কলকাতা, 7 সেপ্টেম্বর: NRS মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে জটিল অস্ত্রোপচার ৷ গলা কেটে 6-7 সেন্টিমিটার লম্বা ধাতব তারের টুকরো বের করা হল কাকদ্বীপের ধনঞ্জয় বল্লভের শরীর থেকে । অস্ত্রোপচারের পর সুস্থ রয়েছেন ওই যুবক ৷ এক সপ্তাহ তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে ৷
বাড়িতে বসে নিশ্চিন্তে মুড়ি খাচ্ছিলেন বছর 20-র ধনঞ্জয় বল্লভ । হঠাৎই তাঁর গলায় কিছু একটা আটকে যায়৷ তিনি শ্বাস নিতেও পারছিলেন না ৷ সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৷ তাঁর গলার এক্সরে করা হয়৷ দেখা যায় তাঁর খাদ্যনালীতে একটি তারের টুকরোর মতো কিছু আটকে রয়েছে৷ ধনঞ্জয়ের পরিস্থিতি এতটাই জটিল ছিল যে সেখানে তাঁর চিকিৎসা সম্ভব ছিল না ৷ তাঁকে পাঠানো হয় কলকাতায় ৷
27 অগাস্ট তাঁকে নিয়ে আসা হয় NRS মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ৷ সেখানে তাঁর পুরোনো এক্সরে রিপোর্ট খতিয়ে দেখেন ENT বিভাগের চিকিৎসকরা৷ ওই দিনই তাঁকে ভরতি করা হয় ৷ অস্ত্রোপচার করে তারের টুকরোটিকে বের করার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা । এর পর, আবার ধনঞ্জয়ের গলায় এক্স-রে করানো হয় । অস্ত্রোপচারের আগে তারের টুকরোটির অবস্থান জেনে নেওয়া জরুরি ছিল । দ্বিতীয় বার এক্সরে করার পর চিকিৎসকরা দেখতে পান, তারের অংশটি রোগীর খাদ্যনালী ভেদ করে গলার পেশির মধ্যে গেঁথে গিয়েছে ।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মস্তিস্কে রক্ত যাওয়া এবং আসার জন্য যে দু'টি প্রধান ধমনি ও শিরা রয়েছে, সেই দু'টির গা ঘেঁষে তারের অংশটি রোগীর গলার পেশিতে গেঁথে গিয়েছিল । ফলে, অস্ত্রোপচার করে রোগীর গলা থেকে তারের অংশটি বের করা অত্যন্ত ঝুঁকির এবং জটিল হয়ে পড়েছিল ।
এই অস্ত্রোপচার কেন ঝুঁকিপূর্ণ এবং জটিল হয়ে উঠেছিল?
NRS মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ENT বিভাগের চিকিৎসক সিদ্ধার্থ দাস বলেন, " অস্ত্রোপচারের সময় ধাতব তারের ওই অংশটি যদি শিরা বা ধমনি কোনওটিকে ফুটো করে দিত, তা হলে অপারেশন টেবিলেই রোগীর মৃত্যু হত ৷ বাঁচোয়া যে, ওই শিরা বা ধমনির কোনওটিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি ৷ রোগীর গলা কেটে 6-7 সেন্টিমিটার লম্বা ধাতব তারের অংশটিকে আমরা সফলভাবে বের করে আনতে পেরেছি ৷"