কলকাতা, 20 নভেম্বর: বিগত এক বছর ধরে টানাপড়েনের পর কৃষি আইন প্রত্যাহার (Farm Laws Repeal) করেছে কেন্দ্র । কিন্তু এতে কৃষকদেরই ক্ষতি বলে মনে করছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা বাংলায় বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh BJP) । তাঁর দাবি, কৃষকদের স্বার্থেই কৃষি আইন আনা হয়েছিল । শোষণের হাত থেকে তাঁদের নিস্তার দিতে চেয়েছিল সরকার । যে দিন কৃষকরা বুঝবেন, যে দিন দেশ জাগবে, সে দিন আবার এই আইন আনা হবে ।
শনিবার সকালে ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণে গিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন দিলীপ । কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে মতামত জানতে চাইলে বলেন, ‘‘আমি এখনও বলছি, কৃষকদের স্বার্থেই ওই আইন এনেছিল সরকার ৷ প্রধানমন্ত্রী কৃষকদের বলেছেন যে, আমরা বোঝাতে পারিনি ৷ এটাও ঠিক যে যাঁরা আন্দোলনে বসেছিলেন, তাঁদের বেশিরভাগেরই জমি নেই ৷ ভাগচাষি ৷ না বসলে, যাঁদের জমি তাঁরা চাষ করতে দেবেন না ৷’’
আরও পড়ুন: Tathagata Roy : আপাতত বঙ্গ বিজেপি বিদায়, তথাগতর টুইট ঘিরে ধোঁয়াশা, পাল্টা কটাক্ষ কুণালের
আইনের সপক্ষে সওয়াল করে দিলীপ বলেন, ‘‘আগে এক একর ছবিতে ফসলের জন্য ভাগচাষিদের 15 হাজার টাকা দিতে হত, এখন দিতে হয় 45 হাজার টাকা ৷ তাঁদের শোষণ করা হচ্ছে ৷ এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিতেই আইন এনেছিল সরকার ৷ কৃষকরা নিশ্চয়ই বুঝবেন পরে ৷ তখন ফের আইন আনা হবে ৷ সরকার কারও সঙ্গে সঙ্ঘাতে যেতে চায় না, তাই গত 100 দিনে কোনও বলপ্রয়োগ করা হয়নি ৷ কৃষকদের ফসলের ন্যায্য দাম দেওয়ার চেষ্টা করছে সরকার ৷ ছ’হাজার টাকার অনুদান দেওয়া হচ্ছে বছরে ৷ মান্ডি থেকে মুক্ত করে যেখানে ইচ্ছে ফসল বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল ৷ দেশ যখন জাগবে, ফের আইন আনা হবে ৷’’
বিগত একবছর ধরে তিনটি কৃষি আইনের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে আসছেন কৃষকরা ৷ রোদ, জল, ঠান্ডায় বসে থেকে 750 জনের মৃত্যু হয়েছে ইতিমধ্যেই ৷ তাতেও এত দিন নিজেদের অবস্থানে অনড় ছিল কেন্দ্রীয় সরকার ৷ কিন্তু আচমকাই শুক্রবার কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ তাতেই প্রশ্ন উঠছে, কৃষিপ্রধান রাজ্য পঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড এবং উত্তরপ্রদেশের নির্বাচন এগিয়ে আসছে বলেই কি ক্ষোভ সামাল দিতে এমন সিদ্ধান্ত ! যদিও দিলীপ তা খারিজ করে দিয়েছেন ৷ তাঁর বক্তব্য, ‘‘সারা বছরই নির্বাচন চলে ৷ ক’দিন আগেই উপনির্বাচন হয়ে গেল ৷ আসলে যাঁদের মাথায় সারাক্ষণ নির্বাচন ঘোরে, তাঁরাই এ সব প্রশ্ন তোলে ৷ বিজেপি দেশ এবং সমাজের কথা ভাবে ৷’’
আরও পড়ুন: Crime : ভেড়ির জলে পড়েছিল চুম্বক, খুঁজতে নামলে চোর সন্দেহে মারধর, তাতেই শেষ বছর সাতের সাহাদ
এদিন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে গিয়ে ওঠা বাবুল সুপ্রিয়কেও একহাত নেন দিলীপ ৷ সম্প্রতি তৃণমূলের হয়ে সংগঠন মজবুত করতে ত্রিপুরায় গিয়েছেন বাবুল ৷ সে প্রসঙ্গে দিলীপের বক্তব্য, ‘‘ত্রিপুরায় খেলাই হচ্ছে বটে ৷ বাবুল সুপ্রিয়র গাওয়া গান বাজিয়েই তাঁকে স্বাগত জানানো হচ্ছে ৷’’ ত্রিপুরায় তৃণমূলের জয়ের সম্ভাবনাও নাকচ করে দেন দিলীপ ৷ তাঁর কথায়, ‘‘জেতার স্বপ্ন দেখতে তো আর পয়সা লাগে না ! প্রার্থী নেই অথচ তৃণমূল জয়ের স্বপ্ন দেখছে ৷ ওখানে কুপোকাত হবে তৃণমূল ৷’’