কলকাতা, 6 মে : পেট্রোপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির বিকল্প খুঁজতে ইলেকট্রিক ও কম্প্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস (cng) চালিত বাসের ব্যবহারের উপর জোর দিলেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সিএনজি চালিত যানবাহন ব্যবহারের উপর জোর নিঃসন্দেহে ভাল উদ্যোগ ৷ তবে তার জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে রাজ্যে (due to rising prices of fuel Firhad hakim launching CNG vehicles) ।
বাস ভাড়া বৃদ্ধি নয়, বরং পেট্রল ও ডিজেলের উপর নির্ভরতা কাটিয়ে বিকল্প উপায় বাস ও গাড়ি চালানোর কথা ভাবতে হবে। তাই সিএনজি, ব্যাটারিচালিত ও ই-ভেহিকেলের ব্যবহারের কথা বলছেন পরিবহণমন্ত্রী। সম্প্রতি রাজ্য বাজেটে পরিবেশবান্ধব সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত গাড়ির প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়াতে ছাড়ও দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি রাজ্য পরিবহণ দফতরের উদ্যোগে ইতিমধ্যেই দু‘টো সিএনজিচালিত বাস রাস্তায় নামানো হয়েছে। কসবা ডিপোতে ডিজেল ও পেট্রলচালিত দু‘টি বাসকে সিএনজিতে চালাতে প্রস্তুত করা হয়। আগামিদিনে আরও বেশ কয়েকটি বাসকে সিএনজিতে রূপান্তরিত করার পরিকল্পনা রয়েছে পরিবহণ দফতরের।
আরও পড়ুন : শহরে প্রশ্নের মুখে 50 হাজারের বেশি ড্রাইভিং লাইসেন্স, কেন ?
শুধু সরকারি বাসই নয়, বেসরকারি বাসের ক্ষেত্রেও এই একই পরিকল্পনা রয়েছে। এই গ্যাসের দাম ডিজেল ও পেট্রলের থেকে অনেকটাই কম। পাশাপাশি বায়ুদূষণের একটা বড় কারণ হল বাস থেকে থেকে নির্গত কালো ধোঁয়া ৷ তাই পরিবেশবিদরা মনে করছেন, সিএনজি চালিত যানবাহন তুলনামূলক কম দূষণ ছড়ায় ও আর্থিক দিক থেকেও অনেকটাই লাভজনক।
অটোমোবাইল বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবিদ অধ্যাপক প্রবীরকুমার বসু বলেন, "শহরের রাস্তায় সিএনজি গাড়ি নামাতে হলে প্রয়োজন উন্নত পরিকাঠামো। থাকতে হবে প্রচুর সংখক সিএনজি পেট্রল পাম্প। বর্তমানে যে উপায়ে সিএনজি বাসগুলিতে জ্বালানি ভরা হয় সেই ব্যবস্থা অবলম্বন করলে সিএনজিতে বাস চালানোর স্বপ্ন কতটা বাস্তবায়িত হবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ যে কোনও জ্বালানি ব্যবহার করতে হলে তার সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক থাকতে হবে।"
আরও পড়ুন : তিনবিঘার উন্মুক্ত করিডরে দ্রুত বসবে কাঁটাতার, বিএসএফ’কে আশ্বাস স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
তিনি এই বিষয়ে আরও বলেন, "শহরে এখন হাতেগোনা যে কয়েকটি সিএনজি পাম্পিং স্টেশন রয়েছে সেগুলোতে ক্যাস্কেডের সাহায্যে গ্যাস ভরা হয়। অর্থাৎ দুর্গাপুর, ডানকুনি ও রানিগঞ্জ থেকে ক্যাস্ক্যাডে করে সিএনজি গ্যাস আনা হয়। তারপর পাম্পে গ্যাস ভরা হয়। এই ব্যবস্থাটি যেমন সময়সাপেক্ষ তেমনই যাতায়াতের খরচের জন্য সিএনজির দাম অনেক বেশি হয়ে যায়। এটা কোনও স্থায়ী উপায় হতে পারে না। ডানকুনি থেকে কলকাতা পর্যন্ত যে সিএনজি লাইন আসার কথা ছিল, তাও জমি জটিলতায় আটকে রয়েছে।"
ঠিক একইভাবে পরিবেশ প্রযুক্তিবিদ ও ভারত সরকারের পেটেন্ট প্রাপ্ত সৌমেন্দ্র মোহন ঘোষ বলেন, "ডানকুনিতে একটি মাদার পাম্পিং স্টেশন করা হয়েছে দুর্গাপুর থেকে মাটির তলা দিয়ে পাইপ লাইন বসানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে ইতিমধ্যে রিলায়েন্স গোদাবরী বেসিন থেকে রিলায়েন্স একটি পাইপ লাইন নিয়ে আসার কাজ শুরু করেছে তবে এই ক্ষেত্রে জমি নিয়ে কিছু জটিলতা দেখা গিয়েছে।"
তবে বেসরকারি মালিকদের ক্ষেত্রে ইচ্ছে থাকলেও নেই সাধ্য। তাই একটি বেসরকারি গাড়িকে সিএনজি রূপান্তরিত করার খরচে পিছিয়ে যাচ্ছেন মালিকরা।