কলকাতা, 23 ফেব্রুয়ারি: কলকাতা ট্রামের দেড়শো বছর ৷ যা শুধু ঐতিহ্যের ও গর্বের নয়, ভরসারও 150 বছর। এই গর্বকে বাঁচাতে কলকাতা জুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি সিপিএমের (150 Years of Kolkata Tram)। একের পর এক ট্রাম লাইন তুলে দেওয়া এবং ট্রাম ডিপোর জমি বেসরকারি মালিকদের হাতে হস্তান্তর করার চক্রান্তের বিরুদ্ধে আগামি 24 ফেব্রুয়ারি বেলা 4টা থেকে 6টা কলকাতা জুড়ে ট্রাম ডিপোগুলিতে বিক্ষোভ করবে সিপিআইএম ।
সিপিএম কলকাতা জেলা সম্পাদক কল্লোল মজুমদার বলেন, "2007-08 সালে কলকাতার ট্রাম রাস্তা সারানো জন্য প্রায় 100 কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ করা হয়েছে রাজ্যের বামফ্রন্ট সরকারের পক্ষ থেকে । 2005-10 পর্বে বামফ্রন্টের পৌরবোর্ড কলকাতার ট্রামের উন্নয়নে সর্বোচ্চ উদ্যোগ নেয় । ট্রাম রাস্তা কংক্রিটের হয় । রাস্তার গতি বাড়ে । চালু করা হয় আধুনিক ট্রাম । এসি ট্রামও। 2011 সালে কলকাতায় 37টি রুটে ট্রাম চালানো হত । 220টি ট্রাম ছিল ডিপোতে দাঁড়িয়ে ছিল ৷ যার মধ্যে প্রতিদিন চলত 100-110টি । 70 থেকে 75 হাজার যাত্রী ছিল । প্রায় 7300 স্থায়ী কর্মী ছিলেন ৷"
তিনি আরও জানান, 2011 সালের মে মাসে রাজ্য সরকারের বদল ঘটে । নতুন তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার গঠনের 2 দিনের মধ্যে জোকা-বেহালা ট্রাম রুট বন্ধ করা হয় ৷ দ্রুত ট্রাম লাইন তুলে ফেলা হয় ৷ 2023 সালে মাত্র বালিগঞ্জ-টলিগঞ্জ রুটে, ধর্মতলা ও গড়িয়া 2টি রুটে ট্রাম চালানো হয় । ট্রাম ডিপোতে এখনও গাড়ি আছে 20টি, যার মধ্যে প্রতিদিন চলে মাত্র 11-12টি ট্রাম চলে ৷ যাত্রী সংখ্যা খুব স্বাভাবিকভাবেই কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র 3-5 হাজারে ৷ স্থায়ী কর্মীর সংখ্যা কমেছে দ্রুত হারে কমেছে ৷ এখনও প্রায় 75-80টি ট্রাম এমন অবস্থায় আছে পড়ে আছে ট্রামডিপোতে ৷ একটু সদিচ্ছা থাকলেই সেগুলিকে নিয়মিত চালানো সম্ভব ।
আরও পড়ুন: সার্ধশতবর্ষ পূর্তির দোরগোড়ায় কলকাতার ট্রাম, লক্ষ্মণরেখায় বন্দি পথেই শহরে চলমান ইতিহাস
উল্লেখ্য, 1873 সালের 24 ফেব্রুয়ারি শহর কলকাতায় ট্রাম চালু হয় শিয়ালদহ থেকে আর্মেনিয়ান ঘাট পর্যন্ত । সেদিনের ঘোড়ায় টানা ট্রাম মূলতঃ পণ্য পরিবহণের জন্য শুরু করা হলেও প্রথম দিন থেকেই তা যাত্রী পরিবহণ করে । এরপর 1880 সালে লন্ডনে ক্যালকাটা ট্রামওয়েজ কোম্পানি লিমিটেড গঠিত ও নিবন্ধিকৃত হয় ।এশিয়ার প্রথম বিদ্যুৎ চালিত ট্রাম চালু হয় 1900 সালে কলকাতার ধর্মতলা থেকে খিদিরপুর ।