কলকাতা, 16 অক্টোবর : ক্লাবগুলিকে রাজ্য সরকার দুর্গাপুজোয় যে 50 হাজার টাকা করে অনুদান দিয়েছে সেই টাকার 25 শতাংশ খরচ করতে হবে পুলিশ ও জনগণের সমন্বয়ের কাজে । বাকি 75 শতাংশ টাকা খরচ করতে হবে মাস্ক-স্যানিটাইজ়ার ও ফেস শিল্ড কেনার জন্য । অনুদানের টাকা যেন কোনওভাবেই অন্য খাতে খরচ করা না হয় । বিশেষ করে কোনও ধরনের বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানে যেন না ব্যবহার করা হয় । নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের । এর সমস্ত বিল প্রত্যেক জেলার SDO ও কলকাতা পুলিশের প্রতিনিধিদের কাছে পাঠাতে হবে । তাঁরা সমস্তটা খতিয়ে দেখে হাইকোর্টকে রিপোর্ট দেবেন । পাশাপাশি হাইকোর্টের এই নির্দেশের কপি লিফলেট আকারে সমস্ত ক্লাবগুলিকে দিতে হবে পুলিশকে ।
দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে মুখ্যমন্ত্রী 50 হাজার টাকা করে অনুদান দেবেন বলে ঘোষণা করার পর 9 অক্টোবর সৌরভ দত্ত নামে এক ব্যক্তি কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন । মামলাকারীর বক্তব্য ভারতের মতো ধর্মনিরপেক্ষ দেশে এইভাবে কোনও একটি ধর্মের নামে টাকা দেওয়া যায় না । এটি সংবিধান বিরোধী বলেও জানিয়েছেন মামলাকারী ।
আদালত পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, বিষয়টি যাতে বছরের পর বছর আদালত পর্যন্ত না গড়ায় সে দিক মাথায় রেখেই পুজোর ছুটির পর এই মামলার রায় দান করা হবে । কারণ 2018 সালেও কলকাতা হাইকোর্টে এই সংক্রান্ত মামলা হয়েছিল এবং সেই মামলা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছিল । যদিও সেই মামলায় কোনও সমাধানসূত্র মেলেনি ।
আরও পড়ুন : অন্য উৎসবেও কি অনুদান দেওয়া হয় ? রাজ্যকে প্রশ্ন কলকাতা হাইকোর্টের
গতকাল মামলার শুনানিতে বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিক প্রশ্ন ছুড়ে দেন রাজ্যের দিকে । তিনি জানতে চান, রাজ্য সরকার কি শুধু দুর্গাপুজোয় অনুদান দেয় ? নাকি অন্য উৎসবেও দেওয়া হয় ? ঈদের সময় কি দেওয়া হয়েছিল ? একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে এইভাবে টাকা দেওয়া যায় ?
মামলার শুনানিতে রাজ্যের তরফে AG বলেন , রাজ্য সরকার দুর্গাপুজো কমিটিকে টাকা দিয়েছে মাস্ক-স্যানিটাইজ়ার কেনার জন্য । তখন বিচারবপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের AG-র মন্তব্য শোনার পর বলেন, "যেখানে প্যানডেমিক আইনে মাস্ক না পরা অপরাধ বলে গণ্য হয়, সেখানে আপনারা ভাবছেন লোক মাস্ক না পরে ঘর থেকে বেরিয়ে আসবে । আর আপনারা তাঁদের মাস্ক পরাবেন । মুখ্যমন্ত্রী অনুদান ঘোষণার সময় যা বলেছিলেন, আর এখন যে বিজ্ঞপ্তি দেখাচ্ছেন, সেটা মিলছে না । "
বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় মাস্ক-স্যানিটাইজ়ারের বিষয়ে আরও বলেন, "এটা তো সরকার নিজেই কিনে দিতে পারত । তাতে সরকারের খরচ কম হত । বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, যেখানে সংক্রমণের ভয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখনও বন্ধ রাখা হয়েছে, সেখানে পুজোর অনুমতি কীভাবে দেওয়া হল ? কী কী সুরক্ষা বিধি মেনে চলছে রাজ্য । ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকার কি ব্লু প্রিন্ট তৈরি করেছে ?"
যদিও ভিড় ও সাধারণ দর্শনার্থীদের প্রবেশ সংক্রান্ত বিষয়টি আগামী সোমবার আদালত শুনবে বলে জানানো হয়েছে ।