কলকাতা, 18 এপ্রিল : যত অভিযোগ যেন বন্দরে। মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। এই অভিযোগ সামনে আসছে ৷ যদিও পুলিশের দাবি, শেষ কয়েক দিনের নিরলস পরিশ্রমে হয়েছে অসাধ্যসাধন। কিন্তু তারপরও অভিযোগের বহর কমেনি। আজ তাই সরেজমিনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বন্দর এলাকা পরিদর্শনে বেরলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা।
গার্ডেনরিচ এলাকা গত 30 মার্চ রীতিমতো রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। মূলত রেশন পৌঁছে দেওয়াকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের মধ্যে গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। 134 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শামস ইকবালের বোন 135 নম্বর ওয়ার্ডে ত্রাণ বিলি করতে গেলে ঘটে বিপত্তি। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। ঘটনায় বোমাবাজির অভিযোগও ওঠে। ভাঙচুর করা হয় অ্যাম্বুলেন্স । সেই ঘটনায় সাত জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
দিন কয়েক আগে রাজাবাজার এলাকায় লকডাউন নিয়ে সচেতন করতে গিয়ে আক্রমণের মুখে পড়তে হয় পুলিশকে। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাথর ছোড়ার অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনায় সাত জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরই মাঝে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক চিঠি পাঠায় রাজ্য সরকারকে। কলকাতার বেশ কিছু জায়গায় লকডাউন ও সামাজিক দূরত্ব না মানার কারণে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয় চিঠিতে ৷ চিঠিতে উল্লেখ করা হয় রাজাবাজার, নারকেলডাঙা, তপসিয়া, মেটিয়াব্রুজ, গার্ডেনরিচ, একবালপুর এবং মানিকতলার নাম। একইসঙ্গে উঠে আসে শিলিগুড়ির নামও। সেই সূত্রেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক মুখ্য সচিবকে যে চিঠি দেয় তাতে বলা হয়, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের পাশাপাশি অনেক দোকান খোলা রয়েছে শিলিগুড়িতে। সেখানে মানুষ ভিড় করছেন। একইসঙ্গে চিঠিতে উঠে এসেছে মুর্শিদাবাদের বড়ঞার মসজিদের ঘটনা। তার পরিপ্রেক্ষিতে বলা হয়েছে মুর্শিদাবাদের বেশ কিছু মসজিদে মানুষ জমায়েত করছেন।
এইসব ঘটনার পর রীতিমতো আঁটঘাট বেঁধে ময়দানে নামে পুলিশ। বন্দর এলাকার বেশিরভাগ জায়গায় ব্যারিকেড দিয়ে মুড়ে ফেলা হয়। ড্রোন দিয়ে নজরদারি চালানো শুরু হয়। পাশাপাশি হ্যান্ড-মাইক ব্যবহার করে দেওয়া হয় বার্তা। লকডাউন না মেনে অপ্রয়োজনে বাইরে বেরোলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কলকাতা পুলিশের বন্দর ডিভিশনের দাবি, এতে কাজ হয়েছে অনেকটাই। আর আজ পুলিশ কমিশনার নিজে পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে বন্দর এলাকায় গেলেন।