কলকাতা, 15 এপ্রিল : কোরোনা সংক্রমণ রোধে বেড়েছে লকডাউনের মেয়াদ । পরে তা আরও বাড়তে পারে কি না তা এখনই বলা যাচ্ছে না । কোরোনা পরিস্থিতি কী হয় তার উপরই নির্ভর করছে সবকিছু । এদিকে লকডাউনের জেরে বন্ধ রাখা হয়েছে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় । পঠন-পাঠন, সেমেস্টার, পরীক্ষা কবে থেকে শুরু হবে তা এই মুহূর্তে অজানা । গতকাল রাজ্যের 12টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যর সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় । সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে পঠন-পাঠন, পরীক্ষা, সেমেস্টার, নতুন সেশন সংক্রান্ত বিষয়গুলি কী উপায়ে চলবে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে । মূলত, কোনও অবস্থাতেই যেন পড়ুয়াদের বছর নষ্ট না হয় সেই বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে বৈঠকে ।
কোরোনার প্রভাব পশ্চিমবঙ্গে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই রাজ্যের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয় । তারপরেই রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে নিয়ে বৈঠক করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী । সেই বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ বন্ধ থাকায় পড়ুয়াদের পঠন-পাঠন, পরীক্ষা ব্যবস্থার উপর কতটা প্রভাব পড়তে পারে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল । এমনকী পড়ুয়াদের পঠন-পাঠন যাতে ব্যাহত না হয় সেই জন্য অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা করার কথাও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে ভাবতে বলেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী । তারপরে দেশজুড়ে টানা 21 দিনের লকডাউন শুরু হয়ে যায় । 21 দিনের মেয়াদ শেষে রাজ্যে তা বাড়িয়ে করা হয় 30 এপ্রিল পর্যন্ত ।
এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি কী কী ব্যবস্থা নেবে, পঠন -পাঠন ও পরীক্ষার বিষয়ে কী কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তা নিয়ে আলোচনা করতে ভিডিয়ো কনফারেন্সে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী । বৈঠকে 12টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য উপস্থিত ছিলেন । ছিলেন কলকাতা, যাদবপুর, রবীন্দ্রভারতী, গৌড়বঙ্গ, উত্তরবঙ্গ, কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা, বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা । উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা দপ্তরের সচিব মণীশ জৈন । গতকাল সন্ধে 8টা থেকে শুরু হয়ে বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে বৈঠক । জানা গেছে, গতকালের বৈঠকে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি ।
বর্তমানে রাজ্যের প্রায় সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে চয়েস বেসড ক্রেডিট সিস্টেমে পঠন-পাঠন হয় । এই CBCS ব্যবস্থায় সেমেস্টার সিস্টেমও অন্তর্ভুক্ত । সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরে চলা লকডাউনে এই CBCS ব্যবস্থায় পড়ুয়াদের যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, কোনওভাবেই তাদের বছর যেন নষ্ট না হয় তার জন্য কী কী উপায় বের করা যেতে পারে তা নিয়েই মূলত আলোচনা হয়েছে বৈঠকে । কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা, সেমেস্টার, নতুন সেশন নিয়ে আলোচনা হয়েছে ।
এই পরিস্থিতিতে কী করা যায়, উপাচার্যদের বক্তব্য কী, কী করতে চান, অনলাইন ক্লাস বা অন্য কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে কি না সেইসব বিষয়ে উপাচার্যদের থেকে প্রস্তাব চাওয়া হয়েছে । দু'দিনের মধ্যে প্রস্তাব দিতে বলা হয়েছে তাঁদের । এছাড়া, যে সব কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে ক্লাস চালু করেছে তাদের প্রশংসা করেছেন শিক্ষামন্ত্রী । সূত্রের খবর, কীভাবে অনলাইনের মাধ্যমে পঠন-পাঠনকে সংগঠিত করে ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় তার উপায় নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে ।