কলকাতা, 3 মার্চ: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee news) বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মতো মুখ এই মুহূর্তে সিপিএমে নেই (CPIM lacking woman face)। এক রকম সে কথা স্বীকার করে নিল রাজ্য সিপিএম । সবচেয়ে বড় কথা, দলের মহিলা নেতৃত্ব হিসাবে কয়েকজন যুব মুখের উত্থান ঘটলেও, তৃণমূল নেত্রীর সামনে তারা বিশেষ দাঁত ফোটাতে পারেননি ৷ মূলত এই সাংগঠনিক দুর্বলতার ফল ভোগ করতে হচ্ছে রাজ্য সিপিএমকে ।
2011 সালে পালাবদলের পর থেকেই লাগাতার রক্তক্ষরণ চলছে আলিমুদ্দিনের লাল বাড়িতে । 2021-এর বিধানসভা নির্বাচন বামপন্থীদের কঙ্কালসার চেহারাটাকে প্রকাশ্যে এনে দিয়েছে । কলকাতা জেলা সম্মেলনের আগে দলের খসড়া প্রস্তাবে নিজেদের সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়ে এই তথ্যই তুলে ধরা হয়েছে । একই সঙ্গে এই খসড়া রিপোর্টে দলের নেতৃত্বের একাংশের অতিমাত্রায় সোশ্যাল মিডিয়া প্রেম নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে ।
সূত্রের খবর, আলিমুদ্দিনের (CPM result analysis after Bengal civic polls 2022) ক্রাইসিস ম্যানেজাররা এক রকম স্বীকারই করে নিয়েছেন, 2015 সালের প্লেনামে দলের মহিলা সদস্য বৃদ্ধির জন্য যে প্রস্তাব গ্রহণ করেছিল সিপিএম, তা বাস্তবায়িত করতে ব্যর্থ হয়েছে দল । রাজ্যের অন্য প্রান্তের কথা বাদ দিলেও কলকাতাতেই লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক মহিলা সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেনি সিপিএম ।
প্রসঙ্গত 2015 সালের প্লেনামে নয়া সদস্যদের মধ্যে 30% মহিলাকে অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়েছিল । কিন্তু কলকাতায় মাত্র 12 শতাংশ মহিলা সদস্য অন্তর্ভুক্ত করা গিয়েছে । তারই মূল্য দিতে হয়েছে রাজ্যের সিপিএমকে । আসলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী সাইকেল, রূপশ্রীর টাকা আর হালফিলে লক্ষ্মীর ভান্ডারের ফলে বিরোধী রাজনৈতিক দলের থেকে অনেকটাই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে মেয়েরা ।
এই মুহূর্তে মহিলাদের জন্য রাজ্য সরকারের একাধিক সামাজিক প্রকল্প শাসক দলের প্রতি তাদের আনুগত্য বাড়িয়েছে । একইসঙ্গে বাম তথা অন্য বিরোধী দলের থেকে মহিলাদের দূরে নিয়ে গিয়েছে ।
একইসঙ্গে সিপিএমের একাংশ মনে করছে, দেবলীনা হেমব্রমের মত লড়াকু নেত্রীদের সে ভাবে ব্যবহার না করায়, তাঁদের গ্রহণযোগ্যতা ক্রমেই কমছে । রাজ্যের সর্বশেষ বিধানসভা ভোটের আগে বেশ কয়েকটি মুখের দেখা মিলেছিল । দীপ্সিতা ধর ও ঐশি ঘোষকে বিধানসভা ভোটের প্রচারে নামিয়েছিলেন আলিমুদ্দিনের কর্তারা । কিন্তু তেমন ভাবে তাঁরা সফল হননি ।
আরও পড়ুন: Bengal Civic Polls 2022 : পৌরসভা ভোটে রাজ্যজুড়ে সন্ত্রাস, লালবাজার অভিযানের ডাক বিজেপির
রাজ্য নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এ বার দলে সেই সব মহিলা সদস্যদের নেওয়া হবে, যাঁরা মমতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারবেন । কিন্তু বাস্তবে তা সফল হবে কি না তা সময়ই বলবে । রাজনৈতির মহলের ধারণা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্থানের পেছনে যে লড়াই, যে অনমনীয় মনোভাব বাংলার মানুষ দেখেছে, সেই অনমনীয় লড়াই দিয়ে নিজের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রমাণ করতে হবে ৷ তবেই মমতার জায়গায় অন্য কারওকে বিশ্বাস করবে বাংলার জনগণ ৷