কলকাতা, 19 জুলাই: বিমান বিভ্রাটের কারণ জানাতে কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের (Justice Prakash Shrivastava) ডিভিশন বেঞ্চ 19 সেপ্টেম্বরের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিমান কেন দুর্ঘটনার মুখে পড়েছিল, তা মুখ বন্ধ খামে কেন্দ্র সরকারকে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিল (Calcutta High Court directs Centre to explain air turbulence reason of CM Mamata Banerjee) ৷
এর আগে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে গাফিলতি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন আইনজীবী । সেই ভিত্তিতে কলকাতা হাইকোর্টে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার বিষয়টি অত্যন্ত গোপনীয় বিষয় । আদালত চাইলে গোপন খামেই তা জানানো যেতে পারে । প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ দু'মাস সময় দিয়েছে কেন্দ্রকে ৷
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এ বছর 4 মার্চ উত্তরপ্রদেশের বারাণসী থেকে কলকাতা ফেরার পথে দুর্ঘটনার মুখে পড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিমান । তিনি অল্পের জন্য বেঁচে যান ৷ তবে পিঠে আঘাত পান তৃণমূল সুপ্রিমো । মুখ্যমন্ত্রীর সফরের জন্য একটি বেসরকারি সংস্থার বিমান ভাড়া নিয়েছিল রাজ্য সরকার ৷ 4 মার্চ বিকেলে কলকাতা বিমানবন্দরে নামার আগে হঠাৎ প্রবল ঝাঁকুনি শুরু হয় বিমানটিতে ।
আরও পড়ুন: মাঝ আকাশে মুখ্যমন্ত্রীর বিমানে এয়ার টার্বুলেন্স, কোনও ষড়যন্ত্র নেই জানাল কেন্দ্র
বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, বেলা 3.10 মিনিট নাগাদ বিমানটি কলকাতা থেকে প্রায় 50 কিমি উত্তরপূর্বে ছিল এবং অবতরণের চেষ্টা করছিল ৷ সেই সময় প্রবল ঝাঁকুনি শুরু হয় । যাকে এয়ার টার্বুলেন্স বলে ৷ বিমানের পাইলট এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের (ATC) সঙ্গে যোগাযোগ করেন ৷ তাঁকে 7 হাজার ফুট থেকে 2 হাজার ফুট নিচে আসার পরামর্শ দেয় এটিসি ৷ সেই নির্দেশ মানতে গিয়ে বিমানচালক বিমানটিকে আচমকা নিচে নামিয়ে আনেন এবং পরিস্থিতি সামাল দেন ।
নবান্নের তরফে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়াকে চিঠি লিখে জানতে চেয়েছেন, বারাণসী থেকে ফেরার পথে ঠিক কী হয়েছিল ? তদন্তের নির্দেশ দেয় নবান্ন । পরে 7 মার্চ বিধানসভায় ঢোকার মুখে মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee news) জানান মাত্র 10 সেকেন্ড পর নিচে নামলেই তাঁর বিমান দুর্ঘটনার মুখে পড়তে পারত । তিনি আরও জানান, কোনও এয়ার পকেট নয়, বরং বিমান কাছাকাছি চলে আসাতেই এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন পাইলট ।
26 এপ্রিল কেন্দ্রীয় সরকার কলকাতা হাইকোর্টে জানায় মুখ্যমন্ত্রীর বিমান বিভ্রাটে কোনও চক্রান্ত খুঁজে পায়নি তারা । আদালত অবশ্য কেন্দ্রকে এ বিষয়ে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় । উত্তরপ্রদেশ থেকে ফেরার পথে মুখ্যমন্ত্রীর বিমান বিভ্রাট নিয়ে আইনজীবী বিপ্লব রায়চৌধুরী একটি জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন হাইকোর্টে । মামলায় তিনি 2016 সালেও মুখ্যমন্ত্রীর বিমান দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন । যদিও সেই ঘটনার কোনও তদন্ত করা হয়নি ।
আরও পড়ুন: আচমকা 2 হাজার ফুট নিচে মুখ্যমন্ত্রীর বিমান, পিঠে আঘাত পেলেন