কলকাতা, 4 মার্চ: রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে শনিবার সকালে গ্রেফতার হয়েছিলেন ৷ কয়েক ঘণ্টা পর জামিন পেয়ে আরও কড়া সুরে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী (Koustav Bagchi gets bail) ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ক্ষমতাচ্যুত করার চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তাঁর মাথার সমস্ত চুল কেটে ফেললেন এই কংগ্রেস নেতা (Koustav Bagchi attacks Mamata Banerjee) ৷ সঙ্গে হুঙ্কার, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্যের ক্ষমতা থেকে উৎখাত না-করা পর্যন্ত মাথা ন্যাড়া রাখার শপথ নিলাম । আজ থেকে আর মাথায় চুল রাখব না, যতক্ষণ না-পর্যন্ত এই স্বৈরতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার পতন হচ্ছে ।"
এদিন সন্ধ্যায় ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয় কৌস্তভ বাগচীকে ৷ তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক ৷ কৌস্তভের গ্রেফতারিতে পুলিশের বিরুদ্ধে অতি সক্রিয়তার অভিযোগ আগেই উঠেছিল ৷ এদিন যেভাবে গ্রেফতারির মাত্র 8 ঘণ্টার মধ্যেই জামিন পেয়ে গিয়েছেন কংগ্রেসের এই আইনজীবী নেতা, তাতে পুলিশের মুখ পুড়ল বলেই মনে করা হচ্ছে ৷ ব্যাঙ্কশাল আদালত থেকে বেরিয়ে কর্মী-সমর্থকদের ভিড়ের মধ্যেই রাস্তায় বসে এদিন মস্তক মুণ্ডন করেন তিনি (Koustav Bagchi cuts hair)।
গত কয়েক ঘণ্টার ঘটনাক্রমে তিনি যে এতটুকুও বিচলিত হননি এদিন তা কৌস্তভের কথাবার্তাতেই পরিষ্কার ৷ বরং প্রতিবাদের সুর এদিন আরও উচ্চস্বরে নিয়ে গিয়ে কৌস্তুভ বলেন, "রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানেন না কৌস্তভ বাগচী কী জিনিস । আমার প্রিয় চুল কী এমনি এমনি ফেলে দিলাম ! আমি নিজে তো লড়বই সঙ্গে রাজ্যের সমস্ত গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ করব । রাস্তায় নামব । আইন আদালত তো আছেই ।"
আরও পড়ুন: ব্যাঙ্কশাল কোর্টে জামিন পেলেন কৌস্তভ বাগচী
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে তিনি যে আইনি পদক্ষেপ করবেন এদিন তারও ইঙ্গিত দিয়েছেন কৌস্তভ বাগচী ৷ তিনি জানান, এদিনের ঘটনায় যেভাবে আইনের অপব্যবহার করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে তিনি কলকাতা হাইকোর্টে পালটা মামলা করবেন ৷ এদিন বড়তলা থানার পুলিশ গ্রেফতার করে কৌস্তভকে ৷ তাঁকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তুলে 10 দিনের পুলিশি হেফাজত চাওয়া হয় ৷
কিন্তু আদালতে পুলিশের এই আবেদন এদিন গ্রাহ্য হয়নি ৷ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পান কংগ্রেস নেতা ৷ তাঁর হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ৷ সওয়াল-জবাবে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তোলেন তিনি ৷ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও পুলিশ কীভাবে রাত 3 টের সময় কোনও আইনজীবীর বাড়িতে যেতে পারে সেই প্রশ্ন করেন তিনি ৷ ভারতীয় দণ্ডবিধার 41 ধারার নোটিশ ছাড়া কীভাবে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হল সেই বিষয়টিও তোলেন তিনি ৷ দু'পক্ষের সওয়াল-জবাব শোনার পর এদিন বিচারক কৌস্তভের জামিন মঞ্জুর করেন ৷ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ছাড়াও কৌস্তভের হয়ে এদিন প্রায় ১০০ জন আইনজীবী এই মামলাতে অংশগ্রহণ করেন।