 2022) ঘটনায় আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করেছিল ৷ আদালতই এই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়৷ এই ঘটনায় অন্যতম মূল অভিযুক্ত লালন শেখ ফেরার ছিলেন ৷ এরপর তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই ৷ সিবিআই হেফজতেই তাঁর মৃত্যু হয় ৷ তাঁর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর করা হয় ৷ সিবিআই ও সিআইডির মধ্যে লড়াই আগেও ছিল ৷ বর্তমানে সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ৷ বগটুইয়ের (Rampurhat Bagtui Massacre) ঘটনার পিছনে ষড়যন্ত্র ছিল ৷ মানবাধিকার কমিশন এখানে যথার্থ তদন্ত করতে পারে না ৷ তাই প্রকৃত ঘটনা অনুসন্ধান করতে নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্তের আর্জি জানাচ্ছি ৷"
আরও পড়ুন: সিবিআই হেফাজতে মৃত্যু বগটুইকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত লালন শেখের, আত্মহত্যা বলে দাবি কেন্দ্রীয় সংস্থার
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, 21 মার্চ বীরভূমে রামপুরহাটের বগটুই মোড়ে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন বড়শাল গ্রামপঞ্চায়েতের উপ-প্রধান ভাদু শেখ ৷ এর প্রতিবাদে সেই রাতে ভাদু শেখের অনুগামীরা কমপক্ষে 10টি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় ৷ এতে ঘটনাস্থলেই পুড়ে মারা গিয়েছেন একই পরিবারের 7জন-সহ 8 জন ৷ পরে আরও 2 জনের মৃত্যু হয় ৷ এতে ভাদু শেখের ছায়াসঙ্গী লালন শেখের নাম উঠে আসে ৷ দীর্ঘদিন নিরুদ্দেশ থাকার পর 3 ডিসেম্বর সিবিআই ঝাড়খণ্ডের পাকুড় থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে ৷ এরপর মহকুমা আদালত তাঁকে সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেয় ৷ সেখানে
রামপুরহাটে অস্থায়ী সিবিআই ক্যাম্পে ছিলেন লালন শেখ ৷ সেখানে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তাঁকে জেরা করছিল ৷ 12 ডিসেম্বর সকালে ক্যাম্পের শৌচালয় থেকে তাঁর মৃতদেহ পাওয়া যায় (Lalan Sheikh Death) ৷ তাঁর গলায় গামছার ফাঁস লাগানো ছিল ৷ সিবিআইয়ের দাবি, লালন শেখ আত্মহত্যা করেছে ৷ এদিকে লালন শেখের পরিবারের অভিযোগ সিবিআই তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করেছে ৷ এর তদন্তে মামলা রুজু হয় আদালতে ৷ ইতিমধ্যে নবান্নের নির্দেশে সিবিআই হেফাজতে কী ভাবে লালন শেখের মৃত্যু হল- তা নিয়ে তদন্ত করছে সিআইডি ৷
আরও পড়ুন: লালন-মৃত্যুতে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবিতে জনস্বার্থ মামলা, ডিভিশন বেঞ্চে স্থগিত রায়দান