কলকাতা, 5 জানুয়ারি: প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি (Primary Recruitment Scam) মামলায় এবার সিবিআই (CBI) স্ক্যানারে ‘পর্ষদের’ ফোন নম্বর । প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে এদিন জানানো হয়, ওই নম্বর পর্ষদের কারও নয় । জেলার কারও হতে পারে । কিন্তু আদালতের নির্দেশের পর সিবিআই প্রাথমিক ভাবে এদিন আদালতে জানিয়েছে, নদিয়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যানের ফোন নম্বর থেকেই ফোন গিয়েছিল । তবে তা খতিয়ে দেখা দরকার । বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Gangopadhyay) সিবিআইয়ের বক্তব্য শোনার পর নির্দেশ দিয়েছেন, "সেই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে সিবিআই । কার নির্দেশে তিনি ফোন করে চাকরির কথা বলছেন !"
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশে তদন্ত করছে সিবিআই ৷ এই দুর্নীতিতে আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি জড়িয়ে রয়েছে বলে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটও (Enforcement Directorate) তদন্তে নেমেছে ৷ ইতিমধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে (Manik Bhattacharya) ৷ তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিটও পেশ করেছে ইডি ৷ তাছাড়া সিবিআই ও ইডির (ED) তরফে বিভিন্ন জনকে জিজ্ঞাসাবাদও চলছে ৷
অন্যদিকে এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি হচ্ছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে ৷ ইতিমধ্যে বিচারপতি 268 জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন ৷ চাকরি হারানো সেই শিক্ষকদের মধ্যে একজনের তরফে দাবি, 2017 সালের 6 ডিসেম্বর একটি ফোন নম্বর থেকে তাঁর কাছে ফোন আসে ৷ যিনি ফোন করেছিলেন, তিনি দাবি করেন যে তিনি পর্ষদের অফিস থেকে বলছেন ৷ পর্ষদের অফিসে এসে দেখা করলেই চাকরি পাওয়া যাবে ওই ব্যক্তি জানিয়েছিলেন ।
বুধবার শুনানির সময় আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত আদালতে ওই চাকরি প্রার্থীর নাম শিল্পা চক্রবর্তী ৷ তাঁর কাছেই ফোন এসেছিল ৷ এটা শোনার পরই সিবিআইকে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ৷ তা খতিয়ে দেখার পরই বৃহস্পতিবার আদালতে সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয় যে নদিয়ার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যানের নম্বর থেকেই ফোন গিয়েছিল ।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, সত্যিই কি ওই চেয়ারম্যান ফোন করেছিলেন ? নাকি তাঁর ফোন নম্বর ব্য়বহার করে অন্য কেউ ফোন করেছিলেন ? যদি সত্যিই তিনি ফোন করে থাকেন, তাহলে এর পিছনে অন্য কেউ জড়িত রয়েছেন ? মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে কি ওই চেয়ারম্যানের কোনও যোগ রয়েছে ?
এদিন সিবিআইয়ের বক্তব্য শোনার পর বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ৷ কার নির্দেশে ওই ব্যক্তি ফোন করেছিলেন, তা জানতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদও করতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি ৷ ফলে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদে এই নিয়ে আরও তথ্য সামনে আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে ৷
আরও পড়ুন: হাইকোর্ট থেকে জামিনের আবেদন প্রত্যাহার কল্যাণময়ের