ETV Bharat / state

Fake IAS : একাধিক মহিলা সাগরেদ থাকার অনুমান, কত বড় চক্র ছিল দেবাঞ্জনের ? - কলকাতার অপরাধের খবর

দেবাঞ্জন দেবের একাধিক সহযোগীর নাম উঠে এসেছে গোয়েন্দাদের হাতে ৷ যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন মহিলাও রয়েছে ৷ দেবাঞ্জনের মতো নাকি তারাও নিজেদের সরকারি আমলা বলে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কাজ হাসিল করত ৷

Debanjan Deb
ছবি
author img

By

Published : Jun 25, 2021, 5:04 PM IST

কলকাতা, 25 জুন : কসবায় ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডের পরতে পরতে লুকিয়ে রয়েছে রহস্য ৷ খামখেয়ালি জীবন থেকে আচমকাই রাজ্য সরকারের আমলা বলে নিজেকে পরিচয় দেওয়া ৷ একইসঙ্গে রাজ্য সরকারের কাগজপত্র নকল করা থেকে শুরু করে পুলিশ মহলের একাধিক পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে ওঠাবসা ৷ এত কাজ কি কারও একার পক্ষে সম্ভব ?

তদন্ত প্রক্রিয়া যত এগোচ্ছে তত এই ধরনের প্রশ্ন উঠে আসছে ৷ প্রথম থেকেই পুলিশের সন্দেহ ছিল, এই কাণ্ড কেউ একা ঘটাতে পারে না ৷ এর নেপথ্যে একটি চক্র রয়েছে বলে সন্দেহ করছেন গোয়েন্দারা ৷ আর সেই চক্রের সন্ধান করতে গিয়েই দেবাঞ্জন দেবের একাধিক সহযোগীর নাম উঠে এসেছে গোয়েন্দাদের হাতে ৷ যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন মহিলাও রয়েছে ৷ দেবাঞ্জনের মতো নাকি তারাও নিজেদের সরকারি আমলা বলে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কাজ হাসিল করত ৷ ইতিমধ্যেই দেবাঞ্জনের একাধিক সাগরেদের কথা জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা ৷

দেবাঞ্জনের সঙ্গে তারাও একাধিক জায়গায় একাধিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকত । কেউ নিজেকে ওয়েস্ট বেঙ্গল সিভিল সার্ভিস (WBCS) অফিসার বলে পরিচয় দিত । কেউ বা আবার নিজেকে দেবাঞ্জনের মত ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস (IAS) অফিসার বলেই পরিচয় দিত । কিন্তু দেবাঞ্জনের এই সাগরেদরা আদতে কারা ? তা নিয়ে তদন্তের স্বার্থে মুখ খুলতে চাননি তদন্তকারীরা ।

আরও পড়ুন : Fake IAS : মুচিপাড়া থানায় দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আইএমএ-র রাজ্য শাখার

ইতিমধ্যেই তদন্তে নেমে প্রতারিতদের সঙ্গে কথা বলেছে পুলিশ । পুলিশ সূত্রে খবর, প্রতারিতদের একাংশ তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, দেবাঞ্জনের মহিলা সাগরেদদের দূর থেকে দেখা গেলেও, কেউ কখনও তাদের সামনে যেতে পারেনি । সব সময়ই নাকি দেবাঞ্জনের ওই মহিলা সাগরেদদের নিরাপত্তার বলয়ে মুড়ে রাখা হত ।

সিটি কলেজে যে ভুয়ো ভ্যকসিনেশন ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছিল, সেখানে দেবাঞ্জনের ওই মহিলা সাগরেদদের একজন উপস্থিত ছিল বলে পুলিশ সূত্রে খবর । তাকে কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে রাখা হয়েছিল । পাশাপাশি দেবাঞ্জন ও তার সাগরেদের ছবিও কাউকে তুলতে দেওয়া হয়নি ।

লালবাজার সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই দেবাঞ্জনের ফোন থেকে উদ্ধার হয়েছে আরও একাধিক সাগরেদের নাম ও পরিচয় । তাদের সঙ্গেও কথা বলবেন লালবাজারের তদন্তকারীরা ।

ইতিমধ্যেই দেবাঞ্জনের কথায় একাধিক অসঙ্গতি মিলেছে । দেবাঞ্জনকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে বেশ কিছু কেমিস্টের খোঁজ পেয়েছেন গোয়েন্দারা । তাদের সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর ৷ জেরায় অবশ্য দেবাঞ্জন দাবি করেছে, সে তার পরিবারের সদস্যদেরও এই ভ্যাকসিন দিয়েছে এবং সে জানত না এই ভ্যাকসিনগুলি নকল ।

তাহলে কি এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে কোনও নকল ওষুধ ব্যবসায়ী সংস্থা ? এক্ষেত্রে লালবাজারের এক আধিকারিক জানান, দেবাঞ্জনের সঙ্গে আরও কথা বলার প্রয়োজন আছে । তাঁর বক্তব্য, বয়ান রেকর্ড করে তা পরে যাচাই করাও দরকার ।

আরও পড়ুন : Fake Covid Vaccination : অস্তিত্বহীন ব্যক্তিদের নামে ভুয়ো অ্যাকাউন্টও খুলেছিল দেবাঞ্জন

ফরেন্সিক বিভাগ সূত্রের খবর, করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় সে হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ারের ব্যবসা শুরু করেছিল । অভিযোগ, সেই স্যানিটাইজ়ারগুলিও নকল ছিল ।

গোয়েন্দাদের মতে, দেবাঞ্জনের গোটা জীবনটাই নকলের মোড়কে ঢাকা । শিক্ষার্থী হিসাবে ভাল মেধাবী হলেও জীবনের খামখেয়ালিপনার জন্য সে কোনও কাজই ঠিকভাবে করে উঠতে পারেনি । পরে নিজের জীবনের ব্যর্থতাকে চাপা দিতেই ভুয়ো পরিচয়ের সাহায্য নেয় সে । নিজেকে রাজ্য সরকারের আমলা বলে পরিচয় দিয়ে লোক ঠকানোই হয়ে ওঠে জীবনের লক্ষ্য । পরে ভুয়ো পরিচয় আর ভুয়ো ক্ষমতা হাতে আসার পর দল বানাতে শুরু করে দেবাঞ্জন ৷ একাধিক সাগরেদ রাখতে শুরু করে ৷ সেই সাগরেদরাও নিজেদের রাজ্য সরকারের আমলা বলে পরিচয় দিত ।

গোয়েন্দাদের প্রাথমিক অনুমান, শুধু একা দেবাঞ্জনই নয় । সমাজে আরও একাধিক ছদ্মবেশী দেবাঞ্জন ঘুরে বেড়াচ্ছে । প্রয়োজনে দেবাঞ্জনের ওই সাগরেদদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে । কলকাতা পুলিশের পাশাপাশি রাজ্য পুলিশের সিআইডির গোয়েন্দারাও দেবাঞ্জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন । গতরাতে দেবাঞ্জনের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেন ।

ভবানী ভবন সূত্রে খবর, সিআইডি সম্প্রতি আসানসোল থেকে একজন ব্যক্তিকে ভুয়ো আইএএস কাণ্ডে গ্রেফতার করেছে । তাকে বিস্তর জিজ্ঞাসাবাদের পর একাধিক নাম উঠে আসে রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দাদের হাতে । ওই ঘটনার কয়েকদিন পর কলকাতা পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে ভুয়ো আইএএস কাণ্ডে অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেব । এই দেবাঞ্জনের সঙ্গে আসানসোল থেকে ধৃতের কোনও আঁতাত রয়েছে কি না, তা জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা ৷

কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরা । সূত্রের খবর, দেবাঞ্জন-কাণ্ডের বেশ কিছু নথিপত্র ইতিমধ্যে লালবাজার থেকে ভবানী ভবনে চাওয়া হয়েছে ।

কলকাতা, 25 জুন : কসবায় ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডের পরতে পরতে লুকিয়ে রয়েছে রহস্য ৷ খামখেয়ালি জীবন থেকে আচমকাই রাজ্য সরকারের আমলা বলে নিজেকে পরিচয় দেওয়া ৷ একইসঙ্গে রাজ্য সরকারের কাগজপত্র নকল করা থেকে শুরু করে পুলিশ মহলের একাধিক পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে ওঠাবসা ৷ এত কাজ কি কারও একার পক্ষে সম্ভব ?

তদন্ত প্রক্রিয়া যত এগোচ্ছে তত এই ধরনের প্রশ্ন উঠে আসছে ৷ প্রথম থেকেই পুলিশের সন্দেহ ছিল, এই কাণ্ড কেউ একা ঘটাতে পারে না ৷ এর নেপথ্যে একটি চক্র রয়েছে বলে সন্দেহ করছেন গোয়েন্দারা ৷ আর সেই চক্রের সন্ধান করতে গিয়েই দেবাঞ্জন দেবের একাধিক সহযোগীর নাম উঠে এসেছে গোয়েন্দাদের হাতে ৷ যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন মহিলাও রয়েছে ৷ দেবাঞ্জনের মতো নাকি তারাও নিজেদের সরকারি আমলা বলে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কাজ হাসিল করত ৷ ইতিমধ্যেই দেবাঞ্জনের একাধিক সাগরেদের কথা জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা ৷

দেবাঞ্জনের সঙ্গে তারাও একাধিক জায়গায় একাধিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকত । কেউ নিজেকে ওয়েস্ট বেঙ্গল সিভিল সার্ভিস (WBCS) অফিসার বলে পরিচয় দিত । কেউ বা আবার নিজেকে দেবাঞ্জনের মত ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস (IAS) অফিসার বলেই পরিচয় দিত । কিন্তু দেবাঞ্জনের এই সাগরেদরা আদতে কারা ? তা নিয়ে তদন্তের স্বার্থে মুখ খুলতে চাননি তদন্তকারীরা ।

আরও পড়ুন : Fake IAS : মুচিপাড়া থানায় দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আইএমএ-র রাজ্য শাখার

ইতিমধ্যেই তদন্তে নেমে প্রতারিতদের সঙ্গে কথা বলেছে পুলিশ । পুলিশ সূত্রে খবর, প্রতারিতদের একাংশ তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, দেবাঞ্জনের মহিলা সাগরেদদের দূর থেকে দেখা গেলেও, কেউ কখনও তাদের সামনে যেতে পারেনি । সব সময়ই নাকি দেবাঞ্জনের ওই মহিলা সাগরেদদের নিরাপত্তার বলয়ে মুড়ে রাখা হত ।

সিটি কলেজে যে ভুয়ো ভ্যকসিনেশন ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছিল, সেখানে দেবাঞ্জনের ওই মহিলা সাগরেদদের একজন উপস্থিত ছিল বলে পুলিশ সূত্রে খবর । তাকে কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে রাখা হয়েছিল । পাশাপাশি দেবাঞ্জন ও তার সাগরেদের ছবিও কাউকে তুলতে দেওয়া হয়নি ।

লালবাজার সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই দেবাঞ্জনের ফোন থেকে উদ্ধার হয়েছে আরও একাধিক সাগরেদের নাম ও পরিচয় । তাদের সঙ্গেও কথা বলবেন লালবাজারের তদন্তকারীরা ।

ইতিমধ্যেই দেবাঞ্জনের কথায় একাধিক অসঙ্গতি মিলেছে । দেবাঞ্জনকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে বেশ কিছু কেমিস্টের খোঁজ পেয়েছেন গোয়েন্দারা । তাদের সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর ৷ জেরায় অবশ্য দেবাঞ্জন দাবি করেছে, সে তার পরিবারের সদস্যদেরও এই ভ্যাকসিন দিয়েছে এবং সে জানত না এই ভ্যাকসিনগুলি নকল ।

তাহলে কি এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে কোনও নকল ওষুধ ব্যবসায়ী সংস্থা ? এক্ষেত্রে লালবাজারের এক আধিকারিক জানান, দেবাঞ্জনের সঙ্গে আরও কথা বলার প্রয়োজন আছে । তাঁর বক্তব্য, বয়ান রেকর্ড করে তা পরে যাচাই করাও দরকার ।

আরও পড়ুন : Fake Covid Vaccination : অস্তিত্বহীন ব্যক্তিদের নামে ভুয়ো অ্যাকাউন্টও খুলেছিল দেবাঞ্জন

ফরেন্সিক বিভাগ সূত্রের খবর, করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় সে হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ারের ব্যবসা শুরু করেছিল । অভিযোগ, সেই স্যানিটাইজ়ারগুলিও নকল ছিল ।

গোয়েন্দাদের মতে, দেবাঞ্জনের গোটা জীবনটাই নকলের মোড়কে ঢাকা । শিক্ষার্থী হিসাবে ভাল মেধাবী হলেও জীবনের খামখেয়ালিপনার জন্য সে কোনও কাজই ঠিকভাবে করে উঠতে পারেনি । পরে নিজের জীবনের ব্যর্থতাকে চাপা দিতেই ভুয়ো পরিচয়ের সাহায্য নেয় সে । নিজেকে রাজ্য সরকারের আমলা বলে পরিচয় দিয়ে লোক ঠকানোই হয়ে ওঠে জীবনের লক্ষ্য । পরে ভুয়ো পরিচয় আর ভুয়ো ক্ষমতা হাতে আসার পর দল বানাতে শুরু করে দেবাঞ্জন ৷ একাধিক সাগরেদ রাখতে শুরু করে ৷ সেই সাগরেদরাও নিজেদের রাজ্য সরকারের আমলা বলে পরিচয় দিত ।

গোয়েন্দাদের প্রাথমিক অনুমান, শুধু একা দেবাঞ্জনই নয় । সমাজে আরও একাধিক ছদ্মবেশী দেবাঞ্জন ঘুরে বেড়াচ্ছে । প্রয়োজনে দেবাঞ্জনের ওই সাগরেদদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে । কলকাতা পুলিশের পাশাপাশি রাজ্য পুলিশের সিআইডির গোয়েন্দারাও দেবাঞ্জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন । গতরাতে দেবাঞ্জনের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেন ।

ভবানী ভবন সূত্রে খবর, সিআইডি সম্প্রতি আসানসোল থেকে একজন ব্যক্তিকে ভুয়ো আইএএস কাণ্ডে গ্রেফতার করেছে । তাকে বিস্তর জিজ্ঞাসাবাদের পর একাধিক নাম উঠে আসে রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দাদের হাতে । ওই ঘটনার কয়েকদিন পর কলকাতা পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে ভুয়ো আইএএস কাণ্ডে অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেব । এই দেবাঞ্জনের সঙ্গে আসানসোল থেকে ধৃতের কোনও আঁতাত রয়েছে কি না, তা জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা ৷

কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরা । সূত্রের খবর, দেবাঞ্জন-কাণ্ডের বেশ কিছু নথিপত্র ইতিমধ্যে লালবাজার থেকে ভবানী ভবনে চাওয়া হয়েছে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.