কলকাতা, 27 জুলাই: সাতবার ফোন করেছেন তদন্তকারী অফিসার। অথচ নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দি বা সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি এখনও ! গল্ফগ্রিনে তরুণীর শারীরিক নির্যাতন মামলায় বিস্ময় প্রকাশ করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি। তদন্তকারী পুরুষ অফিসার কেন ওই তরুণীকে বারবার ফোন করছেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে আদালত ৷ একইসঙ্গে, মামলায় অবিলম্বে একজন মহিলা আধিকারিক নিয়োগের নির্দেশও দিয়েছেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত ৷
এক জন নির্যাতিতাকে পুরুষ পুলিশ আধিকারিক ডেকে বয়ান রেকর্ড করছেন ৷ তিনিই নিয়ে যাচ্ছেন মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য। গল্ফগ্রিনের ঘটনায় এমন গুরুতর অভিযোগ নির্যাতিতার তরফে ওঠার পরই বুধবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত দ্রুত মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছিলেন । গত 18 জুলাই ওই তরুণীকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। সেই মামলার শুনানিতেই এদিন পুলিশের ভূমিকায় তীব্র উষ্মা প্রকাশ করলেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত ৷
বুধবারই তরুণীর আইনজীবী আদালতে জানান, শারীরিক নির্যাতনের শিকার তরুণীর অভিযোগের তদন্ত করছে একজন পুরুষ অফিসার। তিনি বারবার ফোন করছেন ওই তরুণীকে। বহুবার মোবাইল থেকে কল করার তালিকাও এদিন অভিযোগকারীর তরফে তুলে দেওয়া হয় আদালতে। এত কিছুর পরও অবশ্য গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়নি তরুণীর। এখনও 164, 161 ধারায় গোপন জবানবন্দি ও সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি বলেও অভিযোগ ৷ যা শুনে বিস্মিত হয়ে যান বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত।
অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার সরকারি আইনজীবী আদালতে জানান, সেদিন মহিলা অফিসার ব্যস্ত থাকায় ওই পুরুষ অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এফআইআর লেখার সময় সেখানে মহিলা কনস্টেবল ছিলেন। এখন নতুন মহিলা আইও নিয়োগ করা হয়েছে বলেও আদালতে জানান আইনজীবী। বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত এদিন নির্দেশে জানিয়েছেন, কেন্দ্রের বিধি অনুযায়ী, এই ধরনের মামলার তদন্তে মহিলা পুলিশ অফিসার নিয়োগ করতে হবা ৷ এমন গুরুতর অভিযোগের ক্ষেত্রে পুলিশ তদন্তে নিজের ত্রুটি দ্রুত সংশোধন করবে। কেন্দ্রীয় সরকারের স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর মেনে তদন্ত চালাতে হবে।
আরও পড়ুন: মহরমে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশকে নোটিশ জারি করার নির্দেশ হাইকোর্টের
একইসঙ্গে, বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত বুধবার নির্দেশ দিয়েছিলেন, বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি হবে ৷ এই সময়ের মধ্যে ওই তদন্তকারী অফিসার তরুণীকে আর ফোন করবেন না। তাঁকে থানায় ডাকা হবে না বলেও নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। বৃহস্পতিবার সকালে ওই তদন্তকারি অফিসারকে কেস ডাইরি-সহ হাজির হতে হবে আদালতে। ওই তরুণী ও তাঁর পরিবারের নিরাপত্তার যাবতীয় ব্যাবস্থাও করতে হবে পুলিশকে। যদিও পুলিশ মূল অভিযুক্তকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে বলে আদালতে জানান সরকারি আইনজীবী।