কলকাতা, 4 মে : কোরোনার তথ্য সংগ্রহের প্রক্রিয়া তথা রিপোর্টিং সিস্টেমে জটিলতা ছিল । আর এর জেরেই এতদিন কোরোনা তথ্য নিয়ে নানা বিভ্রান্তি ঘটেছে । রাজ্যের নানা এলাকার মধ্যেও তথ্যগত পার্থক্য দেখা গেছে । আজকের সাংবাদিক বৈঠকে একথা স্বীকার করলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা ।
সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যসচিব বলেন, "রাজ্যে মোট কোরোনা আক্রান্ত 1 হাজার 259 জন ৷ বিভিন্ন হাসপাতালে এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন 908 ৷ রাজ্যে গত 24 ঘণ্টায় নতুন করে 41 জন কোরোনা পজ়িটিভ পাওয়া গেছে ৷ এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে 218 জন ৷ রাজ্যে এখনও পর্যন্ত সুস্থতার হার 17.23% ৷" এরপরই কোভিড-19-এর তথ্য় সংগ্রহের প্রক্রিয়া নিয়ে বলতে শুরু করেন রাজীব সিনহা । প্রক্রিয়াতে ত্রুটি থাকার কারণেই এতদিন সমস্যা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি ।
কোভিড-19-এর তথ্য় সংগ্রহের প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে মুখ্যসচিব বলেন, "দিন দশেক আগে দশ লাখে পরীক্ষার মোট সংখ্য়া ছিল 109 । এখন দশলাখে পরীক্ষার মোট সংখ্য়া 279। এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গে কোরোনায় চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা 908 । আসলে এর আগে কোভিড-19-এর তথ্য় সংগ্রহের প্রক্রিয়া খুব জটিল ছিল। যে কারণে প্রচুর তথ্য নথিভুক্ত করা যেত না । তথ্য সংগ্রহে নানা জটিলতা দেখা দিত । তথ্যগত অনেক পার্থক্যও দেখা যেত । ফলে আমরা প্রতিদিনের বুলেটিনও করতে পারিনি । এখন এই তথ্য সংগ্রহের প্রক্রিয়াটি সংশোধন করা হয়েছে ।" তবে এই ভুল যে অনিচ্ছাকৃত, সেকথাও জানিয়েছেন তিনি ।
মুখ্যসচিব আরও বলেন, "অনেক জায়গায় কেন এই তথ্যগত পার্থক্য, তা বুঝতেই পারিনি আমরা । বেশ কিছু জায়গা থেকে তথ্য পেতে সমস্যা হচ্ছিল। যখন এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, তখন আমরা ভেবেছিলাম সঠিকভাবে কাজ করছে এটি। কিন্তু পরে ভুলটা ধরা পড়ে । আমরা পুরো সিস্টেমটিকে আপডেট করেছিলাম । এতে দুই থেকে তিনদিন সময় নিয়েছে ।"
তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে তাঁর বক্তব্য, "বিশেষ করে সরকারি হাসপাতাল থেকে যেভাবে তথ্য় পাওয়া যাচ্ছিল, সেভাবে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে তথ্য মিলছিল না। সেই সব সমস্যা গত 3 দিন ধরে মেটানো হয়েছে।"
এদিকে আজই কোরোনা সম্পর্কিত তথ্যে স্বচ্ছতা ও ধারাবাহিকতা রাখতে বলে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে শেষ দিনে চিঠি দিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলের প্রধান অপূর্ব চন্দ্র । কোরোনা নিয়ে রাজ্যের দিকে আঙুল তুলে চিঠিতে জানানো হয়, "30 এপ্রিল স্বীকার করা হয়েছে 72 জন কোরোনা আক্রান্ত রোগীর রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে । অথচ তাঁদের মৃত্যুর কারণ হিসেবে অন্যান্য শারীরিক অসুস্থতাকে উল্লেখ করা হয়েছে । 1 মে ও 2 মে-র মেডিকেল বুলেটিনে তো রাজ্যের মোট আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যারই উল্লেখ করা হয়নি । কোরোনায় মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যার ক্ষেত্রে রাজ্যের স্বচ্ছ ও ধারাবাহিক হওয়া উচিত । "