ETV Bharat / state

সময়ে HIV টেস্ট হচ্ছে না এক-তৃতীয়াংশ অন্তঃসত্ত্বার, বাড়ছে বিপদ

যত তাড়াতাড়ি HIV টেস্ট করানো যায়, ততই ভালো । কোনও অন্তঃসত্ত্বার ক্ষেত্রে যদি HIV-র সংক্রমণ ধরা পড়ে, তাহলে ওই অন্তঃসত্ত্বার অন্যান্য অর্গানে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। গর্ভস্থ সন্তানের গ্রোথ সেভাবে হবে না । প্রিম‍্যাচিওর বেবির জন্মও হতে পারে। বলছেন চিকিৎসকেরা ৷

HIV টেস্ট
HIV টেস্ট
author img

By

Published : Oct 2, 2020, 8:28 PM IST

কলকাতা, 2 অক্টোবর : অন্তঃসত্ত্বাদের রুটিন HIV টেস্টের উপরেও প্রভাব ফেলছে COVID-19। অনেক অন্তঃসত্ত্বার ক্ষেত্রেই ব্যাহত হচ্ছে HIV টেস্ট । HIV টেস্ট ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার জেরে বিপদ বাড়ছে অন্তঃসত্ত্বা এবং তাঁর গর্ভস্থ সন্তানের। কোরোনা পরিস্থিতির জেরে সময় মতো অনেক অন্তঃসত্ত্বার HIV টেস্ট করানো সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে এক-তৃতীয়াংশ অন্তঃসত্ত্বার ক্ষেত্রে বাড়ছে বিপদের আশঙ্কা।

ইতিমধ্যেই কোরোনা সংক্রমণ দেখা দিয়েছে অনেক অন্তঃসত্ত্বার শরীরে ৷ কিছু কিছু ক্ষেত্রে নবজাতকের শরীরেও ধরা পড়েছে কোরোনা সংক্রমণ । কোরোনা ভাইরাসের প্রভাব পড়ছে অন্তঃসত্ত্বাদের HIV টেস্টের উপরেও । মুলত ব্লাড গ্রুপ, ব্লাড সুগার, ইউরিন, থ্যালাসেমিয়া, সিফিলিস, হেপাটাইটিস-এর পাশাপাশি অন্তঃসত্ত্বাদের ক্ষেত্রে HIV টেস্ট এখন রুটিন চেকআপ । কোনও অন্তঃসত্ত্বা যখন চিকিৎসকের কাছে প্রথমবার যান, তখনই রুটিন চেকআপ হিসাবে HIV টেস্ট-ও করানো হয়। অন্তঃসত্ত্বার শরীর থেকে তাঁর গর্ভস্থ সন্তানের শরীরে যাতে HIV-র সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সহজেই যাতে এই সংক্রমণ প্রতিরোধ করা যায়, তার জন্য প্রথমবারেই স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময় রুটিন টেস্ট হিসাবে HIV টেস্ট করানো হয়। কিন্তু বর্তমান কোরোনা পরিস্থিতির জেরে অনেকেই সেই রুটিন চেকআপে জন্য যেতে পারছেন না ৷ যার জেরে ব্যাহত হচ্ছে HIV টেস্ট ৷

অন্তঃসত্ত্বার সময় হচ্ছে না HIV টেস্ট, বাড়ছে বিপদ!

কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক তারাশংকর বাগ বলেন, "কোরোনা পরিস্থিতিতেও চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছেন অন্তঃসত্ত্বারা । তবে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেরি হয়ে যাচ্ছে ৷ অনেক অন্তঃসত্ত্বাই রুটিন ফলোআপে যেতে ভয় পাচ্ছেন । পাছে কোরোনা সংক্রমণ দেখা দেয় ৷ আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে প্রথম ভিজ়িটে এসেছেন তখন তাঁকে এই রুটিন HIV টেস্ট করতে বলা হয়েছে, কিন্তু এই মহামারিতে দ্বিতীয় চেকআপে ওই অন্তঃসত্ত্বার যেতে 3 থেকে 4 মাস দেরি হয়েছে । এর ফলে অনেক ক্ষেত্রে অন্তঃসত্ত্বাদের HIV টেস্ট ব্যাহত হচ্ছে ।"

রেগুলার চেকআপে যাওয়ার ক্ষেত্রে দেরি হওয়ার পিছনে কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, কোরোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ভয় ৷ অন্তঃসত্ত্বার পরিজনদেরও ভয় রয়েছে । পাশাপাশি সমস্যা রয়েছে যাতায়াত ব্যবস্থায় ৷ লকডাউনের জেরে দীর্ঘদিন বন্ধ স্বাভাবিক ট্রেন, বাস, মেট্রো পরিষেবা ৷ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, প্রেগনেন্সির সময় HIV টেস্ট করাতে হবে। যত তাড়াতাড়ি এই টেস্ট করানো হবে, ততই ভালো । কোনও অন্তঃসত্ত্বার ক্ষেত্রে যদি HIV-র সংক্রমণ ধরা পড়ে, তাহলে চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব হবে। চিকিৎসা শুরু হলে মায়ের শরীর থেকে তাঁর গর্ভস্থ সন্তানের শরীরে সংক্রমণ রুখে দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু কোনও অন্তঃসত্ত্বার HIV টেস্ট করাতে দেরি হলে, স্বাভাবিকভাবেই রোগ নির্ণয়ের কাজেও দেরি হবে, যার জেরে চিকিৎসা শুরু করতে অনেকটাই বিলম্ব হবে । এর ফলে সময়ে চিকিৎসার কোর্স পূরণ হবে না ৷ যার থেকে গর্ভস্থ সন্তানের মধ্যে HIV-র সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে ৷ এপ্রসঙ্গে তারাশংকর বাগ বলেন, "HIV ধরা পড়ার পরে যদি চিকিৎসা শুরু করা না যায়, তাহলে এক-তৃতীয়াংশ অর্থাৎ, 33 শতাংশ ক্ষেত্রে গর্ভস্থ সন্তানের মধ্যে এর সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। যদি যথাযথ চিকিৎসা শুরু করা যায় তাহলে মায়ের শরীর থেকে তাঁর গর্ভস্থ সন্তানের শরীরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার হার 1 শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব হতে পারে।"

কত শতাংশ অন্তঃসত্ত্বার ক্ষেত্রে প্রথমবার চিকিৎসকের কাছে যেতে দেরি হয়ে যাচ্ছে? জানতে চাওয়া হলে তারাশংকর বাগ বলেন, "এই বিষয়ে সঠিক পরিসংখ্যান বলাটা কঠিন। তবে, আমার ধারণা এক-তৃতীয়াংশ, 32 থেকে 35 শতাংশ অন্তঃসত্ত্বার ক্ষেত্রে সময় মতো চিকিৎসকের কাছে আসছেন না বা আসতে দেরি হচ্ছে । মূলত যখন পিরিয়ড মিস করবেন, তখনই চিকিৎসকের কাছে গেলে ভালো হয়। কিন্তু কোরোনা পরিস্থিতিতে ডাক্তারের সাক্ষাতের সময়, যাতায়াত ব্যবস্থা, সংক্রমণের ভয় তো, এই সবের কারণে অনেকে ক্ষেত্রেই চিকিৎসকের কাছে যেতে 3 থেকে 4 দিন দেরি হয়ে যাচ্ছে ।"

চিকিৎসক পৌষালী সান‍্যাল বলেন, "কোরোনা পরিস্থিতির জেরে জন্য অন্তঃসত্ত্বাদের HIV টেস্ট ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তা ঠিক নয়। কিন্তু প্রথম তিন মাসের মধ্যে কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে টেস্ট করাতে পারছেন না অন্তঃসত্ত্বারা। তবে, যত তাড়াতাড়ি HIV টেস্ট করানো যায়, ততই ভালো । কোনও অন্তঃসত্ত্বার ক্ষেত্রে যদি HIV-র সংক্রমণ ধরা পড়ে, তাহলে তাঁর অন্যান্য অর্গানে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে গর্ভস্থ সন্তানের গ্রোথ সেভাবে হবে না । প্রসবের সময় সমস্যা দেখা দেবে। প্রিম‍্যাচিওর বেবির জন্মও হতে পারে। HIV-র সংক্রমণ যদি কোনও অন্তঃসত্ত্বার ক্ষেত্রে থাকে এবং এই সংক্রমণ নির্ণয় করতে যদি দেরি হয়, তাহলে অন্তঃসত্ত্বা শরীর থেকে তাঁর গর্ভস্থ সন্তানের শরীরে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়।"

কলকাতা, 2 অক্টোবর : অন্তঃসত্ত্বাদের রুটিন HIV টেস্টের উপরেও প্রভাব ফেলছে COVID-19। অনেক অন্তঃসত্ত্বার ক্ষেত্রেই ব্যাহত হচ্ছে HIV টেস্ট । HIV টেস্ট ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার জেরে বিপদ বাড়ছে অন্তঃসত্ত্বা এবং তাঁর গর্ভস্থ সন্তানের। কোরোনা পরিস্থিতির জেরে সময় মতো অনেক অন্তঃসত্ত্বার HIV টেস্ট করানো সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে এক-তৃতীয়াংশ অন্তঃসত্ত্বার ক্ষেত্রে বাড়ছে বিপদের আশঙ্কা।

ইতিমধ্যেই কোরোনা সংক্রমণ দেখা দিয়েছে অনেক অন্তঃসত্ত্বার শরীরে ৷ কিছু কিছু ক্ষেত্রে নবজাতকের শরীরেও ধরা পড়েছে কোরোনা সংক্রমণ । কোরোনা ভাইরাসের প্রভাব পড়ছে অন্তঃসত্ত্বাদের HIV টেস্টের উপরেও । মুলত ব্লাড গ্রুপ, ব্লাড সুগার, ইউরিন, থ্যালাসেমিয়া, সিফিলিস, হেপাটাইটিস-এর পাশাপাশি অন্তঃসত্ত্বাদের ক্ষেত্রে HIV টেস্ট এখন রুটিন চেকআপ । কোনও অন্তঃসত্ত্বা যখন চিকিৎসকের কাছে প্রথমবার যান, তখনই রুটিন চেকআপ হিসাবে HIV টেস্ট-ও করানো হয়। অন্তঃসত্ত্বার শরীর থেকে তাঁর গর্ভস্থ সন্তানের শরীরে যাতে HIV-র সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সহজেই যাতে এই সংক্রমণ প্রতিরোধ করা যায়, তার জন্য প্রথমবারেই স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময় রুটিন টেস্ট হিসাবে HIV টেস্ট করানো হয়। কিন্তু বর্তমান কোরোনা পরিস্থিতির জেরে অনেকেই সেই রুটিন চেকআপে জন্য যেতে পারছেন না ৷ যার জেরে ব্যাহত হচ্ছে HIV টেস্ট ৷

অন্তঃসত্ত্বার সময় হচ্ছে না HIV টেস্ট, বাড়ছে বিপদ!

কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক তারাশংকর বাগ বলেন, "কোরোনা পরিস্থিতিতেও চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছেন অন্তঃসত্ত্বারা । তবে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেরি হয়ে যাচ্ছে ৷ অনেক অন্তঃসত্ত্বাই রুটিন ফলোআপে যেতে ভয় পাচ্ছেন । পাছে কোরোনা সংক্রমণ দেখা দেয় ৷ আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে প্রথম ভিজ়িটে এসেছেন তখন তাঁকে এই রুটিন HIV টেস্ট করতে বলা হয়েছে, কিন্তু এই মহামারিতে দ্বিতীয় চেকআপে ওই অন্তঃসত্ত্বার যেতে 3 থেকে 4 মাস দেরি হয়েছে । এর ফলে অনেক ক্ষেত্রে অন্তঃসত্ত্বাদের HIV টেস্ট ব্যাহত হচ্ছে ।"

রেগুলার চেকআপে যাওয়ার ক্ষেত্রে দেরি হওয়ার পিছনে কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, কোরোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ভয় ৷ অন্তঃসত্ত্বার পরিজনদেরও ভয় রয়েছে । পাশাপাশি সমস্যা রয়েছে যাতায়াত ব্যবস্থায় ৷ লকডাউনের জেরে দীর্ঘদিন বন্ধ স্বাভাবিক ট্রেন, বাস, মেট্রো পরিষেবা ৷ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, প্রেগনেন্সির সময় HIV টেস্ট করাতে হবে। যত তাড়াতাড়ি এই টেস্ট করানো হবে, ততই ভালো । কোনও অন্তঃসত্ত্বার ক্ষেত্রে যদি HIV-র সংক্রমণ ধরা পড়ে, তাহলে চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব হবে। চিকিৎসা শুরু হলে মায়ের শরীর থেকে তাঁর গর্ভস্থ সন্তানের শরীরে সংক্রমণ রুখে দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু কোনও অন্তঃসত্ত্বার HIV টেস্ট করাতে দেরি হলে, স্বাভাবিকভাবেই রোগ নির্ণয়ের কাজেও দেরি হবে, যার জেরে চিকিৎসা শুরু করতে অনেকটাই বিলম্ব হবে । এর ফলে সময়ে চিকিৎসার কোর্স পূরণ হবে না ৷ যার থেকে গর্ভস্থ সন্তানের মধ্যে HIV-র সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে ৷ এপ্রসঙ্গে তারাশংকর বাগ বলেন, "HIV ধরা পড়ার পরে যদি চিকিৎসা শুরু করা না যায়, তাহলে এক-তৃতীয়াংশ অর্থাৎ, 33 শতাংশ ক্ষেত্রে গর্ভস্থ সন্তানের মধ্যে এর সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। যদি যথাযথ চিকিৎসা শুরু করা যায় তাহলে মায়ের শরীর থেকে তাঁর গর্ভস্থ সন্তানের শরীরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার হার 1 শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব হতে পারে।"

কত শতাংশ অন্তঃসত্ত্বার ক্ষেত্রে প্রথমবার চিকিৎসকের কাছে যেতে দেরি হয়ে যাচ্ছে? জানতে চাওয়া হলে তারাশংকর বাগ বলেন, "এই বিষয়ে সঠিক পরিসংখ্যান বলাটা কঠিন। তবে, আমার ধারণা এক-তৃতীয়াংশ, 32 থেকে 35 শতাংশ অন্তঃসত্ত্বার ক্ষেত্রে সময় মতো চিকিৎসকের কাছে আসছেন না বা আসতে দেরি হচ্ছে । মূলত যখন পিরিয়ড মিস করবেন, তখনই চিকিৎসকের কাছে গেলে ভালো হয়। কিন্তু কোরোনা পরিস্থিতিতে ডাক্তারের সাক্ষাতের সময়, যাতায়াত ব্যবস্থা, সংক্রমণের ভয় তো, এই সবের কারণে অনেকে ক্ষেত্রেই চিকিৎসকের কাছে যেতে 3 থেকে 4 দিন দেরি হয়ে যাচ্ছে ।"

চিকিৎসক পৌষালী সান‍্যাল বলেন, "কোরোনা পরিস্থিতির জেরে জন্য অন্তঃসত্ত্বাদের HIV টেস্ট ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তা ঠিক নয়। কিন্তু প্রথম তিন মাসের মধ্যে কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে টেস্ট করাতে পারছেন না অন্তঃসত্ত্বারা। তবে, যত তাড়াতাড়ি HIV টেস্ট করানো যায়, ততই ভালো । কোনও অন্তঃসত্ত্বার ক্ষেত্রে যদি HIV-র সংক্রমণ ধরা পড়ে, তাহলে তাঁর অন্যান্য অর্গানে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে গর্ভস্থ সন্তানের গ্রোথ সেভাবে হবে না । প্রসবের সময় সমস্যা দেখা দেবে। প্রিম‍্যাচিওর বেবির জন্মও হতে পারে। HIV-র সংক্রমণ যদি কোনও অন্তঃসত্ত্বার ক্ষেত্রে থাকে এবং এই সংক্রমণ নির্ণয় করতে যদি দেরি হয়, তাহলে অন্তঃসত্ত্বা শরীর থেকে তাঁর গর্ভস্থ সন্তানের শরীরে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.