কলকাতা, 7 জানুয়ারি: কলকাতা শহরে এমন অনেক জরাজীর্ণ বাড়ি রয়েছে, যেগুলিকে বিপজ্জনক বলে ঘোষণা করেছে কলকাতা পৌরনিগম (KMC) ৷ কিন্তু, তারপরও সেইসব জরাজীর্ণ বাড়ি ছাড়েন না বাসিন্দারা ৷ বিপদ মাথায় নিয়েই সেইসব বাড়িতে বসবাস করেন তাঁরা ৷ কখনও টাকার অভাবে সেই বাড়ি সংস্কার হয় না ৷ আবার কখনও থাকে শরিকি ঝামেলা ৷ অনেকেই ভয় পান, বাড়ি সারাতে গিয়ে অন্যত্র উঠে গেলে সম্পত্তি বেহাত হয়ে যাবে ! এমনকী, কেএমডিএর চারটি জরাজীর্ণ বহুতলের ক্ষেত্রেও এমন ঘটনা ঘটেছে ৷ মৃত্যুভয় উপেক্ষা করেই সেখানে 252টি পরিবার বসবাস করছে ৷ এই ঘটনা জানার পরই পদক্ষেপ করলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) ৷ তাঁর আশ্বাস, এবার থেকেই এই ধরনের জরাজীর্ণ বাড়ির বাসিন্দাদের পৌরনিগমের পক্ষ থেকে পজেশন সার্টিফিকেট (Possession Certificate) দেওয়া হবে ৷ যাতে সম্পত্তি বেহাত হওয়ার আর কোনও আশঙ্কা বা সম্ভাবনা না থাকে ৷
রাজাবাজার এলাকায় রয়েছে কেএমডিএর আবাসন ৷ চারটি পুরনো বিল্ডিং ভেঙে সেখানে তোলা হচ্ছে নতুন বহুতল ৷ এর জন্য খরচ হবে 20 কোটি টাকা ৷ চারটির মধ্য়ে একটি বহুতলের আবাসিকদের বিকল্প বাসস্থান দিয়ে কাজ শুরু করা হয়েছে ৷ শনিবার সেই কাজেরই পরিদর্শনে আসেন ফিরহাদ ৷ প্রসঙ্গত, কলকাতার মেয়র হওয়ার পাশাপাশি তিনি কেএমডিএরও চেয়ারম্য়ান ৷ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফিরহাদ জানতে পারেন, নির্মাণকাজ শুরু হওয়ায় বাকি তিনটি বহুতলও যেকোনও সময় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে ৷ তবুও বাসিন্দারা সেখান থেকে সরতে নারাজ ৷ কারণ, তাঁদের আশঙ্কা, এতে তাঁদের অধিকার বেহাত হয়ে যেতে পারে !
আরও পড়ুন: কলকাতাবাসীর মাথায় হাত, বাড়তে পারে সম্পত্তি কর
সংশ্লিষ্ট চারটি বহুতলে মোট 252টি পরিবার আছে ৷ এই বহুতলগুলি এ, বি, সি ও ডি ব্লকে বিভক্ত ৷ এদিন ফিরহাদ হাকিম নির্মাণস্থলে এসে কাজের গতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেন ৷ বাসিন্দাদের প্রতি তাঁর আবেদন, প্রাণের ঝুঁকি না নিয়ে তাঁরা যেন অবিলম্বে তাঁদের এই বসত খালি করে দেন ৷ তাঁদের সকলকেই পুনর্বাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ফিরহাদ ৷ একইসঙ্গে, তাঁর হুঁশিয়ারি বিকল্প জায়গা পাওয়া সত্ত্বেও বাসিন্দারা যদি বহুতল না ছাড়েন, তাহলে বাধ্য হয়েই পৌরমনিগমকে পুলিশের সাহায্য নিতে হবে ৷
প্রসঙ্গত, এদিন কেএমডিএ টেনেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে মেয়রকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় ৷ এদিন মেয়রের আশ্বাস পেয়ে সংশ্লিষ্ট চারটি বহুতলের বেশিরভাগ মানুষই খুশি ৷ তবে, এখনও অধিকাংশ আবাসিক বহুতল ছেড়ে যেতে নারাজ ৷ তাঁদের দাবি, তাঁরা শুনেছেন, পুনর্বাসনের নামে তাঁদের নাকি টিন দিয়ে ঘেরা আবাস্থল দেওয়া হবে !