কলকাতা, 5 ডিসেম্বর: প্রশাসক নয়, পৌরসভার দ্বায়িত্ব সামলাবেন জেলাশাসক। নির্দেশ আদালতের । রাজ্যের 2 ডিসেম্বরের নির্দেশিকায় অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করে এমনটাই জানালেন বিচারপতি (HC on Jhalda Municipality) । নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচনের দিন ধার্য করার দ্বায়িত্ব ভাইস চেয়ারম্যানের। সাত দিনের মধ্যে ভাইস চেয়ারম্যানকে এই কাজ করার কথাও বলা হয়েছে।
কিন্তু 3 ডিসেম্বর চেয়ারম্যান নির্বাচনের বিশেষ সভা গ্রহণ করার আগেই রাজ্য প্রশাসক বসাবার সিদ্ধান্ত নেয়। ভাইস চেয়ারম্যানের (Vice Chairman) পদত্যাগপত্র গৃহীত হল কি না সে বিষয়েও 2 ডিসেম্বরের নির্দেশিকায় কোনও উল্লেখ নেই। এমনই জানান বিচারপতি। পাশাপাশি সব পক্ষের বক্তব্য হলফনামা দিয়ে জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । 5 জানুয়ারি পর্যন্ত বহাল থাকবে এই অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ (Interim Stay Order)। আগামী 3 জানুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
ঝালদা পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু কার কাছে তিনি পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন ? মামলা চলাকালীন রাজ্য সরকারকে এমনই প্রশ্ন করেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। উত্তরে সরকারি আইনজীবী জানিয়েছেন, তিনি পদত্যাগ করেছেন, কিন্তু কার কাছে সেটা জানা নেই ৷
পালটা চেয়ারম্যান পদত্যাগ করলে ভাইস চেয়ারম্যানকেই চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করতে হয়, সেক্ষেত্রে তিনিই চেয়ারম্যান । তিনি পদত্যাগপত্র দেবেন কাকে ? এই প্রশ্ন করেছেন বিরোধী পক্ষের আইনজীবী।
আরও পড়ুন: 'নির্বাচিত সরকারই গণতন্ত্র মানছে না', ঝালদার ঝামেলা মেটাতে ফের রাজ্যপালকে চিঠি অধীরের
28 নভেম্বর পদত্যাগ করেন ভাইস চেয়ারম্যান । রাজ্য সরকার কীভাবে এই প্রক্রিয়ার মধ্যে হস্তক্ষেপ করে, ফের প্রশ্ন বিচারপতির । উত্তরে সরকারি আইনজীবী জানান, সরকার দেখেছে যে শূন্যপদ রয়েছে, তাই হস্তক্ষেপ করেছে। তাই প্রশাসক ইতিমধ্যেই দায়িত্ব নিয়েছেন । ভাইস চেয়ারম্যানের তরফের আইনজীবী সুমন সেনগুপ্ত বলেন, "28 নভেম্বর মহকুমা শাসকের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি । 29 নভেম্বর আমার পদত্যাগ গৃহীত হয়েছে বলে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন মহকুমা শাসক ।
অন্য়দিকে, মামলাকারি দাবি চেয়ারম্যান পদত্যাগ করলে সাত দিনের মধ্যে ভাইস চেয়ারম্যানকে বিশেষ সভা ডাকতে হয় । নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচনের জন্যই এই বিশেষ সভা ডাকা হয় । তিনি না-ডাকলে যে কোনও তিন জন কাউন্সিলর এই বিশেষ সভা ডাকতে পারেন । 21 নভেম্বর আস্থাভোটের মাধ্যমে চেয়ারম্যানকে অপসারণ করেছেন কংগ্রেস কাউন্সিলররা । ভাইস চেয়ারম্যান পদক্ষেপ না-করায়, 29 নভেম্বর তিন বিরোধী (কংগ্রেস) কাউন্সিলর চেয়ারম্যান নির্বাচনের সভা ডাকেন । 3 ডিসেম্বর ছিল চেয়ারম্যান নির্বাচনের দিন । তার আগেই প্রশাসক বসবার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার । সরকারের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে আসেন কংগ্রেস কাউন্সিলর শীলা চট্টোপাধ্যায় । সেই মামলায় এই নির্দেশ।
আরও পড়ুন: 21 নভেম্বরই ঝালদা পৌরসভায় আস্থাভোট, নির্দেশ
এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে নিহত কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু বলেন, "উচ্চ আদালতের এই রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি । আমরা পরবর্তী শুনানিতে মহামান্য আদালতের কাছে আবেদন করব যে, আমরা যাঁকে পৌরপ্রধান নির্বাচিত করেছি তাঁকে যেন দায়িত্বভার দেওয়া হয়।" এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া নিতে তৃণমূল কংগ্রেসের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়াকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, "যেহেতু পৌরসভায় পৌরপ্রধান না-থাকায় একটি শুন্যতা তৈরি হয়েছিল তাই সরকার ওখানে চেয়ারম্যান নিয়োগ করে ৷ যাতে মানুষ পরিষেবা থেকে বঞ্চিত না-হয়। কিন্তু কংগ্রেস একটি অস্থিরতা তৈরি করতে চাইছে।" যদিও আদালতের রায় শিরোধার্য বলে জানিয়েছেন সৌমেনবাবু।