কলকাতা, 21 অগস্ট: ফুরফুরার রাজনীতি যোগ চান না মমতা। একইভাবে তিনি চাইছেন না, বেলুড় মঠের মতো সংস্থাও রাজনীতিতে যুক্ত হোক। সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ইমাম মোয়াজ্জেম সম্মেলন থেকে এমনটাই জানালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে তিনি এও অভিযোগ করলেন বিজেপির কিছু নেতা সংখ্যালঘুদের ভাগাভাগি করার জন্য ক্যাশ মানি তুলে দিচ্ছে।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "ফুরফুরা শরিফ রাজনীতিতে প্রবেশ করুক, আমি চাই না। যেমন চাই না, বেলুড় মঠ রাজনীতিতে প্রবেশ করুক।" এদিন ফুরফুরার প্রসঙ্গ টেনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বক্তব্য কাকে উদ্দেশ্য করে ছিল তা কারও বুঝতে অসুবিধা হয়নি। কারণ কিছুক্ষণ বাদেই তাঁকে এও বলতে শোনা গিয়েছে, "একটা জুটেছে। তাঁকে টাকা দিয়ে নেতা করবেন ভাবছেন। খালি দাঙ্গা লাগাবে!" নাম না করে এদিন এই মঞ্চ থেকেই বিজেপি এবং নওশাদ আঁতাতেরও অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
এদিন সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীর নাম করেননি, বরঞ্চ তিনি অভিযোগ করেছেন, "বিজেপির কিছু নেতা সংখ্যালঘুদের ভাগাভাগি করবার জন্য কাউকে কাউকে ক্যাশ মানি তুলে দিচ্ছে। যাতে আখেরে বিজেপির লাভ হয়। সিপিএমের লোক গুলোর লজ্জা নেই তাই বিজেপি সিপিএম কংগ্রেস একসঙ্গে বোর্ড গঠন করে। একসঙ্গে রাজনীতিতে লড়াই করে। এটা তো নতুন কোনও কথা নয়, প্রকাশ্যে সবাই জানে। জগাই-মাধাই-গদাই। তার সঙ্গে জুটেছে আরও একটা। তাঁকে বড় নেতা করবেন টাকা দিয়ে। আর যত মিথ্যে প্রচার দাঙ্গা লাগানো এগুলো করছে।"
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে করা সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগও নস্যাৎ করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি এই মঞ্চ থেকে স্পষ্ট করে দিয়েছেন তাঁর কাছে সকলেই সমান। সংখ্যালঘু, সংখ্যাগুরু, হিন্দু-মুসলিম আদিবাসী সকলেই তাঁর কাছে সমানভাবে সম্মান পায়। এরপরও যেভাবে সংখ্যালঘুদের নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করা হয় তা নিয়েও সরব হয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, "আমি যখন আদিবাসীদের সঙ্গে নেচে উঠি তখন তো কেউ তোষণের কথা বলে না। আমি যখন মতুয়াদের জন্য ছুটি দিই, তখন তো কিছু বলা হয় না। আমি যখন পঞ্চানন বর্মা অর্থাৎ রাজবংশী নেতা তাঁর মূর্তিতে মালা দিই, তখন তো এই কথাগুলো বলেন না। যত রাগ এই সংখ্যালঘুদের উপরে। সারাক্ষণ সংখ্যালঘু দেখলেই ওদের পিঁপড়ে কামড়ায়। এটা এমনি যে সে পিঁপড়ে নয়, এটা ডোরা পিঁপড়ে। কামড়ালেই লাগে।"
আরও পড়ুন: 'যাদবপুরের ছাত্রকে মেরে ফেলল বামপন্থীরা', নেতাজি ইনডোরে তোপ মমতার
মমতা এদিন আরও বলেন, "ইমামদের আমি সম্মান করি, শ্রদ্ধা করি। আমি আশা করি তাঁরা কোনও রাজনীতির মধ্যে প্রবেশ করবেন না। যেমন আমরা চাই না, বেলুড় মঠ রাজনীতির মধ্যে প্রবেশ করুক।" এখানেই শেষ নয়, এদিন তিনি আরও বলেন, "সব ধর্মকেই আমরা সম্মান করি। আমাদের ধর্ম, আমাদের মাথার উপরে। আমি সকলের জন্যই লড়াই করি। যখন কোনও ধর্মের উপর উপর আঘাত আসে। ইস্যুটা কিন্তু প্রথম আমরাই ধরি এবং শেষ পর্যন্ত লড়াই করি।" এদিন এনআরসি ইস্যুকে সামনে রেখে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "এনআরসি ইস্যুতে আপনারা দেখেছেন, আমি রাজ্যে লাগু করতে দিইনি। করতেও দেব না। অনেক রাজ্য করেছে। যখন অসমে সংখ্যালঘুদের নাম বাদ দিয়ে দিল, কিছু নেপালি নামও বাদ দিয়েছিল। কিছু অসমের নাম দেওয়া হয়েছিল। আমি একটা প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিলাম। তাদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি।"