কলকাতা, 30 মার্চ: সন্ধ্যের পরে অয়ন শীলের (Ayan Sil Latest News) সল্টলেকের অফিসে মাঝেমধ্যেই আসত একাধিক অভিজাত গাড়ি (Recruitment Scam)। কালো কাচ লাগানো সেই গাড়িগুলিতে আসতেন বেশ কয়েকজন ব্যক্তি । তাঁদের হাতে থাকত ব্যাগ । এমনটাই জানতে পেরেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট ৷ তবে সেই ব্যাগে কী থাকত, সে বিষয়ে কোনও স্পষ্ট উত্তর পাননি ইডির তদন্তকারীরা (ED)।
জানা গিয়েছে, অয়ন অফিসে বেশিরভাগ সময়ে হোয়াটসঅ্যাপ কল এবং বিভিন্ন অনলাইন মিটিংয়ে ব্যস্ত থাকতেন । তবে কাদের সঙ্গে কী বিষয়ে অয়নের কথা হত, সেটিও এখনও স্পষ্ট নয় তদন্তকারীদের কাছে । অয়ন শীলের সল্টলেক বিডি ব্লকের অফিসের 2 কর্মীকে এ দিন তলব করে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে এই তথ্য জানতে পেরেছেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের গোয়েন্দারা ।
বৃহস্পতিবার সকালে অয়ন শীলের অফিসের দুই কর্মীকে ডেকে তাঁদের বয়ান নথিভুক্ত করেন ইডির গোয়েন্দারা । এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের গোয়েন্দারা দাবি করছেন যে, অয়নের সংস্থা এবিএস ইনফোজন প্রাইভেট লিমিটেডের দুই বিশ্বস্ত কর্মী এই দুই ব্যক্তি । তদন্তকারীদের দাবি, অয়ন শীলের সঙ্গে নিয়মিত ওঠা বসা ছিল এই দুই কর্মীর । তার ফলেই তাঁদেরকে সল্টলেকে সিজিও কমপ্লেক্সে ইডি দফতরে ডাকা হয় ।
তদন্তকারীরা মূলত জানতে চাইছেন যে, অয়ন শীলের অফিসে কারা কারা আসতেন ? এর কারণ হল, অয়ন শীলের সংস্থাটি আবাসন তৈরি থেকে শুরু করে টলিউডে টাকা বিনিয়োগ করেছে । ফোনে কার সঙ্গে কথা বলার পর কাদের সঙ্গে টাকার লেনদেন হত এবং কত টাকা লেনদেন হত, সেই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা । আর সে জন্যই এই দুই কর্মচারীকে এ দিন তলব করা হয় ।
আরও পড়ুন: বান্ধবীকে 25 লাখের গাড়ি উপহার অয়নের ! কামারহাটিতে হদিশ মিলল শ্বেতার ফ্ল্যাটের
ইতিমধ্যেই অয়ন শীলকে গ্রেফতারের পর তাঁর সল্টলেকের ভাড়া করা অফিস এবং বাড়িতে দীর্ঘক্ষণ ধরে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজন চাকরিপ্রার্থীর নামের তালিকা এবং পরীক্ষার ওএমআর শিট উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা । ইতিমধ্যেই অয়ন শীলের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া চাকরিপ্রার্থীদের নামের তালিকা ঘেঁটে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, এই সব চাকরিপ্রার্থীরা অয়ন শীলকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে বর্তমানে চাকরি করছেন । এই সকল চাকরিপ্রার্থীদের নামের তালিকা তৈরি করেছেন তদন্তকারীরা । চলতি সপ্তাহের মধ্যেই তাঁদের একে একে সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে ৷
দল থেকে বহিষ্কৃত হুগলির প্রাক্তন তৃণমূল যুব নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল অয়ন শীলের । বিভিন্ন সময়ে শান্তনু এবং অয়নকে একই রাজনৈতিক সভায় ওঠাবসা করতে দেখা গিয়েছে বলে দাবি তদন্তকারীদের । ধীরে ধীরে রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের ছত্রছায়ায় আসার পর থেকেই অয়নের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ও এর সঙ্গেই চাকরি দুর্নীতিতে তাঁর আত্মপ্রকাশ ঘটে ।