কলকাতা, 9 জানুয়ারি : কর্মচারীদের বেশ কিছু দাবিদাওয়া মৌখিকভাবে জানানো হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে । সেই দাবিদাওয়াগুলি গতকাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে পেশ করার কর্মসূচি ঘোষণা আগেই করেছিল ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটিস কর্মচারী পরিষদ । কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে লিখিতভাবে কর্মসূচির কথা জানানোও হয়েছিল । তা সত্ত্বেও ঘোষিত কর্মসূচি করতে গিয়েও তা করতে পারল না কর্মচারী পরিষদের সদস্যরা । কারণ, সকাল থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেট । তাই বন্ধ গেটের বাইরেই জমায়েত করে নিজেদের দাবিদাওয়া নিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন তাঁরা । কিন্তু, গেট বন্ধ থাকায় গতকাল কর্তৃপক্ষের কাছে ডেপুটেশন জমা দিতে পারেননি সদস্যরা ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনা নিয়ে ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটিস কর্মচারী পরিষদের সভাপতি মন্মথ বিশ্বাস বলেন, "ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটিস কর্মচারী পরিষদের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুসারে অতিমারির নিয়মগুলিকে মান্য করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছিল যে, দীর্ঘদিনের যে সমস্ত দাবি-দাওয়া কর্মচারীদের আছে, তার কোনো সুরাহা হচ্ছে না । তারজন্য আমরা একটা ডেপুটেশন দেব । বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমরা গিয়েছিলাম । মৌখিকভাবে তাঁরা আমাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, আপনারা ডেপুটেশন দেবেন । তারপরেও আমরা লিখিত ইন্টিমেশন তাঁদের দিয়েছি । আমাদের কাছে তার রিসিভ কপি আছে । কিন্তু, দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা । দেখা যাচ্ছে, আমরা যখন ওই ডেপুটেশন কর্মসূচির প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম ঠিক তার কিছু সময় আগে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, সারা পৃথিবীর মধ্যে স্বনামধন্য শিক্ষাতীর্থের মূল গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । এতে আমাদের রেজিস্টার্ড ইউনিয়নের গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করেছে । তার সাথে সাথে অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী এখানে অসুবিধায় পড়েছেন ।"
আরও পড়ুন : স্নাতকোত্তরের উত্তরপত্র মূল্যায়ন করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা
জানা গেছে, গতকাল সকাল 11টা থেকে দুপুর সাড়ে তিনটে পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন গেট বন্ধ ছিল । তাই ডেপুটেশন না দিয়ে এদিন বন্ধ গেটের সামনে দাঁড়িয়েই বিক্ষোভ দেখান কর্মচারী পরিষদের সদস্যরা । মণ্মথ বিশ্বাস বলেন, "আমরা মাত্র কয়েকজন সীমিত সংখ্যক মানুষ এই ডেপুটেশনটা দিতাম । কিন্তু, বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অমানবিক কর্মকাণ্ডের ফলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক নিয়মে চলছে না । বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন স্বৈরতান্ত্রিক এক মানসিকতা নিয়ে চলছে । বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে যে স্বৈরতান্ত্রিক প্রভাব চলছে তার ফলশ্রুতিতে আমরা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হলাম । তাই আমাদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে । এই অবস্থায় আমরা আমাদের ডেপুটেশন দিতে পারলাম না। কিন্তু, সচেতন মানুষের কাছে আমাদের বক্তব্য তুলে ধরলাম ।"
স্থানীয় সূত্রে খবর, এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট বন্ধ থাকায় বিভিন্ন কাজে আসা পড়ুয়া ও অন্যান্য মানুষ অনেকেই সমস্যায় পড়েন । এমনকী কয়েকজনকে গেটে ধাক্কাধাক্কিও করতে দেখা গেছে এদিন ।