কলকাতা, 19 জানুয়ারি: আবহাওয়া বদলের জন্য ঘরে ঘরেই জ্বর-সর্দি-কাশি ৷ প্রায় সব জেলায় শিশুরোগীতে ভরছে হাসপাতাল ৷ ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করছে অ্যাডিনো ভাইরাস ৷ ইতিমধ্যে রাজ্যের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ৷ বিসি রায় হাসপাতাল সূত্রে খবর, সেখানে পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশেষ ওয়ার্ড খোলা হয়েছে ৷ পার্ক সার্কাসের ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথ হাসপাতালে প্রায় 90 শতাংশ শিশু অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত ৷ এই অবস্থায় শনিবার তড়িঘড়ি করে একটি বৈঠক করে স্বাস্থ্য দফতর ৷ সেখানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমও (West Bengal Health Department over Adeno Virus in Children) ৷
এই রোগের লক্ষণ- তিনদিনের বেশি জ্বর, সর্দি-কাশি, ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়া ৷ সঙ্গে প্রবল শ্বাসকষ্ট ৷ অনেকের ক্ষেত্রে বমি এবং ডায়েরিয়াও দেখা যায় ৷ পাঁচ বছর ও তার চেয়ে কমবয়সি শিশুরা এতে আক্রান্ত হচ্ছে ৷ চিকিৎসকদের মতে এই ভাইরাস অনেক পুরোনো ৷ তবে করোনার পর এর রূপের বদল ঘটেছে ৷ তাই এত শিশু সংক্রামিত হচ্ছে । শিশু চিকিৎসক অনিরুদ্ধ ঘোষ বলেন, "কোনও শিশুর জ্বর হলে তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন ৷ তেমন হলে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা না-করাই উচিত ৷ শিশুটির বুকের এক্স-রে ও অন্য সব জরুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হতে পারে ৷ রিপোর্টগুলি দেখে আক্রান্ত শিশুর চিকিৎসা শুরু হয় ৷ অনেক ক্ষেত্রে রিপোর্ট আসতে দেরি হয় ৷ এই সময়ের মধ্যে শিশুর শ্বাসজনিত সমস্যা দেখা যায় ৷ ফলে চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে ফেলে না-রেখে প্রতিনিয়ত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত ৷"
আরও পড়ুন: ইতালিতে নতুন জীবন শুরু করছে নর্দমা থেকে উদ্ধার সদ্যোজাত
স্বাস্থ্য ভবনের পরামর্শ অনুযায়ী, শিশুর জ্বর 3-5 দিন থেকে যায় এবং তারপরও না কমে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়, বাড়িতে থাকাকালীন দেহে অক্সিজেনের মাত্রা 92 শতাংশের কম হয়, খাওয়ার পরিমাণ 50 শতাংশ কমে গেলে দেরি না-করে দ্রুত হাসপাতালে ভরতি করা প্রয়োজন ৷ এছাড়া দিনে পাঁচবারের কম প্রস্রাব হলেও রোগীকে হাসপাতালে ভরতি করতে হবে ৷ কারণ এমনটা হতে পারে, আরও দেরি করলে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়েও কোনও কাজ হবে না ৷ এতে আক্রান্ত শিশুটির মৃত্যু আশঙ্কা থেকে যায় ৷
চিকিৎসক বলেন, "2018 সালে এই রোগের প্রদুর্ভাব দেখা গিয়েছিল ৷ তবে 2023 সালে এখনও পর্যন্ত এটা রেকর্ড ৷ করোনার সময় যেভাবে মাস্ক ব্যবহার করেছি, সেভাবে বড়োরা যেন বাইরে রাস্তাঘাটে মাস্ক ব্যবহার করেন ৷ পাঁচ বছরের বেশি বাচ্চাদের মাস্ক পরালে হয়তো একটু সুরাহা মিলতে পারে ৷ পাশাপাশি এই সময় বাইরে ঘুরতে যাওয়া কমানো দরকার ৷"
আরও পড়ুন: রুবেলা-হামের মতো ভাইরাস প্রতিরোধে শিশুদের টিকাকরণের উদ্যোগ নবান্নের