কলকাতা, 28 সেপ্টেম্বর : অবশেষে দুর্গাপুজোর গাইডলাইন প্রকাশ করল রাজ্য । সামাজিক দূরত্ব মেনে এবার দুর্গাপুজো পালন করতে হবে বলে জানানো হয়েছে গাইডলাইনে । পাশাপাশি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এবার পুজো কার্নিভাল হবে না ।
এক নজরে দেখে নিন ঠিক কোন গাইডলাইন মেনে করতে হবে পুজো- • মণ্ডপ খোলামেলা রাখতে হবে • মণ্ডপ সিলিং যদি আচ্ছাদন ঢাকা থাকে তবে চারপাশ খোলামেলা রাখতে হবে • যদি চারপাশ খোলামেলা থাকে তবে মণ্ডপের সিলিং খোলা রাখতে হবে • মণ্ডপে প্রবেশ এবং প্রস্থানের পৃথক ব্যবস্থা রাখতে হবে • মণ্ডপ হতে হবে খোলামেলা যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকে • দর্শনার্থীদের মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক • বাধ্যতামূলক করা হয়েছে স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার • যেসব দর্শনার্থী মাস্ক না পরে মণ্ডপে আসবেন তাঁদের মাস্ক দিতে হবে উদ্যোক্তাদের। সেই বিষয়ে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখতে হবে। • পুজো উদ্যোক্তাদের যথেষ্ট সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক রাখতে হবে সামাজিক দূরত্ববিধি রক্ষা করার জন্য • স্বেচ্ছাসেবক দলের মাস্ক এবং ফেস শিল্ড ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক • অঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ কিংবা সিঁদুর খেলায় উদ্যোক্তাদের বিশেষ প্ল্যানিং করতে হবে যাতে একসঙ্গে অনেকটা ভিড় জমে না যায় • যাঁরা অঞ্জলি দেবেন তাঁরা বাড়ি থেকে ফুল আনবেন, কারণ অঞ্জলির ফুল নিতে গিয়ে এক জায়গায় অনেকটা ভিড় হয়ে যায় • পুজো মণ্ডপ কিংবা মণ্ডপের চৌহদ্দিতে কোনও রকম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না • এবার দুর্গাপুজোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এবং নিরঞ্জনযাত্রা অত্যন্ত ছোটখাটোভাবে করতে হবে • উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল ব্যবস্থাকে উৎসাহিত করা হয়েছে • নিরঞ্জনযাত্রায় কোনও জায়গায় প্রতিমা দাঁড় করানো যাবে না, সোজা নিরঞ্জনের ঘাটে নিয়ে যেতে হবে • প্রতিমা নিরঞ্জনের ক্ষেত্রে প্রত্যেকটি কমিটিকে নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেবে প্রশাসন।
![photo](https://etvbharatimages.akamaized.net/etvbharat/prod-images/8971254_wb_nabanna.jpg)
দুর্গাপুজোয় যে সমস্ত সংগঠন বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করে, তাদের সেরা পুজো বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে বিচারকমণ্ডলীর সংখ্যা এবার সীমিত করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিবছর দেখা যায় একটা বড়সড় কনভয় নিয়ে বিচারকমণ্ডলীরা মণ্ডপগুলিতে সেরা পুজো বেছে নিতে যান। এবার সেটা করা যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে নবান্ন। এক লপ্তে বিচারকদের দু'টি গাড়ির বেশি কোনও মণ্ডপে যেতে পারবে না। বিচারপর্ব চলবে সকাল দশটা থেকে তিনটে পর্যন্ত। গভীর রাতের বিচারপর্ব এবার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। রাজ্য সরকার চাইছে যাতে পুজো উদ্যোক্তারা দর্শনার্থীদের প্রতি মুহূর্তে সতর্ক করে, সেই বিষয়টিও নিশ্চিত করতে। পুজো উদ্যোক্তাদের ইলেকট্রনিক এবং সোশাল মিডিয়াতেও এই বিষয়ে প্রচার চালাতে বলা হয়েছে। এবার দুর্গাপুজোর সমস্ত অনুমতি অনলাইনেই দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ উদ্যোক্তাদের অনলাইনে আবেদন করতে হবে অনুমতির জন্য। তবে এবার দুর্গাপুজোর দিন বাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। পুজো উদ্যোক্তাদের অনুরোধ করা হয়েছে, তৃতীয়া থেকেই প্রতিমা দর্শন পর্ব শুরু করে দেওয়ার জন্য। কারণ সে ক্ষেত্রে আরও বেশি দিন ধরে প্রতিমা দেখার সুযোগ পাবেন সাধারণ মানুষ। সেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট দিনে ভিড় কম হবে।
কলকাতা শহরের সেরা পুজোগুলিকে নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে কার্নিভালের আয়োজন করে সরকার। দেশ-বিদেশের পর্যটক তথা শহরবাসীর সামনে তুলে ধরা হয় বঙ্গ সংস্কৃতি। মুখ্যমন্ত্রীর মস্তিষ্কপ্রসূত এই কার্নিভাল এবার মহামারীর কারণে স্থগিত রাখা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী আগের দিনের বৈঠকে জানিয়েছেন, এবার দমকল বিভাগের পক্ষ থেকে কোনওরকম ফি নেওয়া হবে না পুজো উদ্যোক্তাদের কাছে। পৌরনিগম, পৌরসভা, পঞ্চায়েতগুলিও এবার কোনওরকম ফি নেবে না। প্রতিটি পুজো কমিটিকে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে 50 হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হবে। বিদ্যুতের জন্য 50% ছাড়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।