কলকাতা, 13 এপ্রিল: বৃহস্পতিবার বিকেলে নৃশংস ও মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকল নিউটাউন । পাঁচ বছরের এক শিশুকে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে । সন্তানকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন শিশুটির মা ও এক প্রতিবেশী মহিলা । ঘটনার তদন্তে নেমেছে ইকোপার্ক থানার পুলিশ ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে নিউটাউনের শুলংগুড়ি ঘোষপাড়া অঞ্চলের বাসিন্দারা হঠাৎই চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন । বেরিয়েই দেখেন একটি শিশু ও তার মা রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিয়ে পড়ে রয়েছেন । পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন আরও এক মহিলা । তড়িঘড়ি খবর দেওয়া হয় পুলিশে । আহত প্রতিবেশী মহিলা অনিমা দাস বলেন, "অভিযুক্ত লক্ষণ কুমার শিশুটিকে মেরেছে । শিশুটি মা-মা বলে কেঁদে ওঠে । বাচ্চার কান্না শুনে ছুটে আসে তার মা । কে মেরেছে দেখতে আমিও যাই । তারপরেই শিশুটি বলে বন্ধু মেরেছে । তারপরেই আমাদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে ।"
তারপরেই শিশু-সহ দুই মহিলাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় ভিআইপি রোডের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে । পরে গুরুতর জখম শিশুটির মা ও প্রতিবেশী মহিলার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে স্থানান্তরিত করা হয়েছে আরজিকর হাসপাতালে । প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় শিশুটির । পুলিশ সূত্রে খবর, দুই মহিলার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক ।
প্রতিবেশী রত্না সুতার বলেন, "দুপুরবেলা আমাদের বাচ্চা বাইরে খেলছিল । হঠাৎ সে এসে বলে, বাইরে একজন পড়ে রয়েছেন । আমরা দৌড়ে এসে দেখি পাশের বাড়ির মহিলা বাচ্চা-সহ পড়ে রয়েছেন । আমি মহিলাকে তুলতে গিয়ে দেখি, মহিলার পিঠে ধারালো অস্ত্রের দাগ । পিঠ রক্তে পুরো ভিজে গিয়েছে । বাচ্চাটার কোমরেও ধারালো অস্ত্রের দাগ । সেও রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে । এদের সঙ্গে আরও একজন মহিলা ছিলেন রক্তাক্ত অবস্থায় । এরপরেই পুলিশে খবর দিই । কিন্তু পুলিশ আসার আগেই আহত মহিলার স্বামী এসে তাঁদের তুলে নিয়ে চলে গিয়েছে । মেরেছে পাশের ভাড়াটিয়া এক ব্যক্তি, নাম লক্ষ্মণ ।"
আরও পড়ুন: মালদায় পারিবারিক বিবাদের জেরে শিশুকে খুনের অভিযোগ
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত লক্ষ্মণ কুমার পোদ্দার পলাতক । লক্ষণ বিহারের ভাগলপুর জেলার সুলতানগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা । তার খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ । পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, দুই প্রতিবেশী ভাড়াটিয়ার অশান্তির জেরেই এই ঘটনা । যদিও খুনের সঠিক কারণ এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি ।