ETV Bharat / state

ঐতিহাসিক জেল তুলে দিয়ে গ্রিন সিটি ! পরামর্শদাতা নিয়োগ করল প্রশাসক

তবে বিতর্ক এড়াতে হেরিটেজ অংশগুলি সংরক্ষণের চিন্তাভাবনা ইতিমধ্যেই করে ফেলেছে প্রশাসন । অর্থাৎ নেতাজি, দেশবন্ধু, জওহরলাল নেহরু দের ব্যবহার করা কুঠুরি সংরক্ষণ করা হবে । এমনকি পুরোনো গাছগুলির সংরক্ষণেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ।

Green city project at alipur, Kolkata
আলিপুর জেল
author img

By

Published : Dec 11, 2019, 6:16 PM IST

কলকাতা, 11 ডিসেম্বর : ঐতিহাসিক আলিপুর জেল ৷ কথাই সার ৷ হতে চলল প্রায় নয় মাস, জেল এখন বন্দীশূন্য ৷ একটু একটু করে খালি হচ্ছে প্রেসিডেন্সি জেলও ৷ দুই জেলের কয়েদিদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অন্য সংশোধনাগারে ৷ মূলত বারুইপুরে ৷ সেখানে তৈরি হয়েছে নতুন সংশোধনাগার । আলিপুর প্রেসিডেন্সি জেলের জমিতে হবে প্রোমোটিং ! থুরি গ্রিন সিটি । ইতিহাস সেখানে গা ভাসাবে গড্ডালিকা প্রবাহে । সেই লক্ষ্যে ওই দুই জেলের 100 একর জমির জন্য প্রশাসক বসানো হল রাজ্য সরকারের তরফে । গতকাল জারি হয়েছে সেই বিজ্ঞপ্তি । পৌর ও নগর উন্নয়নমন্ত্রী জানাচ্ছে, প্রকল্প শুধু মুখ্যমন্ত্রীর সম্মতির অপেক্ষা । মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য সম্মতি দিয়েছেন বহু আগেই । এখন বিষয়টা সরকারি হওয়ার পর্যায়ে ।

1906 সাল । আদি গঙ্গার ধারে তৈরি হয় ইতিহাস । তৈরি হয় 21 ফুট পাঁচিল, আলিপুর জেল । স্বাধীনতা সংগ্রামীদের গ্রেপ্তার করে রাখা হতে থাকে সেখানে । কে ছিলেন না সেখানে । নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, জওহরলাল নেহরু, যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত , অনন্তহরি মিত্র, প্রমথ রঞ্জন চৌধুরি , দীনেশ গুপ্ত, বিধানচন্দ্র রায়, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস আরও অনেকে । স্বাধীনতার পর এই জেলে তৈরি হয় নেহরু ভবন, নেতাজি ভবন । স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসকে ভাস্বর করে রাখতে এখানে বসেছে দেশবন্ধু, যতীন্দ্রমোহন, নেতাজিদের মুর্তি ও ফলক । সংরক্ষিত রয়েছে দেশবন্ধু বিধানচন্দ্র রায়কে গ্রেপ্তার করে রাখা অন্ধ কুঠুরি । চিহ্নিত রয়েছে অনন্তহরি, প্রমথ, দীনেশদের ফাঁসিকাঠ । জেলের প্রতি পদে রয়েছে ইতিহাস আর স্বাধীনতা সংগ্রামের না বলা কথা । এই জেলের অন্দরমহলে কান পাতলে শোনা যায় "বন্দেমাতরম" ।

জেলের জমিতে প্রোমোটিং নিয়ে অবশ্য সতর্ক রাজ্য । এ যে সরকারি প্রকল্প । EENADU বাংলা করেছিল প্রথম খবর । জেলের জমিতে হবে প্রোমোটিং । জেল মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস তখন এডিটরকে ফোন করে আশ্বাস দিয়েছিলেন হবে না প্রোমোটিং । যদিও সূত্রের খবর ছিল, জেলের জমিতে হতে চলেছে প্রোমোটিং । জমি বিক্রির ভাগ দেওয়া হয়েছিল কলকাতা কর্পোরেশনকে । ঠিক হয়, ফ্ল্যাটে ভাগ করে বিক্রি হবে জমি ।

নবান্ন সূত্রে খবর, সেই বিষয়েই দেখভালের জন্য আজ নিয়োগ করা হল প্রশাসক । পৌর ও নগর উন্নয়ন দপ্তর সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর সবুজ সংকেত পেলেই নেমে পড়া হবে কাজে । মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য গত বছরই বেসরকারিভাবে এই প্রকল্পে সবুজ সংকেত দিয়ে দিয়েছিলেন ।

তবে বিতর্ক এড়াতে হেরিটেজ অংশগুলি সংরক্ষণের চিন্তাভাবনা ইতিমধ্যেই করে ফেলেছে প্রশাসন । অর্থাৎ নেতাজি, দেশবন্ধু, জওহরলাল নেহরুদের ব্যবহার করা কুঠুরি সংরক্ষণ করা হবে । এমনকি পুরোনো গাছগুলিরও সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । তবু বিতর্ক থামছে কি ? APDR-এর রঞ্জিত সূর বললেন, "জেল থেকে না কি কেউ কেউ মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে উঁকিঝুঁকি দেয় । আবার জেল থাকার জন্য মোবাইল টাওয়ারের জ‍্যামার লাগাতে হয় । তাতে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে আসা লোকজনের অসুবিধে হয় । তার বাড়ির পাশে জেল, এ আবার কেমন কথা ! আর সেই কারণেই মুছে দেওয়ার চেষ্টা চলছে ইতিহাস ।"

কলকাতা, 11 ডিসেম্বর : ঐতিহাসিক আলিপুর জেল ৷ কথাই সার ৷ হতে চলল প্রায় নয় মাস, জেল এখন বন্দীশূন্য ৷ একটু একটু করে খালি হচ্ছে প্রেসিডেন্সি জেলও ৷ দুই জেলের কয়েদিদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অন্য সংশোধনাগারে ৷ মূলত বারুইপুরে ৷ সেখানে তৈরি হয়েছে নতুন সংশোধনাগার । আলিপুর প্রেসিডেন্সি জেলের জমিতে হবে প্রোমোটিং ! থুরি গ্রিন সিটি । ইতিহাস সেখানে গা ভাসাবে গড্ডালিকা প্রবাহে । সেই লক্ষ্যে ওই দুই জেলের 100 একর জমির জন্য প্রশাসক বসানো হল রাজ্য সরকারের তরফে । গতকাল জারি হয়েছে সেই বিজ্ঞপ্তি । পৌর ও নগর উন্নয়নমন্ত্রী জানাচ্ছে, প্রকল্প শুধু মুখ্যমন্ত্রীর সম্মতির অপেক্ষা । মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য সম্মতি দিয়েছেন বহু আগেই । এখন বিষয়টা সরকারি হওয়ার পর্যায়ে ।

1906 সাল । আদি গঙ্গার ধারে তৈরি হয় ইতিহাস । তৈরি হয় 21 ফুট পাঁচিল, আলিপুর জেল । স্বাধীনতা সংগ্রামীদের গ্রেপ্তার করে রাখা হতে থাকে সেখানে । কে ছিলেন না সেখানে । নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, জওহরলাল নেহরু, যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত , অনন্তহরি মিত্র, প্রমথ রঞ্জন চৌধুরি , দীনেশ গুপ্ত, বিধানচন্দ্র রায়, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস আরও অনেকে । স্বাধীনতার পর এই জেলে তৈরি হয় নেহরু ভবন, নেতাজি ভবন । স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসকে ভাস্বর করে রাখতে এখানে বসেছে দেশবন্ধু, যতীন্দ্রমোহন, নেতাজিদের মুর্তি ও ফলক । সংরক্ষিত রয়েছে দেশবন্ধু বিধানচন্দ্র রায়কে গ্রেপ্তার করে রাখা অন্ধ কুঠুরি । চিহ্নিত রয়েছে অনন্তহরি, প্রমথ, দীনেশদের ফাঁসিকাঠ । জেলের প্রতি পদে রয়েছে ইতিহাস আর স্বাধীনতা সংগ্রামের না বলা কথা । এই জেলের অন্দরমহলে কান পাতলে শোনা যায় "বন্দেমাতরম" ।

জেলের জমিতে প্রোমোটিং নিয়ে অবশ্য সতর্ক রাজ্য । এ যে সরকারি প্রকল্প । EENADU বাংলা করেছিল প্রথম খবর । জেলের জমিতে হবে প্রোমোটিং । জেল মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস তখন এডিটরকে ফোন করে আশ্বাস দিয়েছিলেন হবে না প্রোমোটিং । যদিও সূত্রের খবর ছিল, জেলের জমিতে হতে চলেছে প্রোমোটিং । জমি বিক্রির ভাগ দেওয়া হয়েছিল কলকাতা কর্পোরেশনকে । ঠিক হয়, ফ্ল্যাটে ভাগ করে বিক্রি হবে জমি ।

নবান্ন সূত্রে খবর, সেই বিষয়েই দেখভালের জন্য আজ নিয়োগ করা হল প্রশাসক । পৌর ও নগর উন্নয়ন দপ্তর সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর সবুজ সংকেত পেলেই নেমে পড়া হবে কাজে । মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য গত বছরই বেসরকারিভাবে এই প্রকল্পে সবুজ সংকেত দিয়ে দিয়েছিলেন ।

তবে বিতর্ক এড়াতে হেরিটেজ অংশগুলি সংরক্ষণের চিন্তাভাবনা ইতিমধ্যেই করে ফেলেছে প্রশাসন । অর্থাৎ নেতাজি, দেশবন্ধু, জওহরলাল নেহরুদের ব্যবহার করা কুঠুরি সংরক্ষণ করা হবে । এমনকি পুরোনো গাছগুলিরও সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । তবু বিতর্ক থামছে কি ? APDR-এর রঞ্জিত সূর বললেন, "জেল থেকে না কি কেউ কেউ মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে উঁকিঝুঁকি দেয় । আবার জেল থাকার জন্য মোবাইল টাওয়ারের জ‍্যামার লাগাতে হয় । তাতে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে আসা লোকজনের অসুবিধে হয় । তার বাড়ির পাশে জেল, এ আবার কেমন কথা ! আর সেই কারণেই মুছে দেওয়ার চেষ্টা চলছে ইতিহাস ।"

Intro:কলকাতা, 11 ডিসেম্বর: ঐতিহাসিক আলিপুর জেল। কথাই সার। জেল এখন বন্দিশূন‍্য। হয়ে গেল ন'মাস। একটু একটু করে খালি হচ্ছে প্রেসিডেন্সি জেল। দুই জেলের কয়েদিদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অন্য সংশোধনাগারে। মূলত বারুইপুরে। সেখানে তৈরি হয়েছে নতুন সংশোধনাগার। আজ আলিপুর প্রেসিডেন্সি জমিতে হবে প্রমোটিং! থুরি গ্রীন সিটি। ইতিহাস সেখানে গা ভাসাবে গড্ডালিকা প্রবাহে। সেই লক্ষ্যে ওই দুই জেলের 100 একর জমির জন্য প্রশাসক বসালো রাজ্য সরকার। গতকাল জারি হয়েছে সেই বিজ্ঞপ্তি। পুর ও নগর উন্নয়নমন্ত্রী জানাচ্ছে, প্রকল্প শুধু মুখ্যমন্ত্রীর সম্মতির অপেক্ষা। মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য সম্মতি দিয়েছেন বহু আগেই। এখন বিষয়টা সরকারি হওয়ার পর্যায়ে।



Body:1906 সাল। আদি গঙ্গার ধারে তৈরি হয় ইতিহাস। তৈরি হয় 21 ফুট পাঁচিল। আলিপুর জেল। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের গ্রেপ্তার করে পোড়া হতে থাকে সেখানে। কে ছিলেন না সেখানে। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, জওহরলাল নেহেরু, যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত , অনন্তহরি মিত্র, প্রমথ রঞ্জন চৌধুরী , দীনেশ গুপ্ত, বিধানচন্দ্র রায়, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস সহ আরও অনেকে। স্বাধীনতার পর এই জেলে তৈরি হয় নেহেরু ভবন, নেতাজি ভবন। স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসকে ভাস্বর করে রাখতে এখানে বসেছে দেশবন্ধু, যতীন্দ্রমোহন, নেতাজিদের মুর্তি ও ফলক। সংরক্ষিত রয়েছে দেশবন্ধু বিধানচন্দ্র রায়ের গ্রেপ্তার করে রাখা অন্ধ কুঠুরি। চিহ্নিত রয়েছে অনন্তহরি, প্রমথ, দীনেশ দের ফাঁসি কাঠ। জেলের প্রতি পদে রয়েছে ইতিহাস আর স্বাধীনতা সংগ্রামের না বলা কথা। এই জেলের অন্দরমহলে কান পাতলে শোনা যায় "বন্দেমাতরম"।


Conclusion:জেলের জমিতে প্রমোটিং নিয়ে অবশ্য সতর্ক রাজ্য। এযে সরকারি প্রকল্প। ইনাডু বাংলা করেছিল প্রথম খবর। জেলের জমিতে হবে প্রমোটিং। জেল মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস তখন রেগে কাঁই। ফোন করেছিলেন এডিটরকে। আশ্বস্ত করেছিলেন হবে না প্রমোটিং। মিলে কাল ইনাডু বাংলার রিপোর্ট। জেলের জমিতে হতে চলেছে প্রমোটিং। জমি বিক্রির ভাগ দেওয়া হয়েছিল কলকাতা করপোরেশনকে। সূত্রের খবর ছিল তেমনটাই। সূত্র জানাচ্ছে, এক লোককে কলকাতায় 100 একর জমি কেনার জন্য প্রস্তুত নন কেউই। আর তাই ফ্ল্যাটে ভাগ করে বিক্রি হবে জমি। নবান্ন সূত্রে খবর এমনটাই। সেই বিষয়ে দেখভালের জন্য আজ নিয়োগ করা হলো প্রশাসক। পুর ও নগর উন্নয়ন দপ্তর সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর সবুজ সংকেত পেলেই নেমে পড়া হবে কাজে। মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য গত বছরই বেসরকারিভাবে এই প্রকল্পে সবুজসংকেত দিয়ে দিয়েছিলেন। করেছিলেন এই প্রকল্পের পক্ষে সাওয়াল।

তবে বিতর্ক এড়াতে হেরিটেজ অংশগুলি সংরক্ষণের চিন্তাভাবনা ইতিমধ্যেই করে ফেলেছে প্রশাসন। অর্থাৎ নেতাজি, দেশবন্ধু, জওহরলাল নেহেরু দের ব্যবহার করা কুঠুরি সংরক্ষণ করা হবে। এমনকি প্রাচীন গাছগুলিরও সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবু বিতর্ক থামছে কি? APDR এর রঞ্জিত সূর বললেন, “ জেল থেকে নাকি কেউ কেউ মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে উঁকিঝুঁকি মারে। আবার জেল থাকার জন্য মোবাইল টাওয়ারের জ‍্যামার লাগাতে হয়। তাতে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে আসা লোকজনের অসুবিধে হয়। তার বাড়ির পাশে জেল, এ আবার কেমন কথা! আর সেই কারণেই মুছে দেওয়ার চেষ্টা চলছে ইতিহাস।"
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.