কলকাতা, 5 অক্টোবর: তৃণমূলের রাজভবন অভিযানের ভয়ে রাজ্যপাল পালিয়েছেন ! বৃহস্পতিবার দিনভর এই অভিযোগই তোলা হয়েছে রাজ্যের শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীদের তরফে। রাত পেরনোর আগেই অবশ্য জবাব দিলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। কটাক্ষের জবাব দিয়ে তাঁর স্পষ্ট বার্তা “ঘেরাও নয়, ঘরে এসো”। এদিন রাত সাড়ে ন'টা নাগাদ রাজভবনের তরফে এক বিবৃতি জারি করা হয়। সেখানে আজকের দিনভরের ঘটনা উল্লেখ করে তৃণমূলের প্রতিটি কটাক্ষের জবাব দেওয়া হয়েছে।
কী আছে রাজভবনের বিবৃতিতে ? রাজভবনের বক্তব্য, "জমিনে (মাটি) যাওয়া জমিদারি নয়। জমিনে যেতে অস্বীকার করা এবং আরামদায়ক শহরের প্রাসাদ থেকে কৃষকদের নিয়ন্ত্রণ করা নব্য-জমিদারি। রাজ্যপালের জন্য মাটি পবিত্র এবং একইভাবে মাটির কাছাকাছি বসবাসকারী মানুষদের জন্যও পবিত্র। গ্রামে যাওয়া মানে তৃণমূল স্তরে যাওয়া। এটাই খবর যে, তৃণমূল চাইছে অন্যরা তৃণমূলস্তর থেকে দূরে থাকুক। এটা কি ভয়ের ? এটা কি জমিদারদের বিপদে পড়ার আশঙ্কা ?"
অন্যদিকে, এদিন রাজ্যের সেচ ও জলপথ মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক বলেছেন, রাজ্যপাল পর্যটক হিসেবে বন্যা দুর্গতদের কাছে যাচ্ছেন। পালটা রাজ্যপাল জানালেন, “হ্যাঁ, আমি সেই জায়গাগুলো ঘুরে দেখব যেখানে আমার মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। আমি আশা করি মন্ত্রীরাও এখানে অন্তত পর্যটক হিসেবে থাকতেন। তিনি জলপথ মন্ত্রী, মাঠে এলে বুঝবেন এখানে সড়কপথ নৌপথে পরিণত হয়েছে।
কলকাতার রাজভবনে গণপিটিশন জমা দিতে এসে তৃণমূল বলেছিল – “রাজ্যপাল উড়ে গেলেন।” রাজ্যপাল বললেন, "হ্যাঁ, যখন আমি শুনলাম যে আমার লোকেরা বন্যার ভয়াবহতা ভোগ করছে, তখন আমি বিমান ধরেছি এবং যত দ্রুত সম্ভব তাদের কাছে পৌঁছেছি। এভাবেই আমি উড়ে গিয়েছিলাম।"
আরও পড়ুন: 'রাজ্যপাল দেখা না করলে ধরনা চলবে,' হুঁশিয়ারি অভিষেকের
রাজভবনের দাবি, মাটিতে থাকাকালীন, তৃণমূল কালো পতাকা দেখায় এবং রাজ্যপালকে 'গো ব্যাক' স্লোগান দেয়। বন্যা কবলিত এলাকায় তার পরিকল্পিত কর্মসূচির পর, প্রতিক্রিয়ায় রাজ্যপাল জানিয়েছেন, “তারা শুধু আমার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছে। আমি ফিরে যাচ্ছি। তাছাড়া, তারা ঠিকই বলেছেন, একজন রাজ্যপালের সার্কিট হাউসে স্থায়ীভাবে থাকা উচিত নয়। তাকে ফিরে যেতে হবে। সব দিক দিয়েই আমাদের মধ্যে নিরঙ্কুশ চুক্তি রয়েছে। 'সবকো সম্মতি দে ভগবান'।" রাজ্যপালকে বলা হয়েছিল তারা রাজভবন ঘেরাও করছে, রাজ্যপালের প্রতিক্রিয়া- 'ঘেরাও না ঘর আও'।