কলকাতা, 14 মে: ভোট পরবর্তী হিংসা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শুক্রবার রাজ্যে এসেছেন জাতীয় তফশিলি জাতি কমিশনের সদস্যরা। রাজ্যে নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তর অভিযোগ জানিয়েছে বিরোধী বিজেপি। কোথাও বিজেপি কর্মীদের হত্যা করা হয়েছে তো আবার কোথাও মারধর করা হয়েছে বিজেপি কর্মী এবং তাঁদের পরিবারকে ৷ কোথাও ঘরছাড়া হতে হয়েছে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের। ২ মে নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর থেকেই শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। যদিও সব অভিযোগই অস্বীকার করেছে তৃণমূল। এবার নির্বাচন পরবর্তী হিংসা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রাজ্যে এসেছেন কমিশনের সদস্যরা। রাজ্যে পরিদর্শনে এসে তাদের অভিযোগ, আগে যা অভিযোগ এসেছিল পরিস্থিতি তার চেয়ে আরও বেশি ভয়ঙ্কর। শুক্রবার সল্টলেকে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই অভিযোগ জানান জাতীয় তফসিলি জাতি কমিশনের সদস্যরা। এদিন কমিশনের চেয়ারম্যান বিজয় সম্পলা বলেন, ‘‘তফশিলিরা খুন হচ্ছে। মহিলাদের ধর্ষণ করা হচ্ছে। বাড়িঘর লুঠ হচ্ছে, কিন্তু সরকার সুরক্ষা দিচ্ছে না। রাজ্যে সবচেয়ে বেশি তফশিলিরাই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। স্বাধীন ভারতবর্ষে কোনও রাজ্যে এতবড় অত্যাচারের ঘটনা ঘটেনি। পরিস্থিতি খুব উদ্বেগজনক। তিন হাজারের বেশি অভিযোগ এসেছে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যবস্থা নেয়নি রাজ্য প্রশাসন।’’
গতকালের নবগ্রামে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন তফশিলি কমিশনের কর্তারা। সেখানকার পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে সম্পলা বলেন, ‘‘নবগ্রামে তফশিলি সম্প্রদায়ের মানুষরা অত্যাচারিত খবর পেয়েই আমরা যাই। যাঁরা মারধর করেছেন তাঁদের মধ্যে তফশিলি, মুসলিম এবং উচ্চবর্ণের লোকেরাও ছিলেন। কিন্তু এই ঘটনাকে পুলিশের তরফ থেকে এসসি বনাম এসসি বলা হল।’’ কমিশনের তরফ থেকে জানানো হয়, বর্ধমান শহরে এখনও শতাধিক মানুষ ঘরছাড়া। তফশিলি অত্যাচার বিরোধী আইনে কোনও মামলা হয়নি এতদিনে। পুলিশ বলছে অন্য ধারায় মামলা চলছে। কমিশন এদিন রাজ্য সরকারকে ভর্ৎসনা করে বলে যে, সরকার জানে না অত্যাচারিত ব্যক্তি কোথায়। যে সরকার অত্যাচারকে অত্যাচার মানতেই নারাজ তার কাছ থেকে বেশি কিছু আশা করা যায় না। অকর্মণ্যতা এবং ঘটনা ঘটা স্বত্ত্বেও চোখ বুজে থাকার কারণে দায় নিতে হবে প্রশাসনকে।
আরও পড়ুন:কাল নন্দীগ্রামে রাজ্যপাল, খতিয়ে দেখবেন ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ
এদিন দক্ষিণ ২৪ পরগনার রানাভুতিয়া এলাকায় বেশ কয়েকটি ঘরছাড়া পরিবার কমিশনের দ্বারস্থ হয়। তারা জানায়, তাদের বাড়ি একাধিকবার ভাঙ্গা হয়েছে। রীতা নায়েক নামে এক মহিলার ঘরের মধ্যে পেট্রল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। উত্তম বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তির বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে ক্লাব তৈরি করা হয়। কমিশন ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।