কলকাতা, 7 ফেব্রুয়ারি: সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম গত একমাস ধরে বলে যাচ্ছেন তাঁরা পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। যদিও সূত্রের খবর, তার মধ্যে কিছুটা হলেও খামতি রয়ে গিয়েছে সিপিমের অন্দরে । মূলত নিষ্ক্রিয় কর্মীদের নিয়ে চরম সংকটে দল । এমনটাই দাবি আলিমুদ্দিন স্ট্রিট সূত্রের । নিষ্ক্রিয় কর্মীদের সক্রিয় করা যাচ্ছে না । আবার বর্তমান অবস্থায় তাঁদের সম্পূর্ণ বাদ দেওয়াও অসম্ভব।
বিরোধীরা বরাবরই বলে থাকেন, সিপিএম প্রবীনদের দল । নতুনদের কোনও রকম সুযোগ দেওয়া হয়নি । সেই অভিযোগ খণ্ডনের কাজ শুরু হয় 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময়। মেদহীন শক্ত সংগঠন করতে নতুন নতুন মুখ তৈরিতে জোর দেওয়া হয় । তরুণদের প্রার্থী করার ব্যাপারে সিপিএম অনেকটাই উদারতা দেখিয়েছিল। তাঁদের কেউ বিধায়ক হতে পারেননি ঠিকই তবে সংগঠনে একটা বড় ধরনের ধাক্কা দেওয়া গিয়েছিল বলে মনে করে রাজনৈতির মহলের একটা বড় অংশ।
তরুণদের গুরু দায়িত্বে এনে 2011 সালের পর থেকে শুরু হওয়া রক্তক্ষরণ কিছুটা হলেও ঠেকাতে চায় বামেরা। গত কয়েক মাসের দলীয় রিপোর্ট অনুযায়ী কিছুটা সে কাজে খানিকটা সফলও হয়েছে সিপিএম । কিন্তু, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সেই কাজ চালিয়ে যেতে সমস্যা হচ্ছে । যার অন্যতম কারণ নিস্ক্রিয় কর্মীরা । নিষ্ক্রিয় কর্মীদের দিয়ে ঘুন ধরা সংগঠন কোনভাবেই চাঙ্গা করা যাচ্ছে না । এদিকে ঢিলে ঢালা সংগঠন নিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার সম্ভব নয় বলেই মনে করছে দল। অন্যদিকে পঞ্চায়েতের আগে নিষ্ক্রিয় কর্মীদের সরিয়ে দিলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে । কারণ, পঞ্চায়েত ভোট একেবারে আঞ্চলিক স্তরে হয়ে থাকে। এই সময়ে নিষ্ক্রিয় কর্মীদের সরিয়ে দিলে তাদের ক্ষোভকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করবে প্রতিপক্ষরা । এমনই আবহে রবিবার মালদার চাঁচলের দাপুটে সিপিএম নেতা জাকির হোসেন সিপিএম ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছন ৷
আরও পড়ুন: সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন! দলীয় সংগঠনকে শক্তিশালী করতে উত্তরবঙ্গে সেলিম
এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলকে চাঙ্গা করতে রাজ্য চষে বেড়াচ্ছেন রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম । জেলায় জেলায় গিয়ে বৈঠক করছেন । আঞ্চলিক ইস্যুতে ভিত্তিক রণকৌশল তৈরি করছেন। ঢেলে সাজানো হচ্ছে ডিজিটাল টিমকেও । রাজ্য কমিটির এক সদস্য জানিয়েছেন, "ভোট আসবে ভোট যাবে । পঞ্চায়েতের পরে লোকসভা আসবে । লোকসভার পরে বিধানসভা ভোট আসবে । নিস্ক্রিয় কর্মীদের এভাবেই রেখে দেওয়া হলে কোনও দিনই কাজের কাজ হবে না । রোগ দিন দিন বাড়বে । এরপর এই রোগ ধীরে ধীরে মহামারীর আকার ধারণ করবে । তার আগেই চিকিৎসা করা দরকার। তাই সাবধানে পা ফেলে লক্ষ্য পূরণ করতে হবে আমাদের।"