কলকাতা, 18 জানুয়ারি: গত বছর 20 ফেব্রুয়ারি মৃত্যু হয়েছিল মানিকতলার বিধায়ক তথা তৎকালীন ক্রেতাসুরক্ষা দফতরের সাধন পান্ডের । এরপর এক বছরের কাছাকাছি সময় অতিবাহিত হলেও উপনির্বাচন ঘোষণা হয়নি । এ দিকে, গত 29 ডিসেম্বর মৃত্যু হয় রাজ্যের খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণ এবং উদ্যান প্রতিপালন দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী সুব্রত সাহার । বুধবার সাগরদিঘির উপনির্বাচন ঘোষণা হলেও ব্রাত্য থাকল মানিকতলা । এ দিন নির্বাচন কমিশনের (EC announces Bye election in Sagardighi) তরফ থেকে ঘোষণা করা হয় আগামী 27 ফেব্রুয়ারি সাগরদিঘি (Sagardighi Bye Election) বিধানসভার উপনির্বাচন ।
যদিও নির্বাচন কমিশনের কোনও লিখিত নিয়ম নেই, তবে কোনও বিধানসভার বিধায়কের মৃত্যুর 6 মাসের মধ্যেই উপনির্বাচন ঘোষণা করা হয় । এ ক্ষেত্রে অবশ্য সে পথে হাঁটা হয়নি । এ ক্ষেত্রে সাধন পাণ্ডের মৃত্যুর কারণে দীর্ঘদিন মানিকতলার মানুষ বিভিন্ন পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন । তা সত্ত্বেও কেন মানিকতলার উপনির্বাচন ঘোষণা হল না, তা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে । তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, ছয় মাসের বেশি সময় অতিবাহিত হলেও এই উপনির্বাচন নিয়ে একটি বাক্যও খরচ করেনি নির্বাচন কমিশন ।
প্রসঙ্গত, মানিকতলা নিয়ে এই মুহূর্তে একটা জটিলতা রয়েছে আদালতে । 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর গণনায় কারচুপির অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবে । সেই মামলা এখনও আদালতে বিচারাধীন । মনে করা হচ্ছে, যেহেতু সেই মামলার এখনও নিষ্পত্তি হয়নি, সে কারণেই মানিকতলার ক্ষেত্রে উপনির্বাচন ঘোষণা করেনি নির্বাচন কমিশন ।
এ দিকে, সাগরদিঘির উপনির্বাচন নিয়ে যে নির্ঘণ্ট প্রকাশ করা হয়েছে, সেটা অনুযায়ী আগামী 31 জানুয়ারি সাগরদিঘি উপনির্বাচনের নোটিফিকেশন প্রকাশিত হবে । 7 ফেব্রুয়ারি মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন । 8 ফেব্রুয়ারি মনোনয়নের স্ক্রুটিনি হবে । 10 ফেব্রুয়ারি প্রার্থীপদ বাতিলের শেষ দিন । 27 ফেব্রুয়ারি উপনির্বাচন এবং 2 মার্চ নির্বাচনের ফলপ্রকাশ ।
আরও পড়ুন: বিজেপি যে প্রস্তাবই দিক মাথা নোয়াবেন না, মেঘালয় মানুষের সরকার প্রতিষ্ঠা করুন, বার্তা মমতার
উল্লেখ্য, সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্রে টানা তিনবারের বিধায়ক ছিলেন সুব্রত সাহা । 2011 সালে তিনি ছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলার একমাত্র তৃণমূল বিধায়ক । এর পর 2016 এবং 2021 সালেও জয় পেয়েছিলেন তিনি । সুব্রত সাহার বদলে এই সাগরদিঘি আসনে তৃণমূল কংগ্রেস কাকে প্রার্থী করে তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে । ইতিমধ্যে তৃণমূলের একটা সূত্র থেকে এই আসনে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পুত্র অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের নাম শোনা গেলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেষ পর্যন্ত তাঁকে এই আসনে প্রার্থী করেন কি না সেটাই এখন দেখার ।
অন্যদিকে, এই উপনির্বাচন রাজনৈতিক মহল আরও একটি কারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে । কারণ এই উপনির্বাচন বিরোধীদের জন্য কার্যত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে অ্যাসিড টেস্ট । একদিকে এটা দেখার এই উপনির্বাচনে বাম এবং কংগ্রেসের জোট হয় কি না । অন্যদিকে রাজ্যে প্রধান বিরোধী শক্তি হিসেবে দ্রুত উপরের দিকে উঠে আসা বিজেপি এই উপনির্বাচনে শাসক তৃণমূলকে কতটা বেগ দিতে পারে সেটাও এখন দেখার ।