কলকাতা, 31 অক্টোবর : রাজনৈতিক গাঁটছড়ায় আলিমুদ্দিন এবং বিধান ভবনের রসায়ন এখন কোন পর্যায়ে, তা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে প্রায়শই জল্পনা হয় । একুশের বিধানসভা নির্বাচন শেষে দুই প্রাক্তন রাজ্য শাসকদলের হাত ধরাধরি করে চলার প্রয়োজনীয়তা আর আছে কি না, তা নিয়ে বামফ্রন্টের অন্দরে কানাঘুষো চলে ।
বাম শরিকদের একাংশ কংগ্রেসের সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে একলা চলার পক্ষে সওয়াল করে চলেছেন । এই পদক্ষেপকে সমর্থন করেছে সিপিএম রাজ্য দফতরও । কিন্তু বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বা সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র আগ বাড়িয়ে জোট ভাঙার পক্ষে সওয়াল করতে রাজি নন । শারোদৎসবের আগে একটি বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বলেছিলেন, "2 মে-পরবর্তী সময়ে কোনও আন্দোলনে কংগ্রেসকে পাওয়া যায়নি । ফোনে সবকিছু হয় না ।" তাই আদৌ বাম-কংগ্রেস জোট রয়েছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে । অন্যদিকে সিপিএমের সর্বভারতীয় সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি জানিয়েছিলেন, ভোট শেষ হওয়ার পরই কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে ইতি টানা হয়েছে ।
আসন্ন পৌর নির্বাচনের ইঙ্গিত মিলেছে প্রশাসনিক স্তর থেকে । ফলে রাজ্যের দুই বিরোধী দলের জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠছে । শুক্রবার এই জোট নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী । তিনি বলেন, "আমাদের মতো করে লড়াই করতে হবে । কর্মীদের বলেছি শক্ত হও । নির্বাচনে লড়তে হবে । কোথাও হারব, কোথাও জিতব, এটুকু জানি । এবার জোট প্রসঙ্গে বলি, স্থানীয় নেতারা তাদের মতো করে জোটের অঙ্ক সাজাবেন" ।
আরও পড়ুন : Mamata Banerjee : গোয়া-ত্রিপুরার ভোটে বহিরাগত তকমা মমতা-অভিষেকের কাছে ব্যুমেরাং হবে কি ?
এই পরিস্থিতিতে আলিমুদ্দিন কী ভূমিকা নেয়, তা দেখা বাকি রয়েছে । তবে অধীরবাবুর নিশানায় এখন শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তবে তৃণমূল নেত্রীর 'বহিরাগত'-র বিরোধিতা করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি । এ প্রসঙ্গে অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, "আমরা কখনও কাউকে বহিরাগত তকমা দিই না ৷ কারণ ভারত সকলের দেশ ৷ কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর, অরুণাচল থেকে কচ্ছ, যাঁরা বাস থাকেন, ভারত তাঁদের দেশ ৷ এখানে কেউ বহিরাগত নন ৷" তবে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান, তিনি রাজনীতির প্রয়োজনে কখনও কাউকে স্থানীয় বলেন আবার কাউকে বহিরাগত বলেন ৷ কখনও হিন্দু, কখনও মুসলিম রাজনীতি করেন, জানালেন কংগ্রেস নেতা ৷
সম্প্রতি গোয়ায় বিভিন্ন মন্দির ও চার্চে ঘোরা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন গোয়ায় গিয়ে ওখানকার 62 শতাংশ হিন্দুকে খুশি করতে খালি মন্দিরে ছুটেছেন । বলছেন 'আমি মমতা ব্যানার্জী, আমি হিন্দু, আমি ব্রাহ্মণ' ৷ খ্রিস্টানদের খুশি করতে শনিবার চার্চে গিয়েছেন । বাংলায় পা দিলে দক্ষিণবঙ্গে মন্দিরে ছোটেন আর উত্তরবঙ্গে মসজিদে যান । যখন যেমন, তখন তেমন । এই রকম সুযোগ বুঝে পাল্টাপাল্টি উনিই করতে পারেন ৷"