কলকাতা, 3 মার্চ : দিল্লির গোলি মারো স্লোগান বাংলায় চলবে না। গতকাল এমনই জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । গতকাল সন্ধ্যায় কলকাতা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে তিন BJP কর্মীকে । তাদের মধ্যে দু'জনের পুলিশি হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছে আলিপুর আদালত । এরই মাঝে কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা বুঝিয়ে দিলেন, পুলিশ মনে করছে ওই স্লোগান উসকানিমূলক । আর সেই কারণেই তিন BJP কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । বাকিদের খোঁজ চলছে । পাশাপাশি পুলিশ কমিশনার জানিয়ে দিয়েছেন সব থানার ও সি-কে বলা হয়েছে কেউ যদি উসকানিমূলক কোনও স্লোগান দেয় তবে তাকে সেই মুহূর্তে গ্রেপ্তার করতে হবে ।
রবিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভায় আসার সময় ধর্ম তলায় একজন স্লোগান দেয় "দেশকে গদ্দারো কো, গোলি মারো..." । এই স্লোগান নতুন নয় । দিল্লির নির্বাচনের আগে এমন স্লোগান দেন কেন্দ্রীয় অর্থ দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর । তাঁর এই স্লোগান ইন্টারনেটে রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায় । দিল্লির নির্বাচনের আগে এই স্লোগান নিয়ে অভিযোগ জমা পড়ে কমিশনে । কমিশন অনুরাগ ঠাকুরের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেয় । দিল্লির নির্বাচনের পরও সেই স্লোগান থামেনি । অভিযোগ, দিল্লিতে চলা হিংসায় রীতিমত ঘৃতাহূতি দিয়েছে এই শ্লোগান । দিল্লির হিংসায় উসকানি জুগিয়েছে পর্যন্ত, এমন পর্যবেক্ষণ করে আদালত অনুরোধ ঠাকুরের বিরুদ্ধে FIR-এর নির্দেশ দিয়েছিল । দিল্লিতে এই স্লোগান নিয়ে বেশকিছু মামলাও হয়েছে । দিল্লির রাজীব চক মেট্রো স্টেশনে এটির জন্য আটক করা হয় ছ' জনকে । সেই স্লোগান রবিবার শোনা যায় কলকাতায় । অমিত শাহের সভায় যোগ দেওয়ার জন্য আসা BJP-র একটি মিছিল থেকে এই স্লোগান ওঠে ধর্মতলায় ।
দু-একটি অবরোধের ঘটনা ছাড়া CAA বিরোধী আন্দোলন কলকাতায় ছিল মোটের উপর শান্তিপূর্ণ । হিংসাত্মক বিক্ষোভ দেখাতে পারে এমন সবকটি সংগঠনের সঙ্গে কথা বলে কলকাতা পুলিশ । কিন্তু দিল্লির ঘটনার পর তৈরি হয়ে যায় আশঙ্কা । সেই সূত্রে কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা সব ডেপুটি কমিশনার এবং থানার অফিসার ইন- চার্জদের নির্দেশ দেন, কঠোর হাতে রক্ষা করতে হবে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি । ফলে দিল্লির ঘটনার জেরে কোনও ঘটনা ঘটেনি কলকাতায় । কিন্তু উসকানিমূলক স্লোগানের জেরে গ্রেপ্তার করা হয় তিন জনকে ।
এই ঘটনায় চিহ্নিত করা হয় পঙ্কজ প্রসাদ, ধ্রুব বসু এবং সুরেন্দ্র তিওয়ারি নামে তিন জনকে । রাতে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ । তিনজনের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করা হয়েছে । তাদের মধ্যে দু'জনের পুলিশ হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত । পুলিশ সূত্রের খবর, এই ঘটনায় আরও বেশ কিছু ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা হয়েছে । তাদেরও গ্রেপ্তার করা হতে পারে ।